Chinese Loan App : গুগুল প্লে স্টোরের (Google Play Store) মত বিশ্বস্ত ডিজিটাল প্লাটফর্মে রয়েছে এই Chinese Loan App

Chinese Loan App




অবশেষে স্পেশাল সেলের ইন্টেলিজেন্স ফিউশন অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক অপারেশনস (IFSO) ইউনিট একটি গ্যাং বের করেছে যারা সারা দেশে মানুষকে ব্ল্যাকমেল করত এবং চাইনিজ লোন অ্যাপের (Chinese Loan App) মাধ্যমে চাঁদাবাজি করত। প্রায় দুই মাস ধরে চলা এই অভিযানে পুলিশ সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে মোট 22 জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ বলছে, চীন থেকে এই ধরণের অপরাধ চলছে। সেখানকার কিছু নাগরিক এরকম 100 টিরও বেশি অ্যাপ তৈরি করেছেন। এই অ্যাপগুলি তাত্ক্ষণিক ঋণ দিতে ব্যবহার করা হয়।


ঋণের কেওয়াইসি করার সময়, গ্রাহকদের যোগাযোগের তালিকা, চ্যাট, ছবি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ডেটা অ্যাক্সেস করতে বলা হয়। KYC এর অনুমতি ছাড়া লোন সম্ভব নয়। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহের পর তা পাঠানো হয় চীন বা হংকংয়ে। সেখান থেকে ভুক্তভোগীদের ছবি টেম্পার করে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা চাওয়া হতো। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই চক্রের (Chinese Loan App) অ্যাকাউন্ট থেকে জানা গেছে যে এই লোকেরা অতীতে হাওয়ালা এবং ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে চীনে 500 কোটিরও বেশি টাকা পাঠিয়েছে। ধৃত অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে IFSC-এর দল বিষয়টি তদন্ত করছে।


আইএফএসসি (IFSC) ইউনিটের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ কেপিএস মালহোত্রা জানিয়েছেন যে চীনা ঋণ অ্যাপের মাধ্যমে টাকা আদায়ের ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। ন্যাশনাল ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালে এই ধরনের উদ্ধারের শত শত অভিযোগ ছিল। এসব অভিযোগে লোকজন লিখেছেন, তাদের অতি উচ্চ সুদে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঋণ(Chinese Loan App) পরিশোধের পর তার মোবাইল থেকে ছবি চুরি করে অশ্লীল ছবি বানিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছিল।


পুলিশ তদন্ত করে জানতে পেরেছে, গুগলে এ ধরনের শতাধিক অ্যাপ রয়েছে। যেখানে কিছু নিয়ম মেনে (অর্থাৎ KYC) শেষ করে ঋণ দিয়ে তাদের জালে আটকা পড়ে। পুলিশ আবেদনের কোড, কোডের বিবরণ এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চেক করতে শুরু করে। তদন্তে জানা গেছে অভিযুক্তদের দিল্লি, হরিয়ানা, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, ইউপি, বিহার এবং অন্যান্য রাজ্যে তাদের আস্তানা রয়েছে।


আসামিরা এসব স্থানে কল সেন্টার স্থাপন করে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রায় দুই দীর্ঘ তদন্ত ও অভিযানের পর পুলিশ সারাদেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে মোট 22 জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন সুপ্রীত কে শেঠি, মঙ্গল মোহন, আকাশ সানকাম্বলে, নিখিল যুবরাজ কদম, নেহা ডোংরে, বিজয়, শেখ আরফাতুদ্দিন, নবনীত কুমার ভারতী, রোহিত কুমার, বিবিধ, পুনীত, মণীশ, দিব্যা, রবিশঙ্কর ওরফে কৃষ্ণ, সুমিত, দীপ। কুমার ওরফে কার্তিক।, জিতেন্দ্র, হরপ্রীত সিং, পঙ্কজ কুমার, জুহাইব হাসান, দীপক দুবে এবং অনিল চাহার।


পুলিশ তাদের কাছ থেকে ৫১টি মোবাইল ফোন, ২৫টি হার্ডডিস্ক, ৯টি ল্যাপটপ, ১৯টি ডেবিট কার্ড, তিনটি গাড়ি এবং নগদ ৪ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে। গ্রেফতারকৃত অভিযুক্ত সুপ্রীতের মধ্যে তার কল সেন্টারের ডিরেক্টর, ম্যানেজার মঙ্গল মোহন এবং অন্য যারা কল সেন্টারে কাজ করেন বা তাদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হচ্ছিল। গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।


মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের পর তাদের হিসাব পরীক্ষা করে দেখা গেছে, প্রতিদিন গড়ে এক কোটি টাকা উদ্ধারের মাধ্যমে প্রতিটি অ্যাকাউন্টে আসে। এই লোকেরা এরকম শত শত অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। এসব অ্যাকাউন্টের টাকা হাওয়ালা ও ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধ্যমে চীনে পাঠানো হতো। বিনিময়ে চীনা নাগরিকরা ভারতে বসে থাকা লোকদের ভালো কমিশন দিত। পুলিশ সূত্র বলছে, বর্তমানে তাদের অ্যাকাউন্ট চেক করে দেখা গেছে, এই লোকেরা ৫০০ কোটি টাকা উদ্ধার করে চীনে পাঠিয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে এই পরিমাণ হাজার কোটি টাকা।



অভিযুক্তরা চীন ও হংকংয়ে 100টিরও বেশি বিভিন্ন লোন অ্যাপ তৈরি করেছে। সেগুলো গুগল প্লে স্টোরে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, যাদের পাঁচ-দশ হাজার টাকার ক্ষুদ্র ঋণের প্রয়োজন, তারা গুগলে এমন একটি অ্যাপ খুঁজে পান। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের মাধ্যমে লোন অ্যাপটিকে গুগলের শীর্ষে রাখা হতো। ফুলে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হতো।


সংবাদ একলব্য ইতিমধ্যে চলতি বছরের ২৬ জুন এই বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলো। সংবাদ একলব্যের রিসার্চ টিম দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর দেখেছিলো "যে অ্যাপ (Online instant loan app) সম্পর্কে এমন গুরুতর অভিযোগ, সেই অ্যাপ রয়েছে গুগুল প্লে স্টোরের (Google Play Store) মত বিশ্বস্ত ডিজিটাল প্লাটফর্মে।"