ব্রয়লার মুরগির দাম আকাশছোঁয়া হাত পুড়ছে জেলাবাসীর
দক্ষিণ দিনাজপুর: এবার জেলা জুড়ে ব্রয়লার মুরগির দাম আকাশছোঁয়া আর তাতেই হাত পুড়ছে জেলার আমজনতার।
খুচরো বাজারে ব্রয়লার মুরগির মাংসের দাম বাড়ছে হু হু করে। এলাকাভিত্তিক দাম ভিন্ন হলেও ড্রেসড বা কাঁটা চিকেনের কেজি প্রতি দাম ২৫০ থেকে ২৬০টাকা।
খুচরো বাজারে ব্রয়লার মুরগির মাংসের দাম বাড়ছে হু হু করে। এলাকাভিত্তিক দাম ভিন্ন হলেও ড্রেসড চিকেনের কেজি প্রতি দাম প্রায় আড়াইশো টাকা। আগামী দিনে তা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছে পোল্ট্রি ফেডারেশন।
তাঁদের দাবি, মুরগির খাবারের দাম অত্যাধিক বৃদ্ধির কারণেই এই মূল্য বৃদ্ধি। তাতেও চাষিরা লাভ করতে পারছেন না বলে তাঁদের দাবি। মুরগির খাবারের দাম নিয়ন্ত্রণে এলেই এই ব্যবসা রক্ষা পাবে বলে ফেডারেশনের কর্তারা মনে করছেন। এদিকে দক্ষিণ জেলার গঙ্গারামপুরে বাজার করতে গিয়ে পকেট ফাঁকা হচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের।
গঙ্গারামপুরের হাইরোড চত্বরে অবস্থিত এক মুরগি ব্যবসায়ী অজিত হালদার জানান , ‘মুরগির উৎপাদন বেড়েছে দ্বিগুণ। তবে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে মুরগির খাবারের দাম। তার অন্যতম কারণ, মুরগির খাবার এক্সপোর্ট করা হচ্ছে। অন্য রাজ্য থেকে মুরদগির খাবার আনার জন্য খরচ আরও বেড়ে যাচ্ছে। কোনও কোনও খাবারের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ভুট্টার দাম যা থাকে তাও দ্বিগুণ হয়েছে। সেই হিসাবে মুরগির দাম ততটা বাড়েনি। ফার্মাররা লাভ করতে পারছেন না।’
গোটা মুরগির পাইকরি কেজি প্রতি দাম ১১০ টাকা থেকে বাড়তে বাড়তে ১২০-১৩৫-১৪০টাকা হয়ে গিয়েছে। দাম স্থান বিশেষে সামান্য হেরফের হয়। খোলা বাজারে ড্রেসড বা কাঁটা ব্রয়লার মুরগির দাম ছুঁয়ে ফেলেছে ২৬০ টাকা প্রতি কেজি। সাধারণ ক্রেতাদের মতে, ব্রয়লার মুরগির দাম যা-ও একটু সাধ্যের মধ্যে ছিল। তাও এবার ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে। পরিমাণে আগের থেকে কম কিনতে হচ্ছে। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম আপাতত কমছে না বলেই জানিয়েছে পোল্ট্রি ফেডারেশন।
মুরগির দাম একটু একটু করে আরও বাড়বে বলে জানিয়ে তারা। তবে তাতে লাভের লাভ কিছু হবে না বলেও তিনি মনে করেন। কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির জন্য যুদ্ধকেও দায়ী করেছেন মুরগি ব্যবসায়ী অজিত হালদার তিনি বলেন, ‘সয়াবিন ও ভুট্টার দাম আকাশছোঁয়া। যে সয়াবিনের দাম ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে কিনেছি, তা ১৫০ টাকা দিয়েও কিনতে হয়েছে। এখন রেট একটু ভাল। ৭০-৮০ টাকা কেজি। ভুট্টা একেবারেই বাজারে নেই। কোনওভাবেই কস্টিং আসছে না। ক্রমাগত ক্ষতি হচ্ছে। সাধারণ ক্রেতাদের হাতে পয়সা না থাকাও একটা বড় কারণ। যুদ্ধের কারণে কাঁচামালের দাম চড় চড় করে বাড়ছে। মার্কেটে দেনা বাড়ছে। এই ব্যবসায় থাকাই সম্ভব নয়। প্রতিদিন মুরগির দরও বাড়ছে।
ব্রয়লারের দাম লাগাতার বাড়লেও চাষিরা লাভ পাচ্ছে না। তাহলে কীভাবে লাভের মুখ দেখতে পাবেন চাষিরা? এক মুরগি ব্যবসায়ী ও চাষী বলেন, ‘মুরগির খাবারের দাম গড়ে ৭০ শতাংশ দাম বেড়েছে, মুরগির দাম ততটা বাড়েনি। কোভিডে যে ক্ষতি হয়েছে তা তোলা এখন বহু দূরে। ফিডের কস্ট ঠিক থাকলে যা দাম আছে তাতে যথেষ্ট লাভ হত। ফিডের দাম বাড়ার জেরেই এই গন্ডগোল হয়েছে। আমাদের দেশে কাঁচামালের উৎপাদন বাড়াতে হবে। কাঁচামাল আমদানি করতে হবে। একইসঙ্গে রফতানি কমাতে হবে।’
এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের একাংশের মতামত ‘মুরগির খাবারের দাম যদি না কমে তাহলে দাম আরও বাড়বে। এরপর উৎপাদন ব্যাহত হবে।’ একদিকে ব্রয়লার মুরগির ফেডারেশন বলছে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি মুরগির দাম বাড়ার প্রধান কারণ। এদিকে এত কিছুর মাঝে গঙ্গারামপুরের ৯০% বাসিন্দার মূল্যবৃদ্ধির চাপে তাঁদের প্রাণ বর্তমানে ওষ্ঠাগত।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊