'বিলকিস বানো গণধর্ষন মামলা'-য় দোষী সাব্যস্ত ১১জনকে মুক্তি দিল গুজরাত সরকার
বিলকিস বানো গনধর্ষন মামলায় দোষী সাব্যস্ত ১১জনকে মুক্তি দিল গুজরাত সরকার। সালটা ২০০২, গোধরায় সবরমতী এক্সপ্রেসে অগ্নিকাণ্ডের পর গুজরাত জুড়ে সাম্প্রদায়িক হিংসায় ঘর ছেড়ে পরিবারের ১৫ সদস্যকে নিয়ে পালিয়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার পথে ধূ ধূ জমি এলাকার এক ঝোঁপে আশ্রয় নেয় বিলকিস বানোর পরিবার। সেসময় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বিলকিস বানো। বিলকিস বানোর সামনে তাঁর পরিবারের সাত সদস্যকে হত্যা করা হয়। পালিয়ে বেঁচে যায় ছয় জন। গণধর্ষনের শিকার হয় বিলকিস বানো। ২০০২ এর ঘটনায় সমাজকর্মীদের তৎপরতায় বিষয়টি নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হলে, ২০০৪ সালে ওই ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।
মামলার শুনানি আমদাবাদে শুরু হলে প্রমান লোপাটের আশঙ্কায় মামলা সড়ানোর আর্জি জানায় বিলকিস। আমদাবাদ থেকে মুম্বইয়ে মামলাটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তার পর সিবিআই আদালত ওই ১১ জনকে যাবজ্জীবনের সাজা শোনায়। গর্ভবতী মহিলাকে ধর্ষণের ষড়যন্ত্র, খুন এবং বেআইনি জমায়েত ধারায় তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। প্রমাণের অভাবে ছেড়ে দেওয়া হয় অন্য সাত জনকে। শুনানি চলাকালীনই মৃত্যু হয় এক জনের। ২০১৮ সালে বম্বে হাইকোর্ট সেই রায় বহাল ও অন্য সাতজনের জামিন খারিজ করে। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে ক্ষতিপূরণবাবদ বিলকিসকে ৫০ লক্ষ টাকা, চাকরি এবং বাড়ি দিতে হবে বলে গুজরাত সরকারকে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
সবমিলিয়ে ১৫ বছর জেলে কেটে গিয়েছে ওই ১১ জনের। তাদের মধ্যে একজন সুপ্রিম কোর্টে সাজা মকুবের আবেদন জানায়। সরকারকে বিবেচনার জন্য জানালে পঞ্চমহলের জেলাশাসক সুজল মায়াত্রার নেতৃত্বে সেই কমিটি একটি কমিটি গঠন করে বিষয়টি বিবেচনা করে ওই ১১ জনের সাজা মকুবের সিদ্ধান্ত গৃহীত নেয় গুজরাত সরকার। সুজল মায়াত্রা জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগে কমিটি গঠন করা হয়। তাতে সর্বসম্মতিতে ওই ১১ জনের সাজা মকুবের সুপারিশপত্র পাঠানো হয় রাজ্য সরকারের কাছে। রবিবার মুক্তিপ্রদানের নির্দেশপত্র হাতে আসে। রবিবার মুক্তির নির্দেশপত্র আসার পর সোমবার মুক্তি দেওয়া তাঁদের।
সরকারের এই সিদ্ধান্তে তীব্র সমালোচনা করে মানবাধিকার কর্মী শামশাদ পাঠান দাবি, বিলকিস বানোর উপর নৃশংস অত্যাচার চালায় ওই ১১ জন। সেই তুলনায় নগণ্য অপরাধে বহু কয়েদি বন্দিদশা কাটাচ্ছেন। তাদের সাজা মকুবের চিন্তা মাথায় আসেনি সরকারের। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের জেরেই মানুষ প্রশাসনের উপর থেকে বিশ্বাস হারাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊