ফের নতুন করে রঙের উৎসবে মেতে উঠল কুলটির মিঠানি গ্রাম

pancham dol




রামকৃষ্ণ চ্যাটার্জী: আসানসোল:-

ঢুলিবাদ্যের সঙ্গে সানাই, বাতাসে রঙিন আবির। দোলের পাঁচদিন পর ফের নতুন করে রঙের উৎসবে মেতে উঠল কুলটির মিঠানি গ্রাম। দোল পূর্ণিমার পরে চতুর্থীর চাঁদ যে রাতে ওঠে সেই সময় থেকে শুরু হয় পঞ্চম দোল। শনিবার চাচর অর্থাৎ হোলিকা দহণের পর রবিবার পঞ্চম দোল হয়ে গেল মিঠানি গ্রামে।


পঞ্চম দোল উৎসবে মূলত গ্রামের চট্টরাজ পরিবারের কুলদেবতা বাসুদেবচন্দ্র জিউয়ের বিশেষ পুজো আচারের মধ্য দিয়েই শুরু হয়। ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে এই অভিনব রীতি রেওয়াজ চলে আসছে মিঠানি গ্রামে। 

pancham dol

ঠিক পাঁচদিন আগে হোলিকা দহন করে, বাজি ফাটিয়ে, গ্রামের তিন কুলদেবতা লক্ষ্মীনারায়ণ, বাসুদেব ও দামোদর চন্দ্র জিউয়ের পুজোঅর্চনা করে শুরু হয়েছিল দোল উৎসব। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই গ্রামে শুরু হয়ে গেল ফের একই প্রথায় পুজো অর্চনা ও রঙ খেলা।

এই দুদিন দোল মন্দির সেজে ওঠে আলোর রোশনাইয়ে। মন্দির থেকে বাসুদেবচন্দ্র জিউ সঙ্গে আরও দুই কুলোদেবতা লক্ষ্মী নারায়ণ জিউ ও দামোদর চন্দ্র জিউকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে গ্রাম পদক্ষিণ করে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের শেষ প্রান্তে। যেখানে হোম-যজ্ঞের পর হোলিকা দহন করে আতসবাজি ফাটানো হয়। শনিবার সকালে বাসুদেব চন্দ্রকে দোল খেলিয়ে ছেলে মেয়ে যুবক যুবতি গৃহবধূরা মেতে উঠলেন রঙের উৎসবে।


শুধু চট্টরাজ পরিবারে সীমাবদ্ধ না থেকে গত কয়েক বছর ধরেই সর্বজনীন রূপ পেয়েছে পঞ্চম-দোল উৎসব। প্রবীণরা বলেন একসময় গ্রামীণ মেলা বসতো এখানে। যাত্রার আসরও বসতো। মন্দির চত্বরে জমে ওঠে রঙ মাখামাখির খেলায়। এর অনুভূতিই আলাদা। 

গৃহবধূরা বলেন যারা জেলা বা রাজ্যের বাইরে চাকরী করেন তাঁরা বাড়তি ছুটি নিয়ে আসেন পঞ্চম দোলের জন্য। নব গৃহবধূদের দাবি তাঁদের কাছে বাড়তি পাওনা দু-দুবার রঙ খেলার আনন্দ। পাঁচদিন পরের এই দোল উৎসব মিঠানি গ্রাম ছাড়া জেলায় খুব একটা দেখা যায় না বলেই দাবি গ্রামবাসীদের। জানা গেছে কেবল মাত্র বাঁকুড়ার পুরন্দরপুরে পঞ্চমদোলের চল রয়েছে। প্রবীণদের দাবি নন্দ মহারাজ দ্বারকাতে এই পঞ্চমদোল প্রথম চালু করেছিলেন।