ওয়াকফের জায়গা ব্যক্তিগত মালিকানায় রেকর্ড, উত্তেজনা এলাকাজুড়ে
সঞ্জিত কুড়ি পূর্ব বর্ধমান সদর:-
১.৬৩ একর ওয়াকফের জায়গাকে ব্যক্তিগত মালিকানায় রেকর্ড করানোকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে বর্ধমান ১নং ব্লকের কালনা রোড কপিবাগান এলাকায়। এই ঘটনাকে ঘিরে ১নং ব্লক বিএলআরও অফিসে বিক্ষোভ দেখায় এলাকার মানুষজন। ফের আগামী সোমবার এই ঘটনার শুনানির দিন ধার্য করেছেন ১নং ব্লকের বিএলআরও।
এলাকার বাসিন্দা সেখ রাকিব জানিয়েছেন, সম্প্রতি তাঁরা জানতে পারেন কালনা রোডের বনমসজিদের অধীন তথা ওয়াকফের বেশ কিছু জমি অবৈধভাবে কপিবাগান এলাকার বাসিন্দা সেখ লালন নিজের নামে করে নিয়েছেন। প্রায় ১ বছর আগে তিনি মারা যাবার পর ১.৬৩ একর ওই জায়গার মালিকানা রেকর্ড হয় সেখ লালনের ছেলে সেখ জনি এবং দুই মহিলা অসীমা মালিক এবং ফিরোজা সেখের নামে।
সেখ রাকিব জানিয়েছেন, সেখ লালন বর্ধমান আদালতে মুহুরীর কাজ করতেন। সেই সুবাদেই তিনি গোপনে ওয়াকফের ওই সম্পত্তিকে নিজের নামে করিয়ে নেন। পরবর্তীকালে বিষয়টি জানতে পেরে তাঁরা জেলা প্রশাসন, ভূমি দপ্তর সহ রাজ্য ওয়াকফ দপ্তরে জানান। এরপরই ওয়াকফ দপ্তর থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় ওই সম্পত্তি ওয়াকফ এস্টেটের তথা পীড়ত্ব সম্পত্তি। এরপরই তাঁরা বিএলআরও দপ্তরে ওই রেকর্ড খারিজ করার আবেদন জানান।
সেখ রাকিব জানিয়েছেন, এদিন এই আবেদনের শুনানি ছিল। ওই শুনানিতে সবপক্ষই হাজির ছিলেন। দুপক্ষের বক্তব্য শুনে আগামী সোমবার ফের শুনানির জন্য ডেকেছেন বিএলআরও বিশ্বজিৎ ঘোষ।
এদিকে, কিভাবে ওয়াকফ সম্পত্তিকে ব্যক্তিগত মালিকানায় রেকর্ড করানো হয়েছে তা নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, এব্যাপারে ভূমি দপ্তরের কর্মীরা জড়িত।
যদিও এব্যাপারে বিএলআরও বিশ্বজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, কিভাবে জমির মালিকানার রেকর্ড হয়েছে বা কি দলিল দেখে হয়েছে তা তিনি জানেন না। তবে তাঁর কাছে যে সমস্ত কাগজ এসে পৌঁছেছে তাতে তিনি দেখেছেন ওই সম্পত্তিকে ওয়াকফ এস্টেট তাঁদের সম্পত্তি বলে জানিয়েছে।
বিশ্বজিৎ জানিয়েছেন, কয়েক দফায় ওই জমির মালিকানার রেকর্ড হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত জমির মালিকানার হাত বদল হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, সব পক্ষের বক্তব্য তিনি শুনেছেন এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও তিনি পেয়েছেন। আগামী সোমবার এব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
অন্যদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কপিবাগান এলাকায় রীতিমত চাপা উত্তেজনাও সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে প্রয়াত সেখ লালনের ছেলে সেখ জনি জানিয়েছেন, দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁরা ওই জমিতে ধান চাষ করে এসেছেন। বর্গাদারী স্বত্ত্বও পান তাঁরা। এরপর তাঁর বাবা ওই জমি কিনে নেন ৪জনের কাছ থেকে। পরবর্তীকালে পারিবারিক সূত্রে ওই জমির মালিকানা হয়েছেন ৩জন।
সেখ জনি জানিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের সমর্থনে সমস্ত তথ্য জানিয়েছেন। এব্যাপারে বিএলআরও-র সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊