‘মেয়েটি শিক্ষার রত্ন, আবেগের বশে বলেছি’: 'ধর্ম' বিতর্কে প্রতিক্রিয়া মহুয়া দাসের





উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ করতে গিয়ে ধর্ম বিতর্কে জড়িয়ে যান উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস। এবছর করোনার জেরে হয়নি পরীক্ষা। পূর্ব পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে ফল। এবছর উচ্চ মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে মুর্শিদাবাদের কান্দির রাজা মণীন্দ্রচন্দ্র গার্লস হাইস্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী রুমানা সুলতানা। মোট ৫০০ নম্বরের মধ্যে ৪৯৯ নম্বর পেয়েছে রুমানা। আর তাঁর নাম ঘোষণার সময়েই উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস বারে বারে তাঁর ধর্ম উল্লেখ করে তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।


সাংবাদিক বৈঠকে প্রথম স্থানাধিকারীকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বলেও উল্লেখ করা হয়। ফলাফল প্রকাশের সময় মহুয়া দাস বলেছিলেন, 'যিনি সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন, একা। এককভাবে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন। কোনও র‍্যাংক বলছি না, সর্বোচ্চ নম্বর। সর্বোচ্চ নম্বর এককভাবে পেয়েছেন একজন মুসলিম কন্যা। মুসলিম। মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে একজন মুসলিম লেডি, গার্ল। তিনি এককভাবে ৪৯৯ সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন।' আর এই মন্তব্য ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ইচ্ছাকৃত ধর্ম পরিচয় দিয়ে আখেরে ছাত্রীকে তিনি হেঁয় করতে চেয়েছেন বলেও একপক্ষ অভিযোগ শানায়। এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে সোশ্যাল মাধ্যমেও।



বিতর্কের মাঝেই শুক্রবার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন মহুয়া দাস। তিনি জানান মেয়েটি শিক্ষার রত্ন, গতকাল আবেগের বশে বলেছি। এদিন তিনি বলেন, 'সংসদের ইতিহাসে প্রথমবার এরকম ভালো রেজাল্ট কেউ করেছে। ওঁর কথা বলার সময় আবেগের বশে বেগম রোকেয়ার কথা মনে করছিলাম, যিনি এরকম একইভাবে লেখাপড়ায় ভালো এবং সাধারণ ঘরানা থেকে উঠে এসেছিলেন। সেই ভিত্তিতে সাংবাদিকদের তথ্য জানানোর সময় তাদের বুঝতে সুবিধার জন্য তথ্য হিসেবে বিষয়টা উল্লেখ করেছি। মেয়েটি শিক্ষার রত্ন, তাঁর গৌরব যাতে সংসদ সবার মধ্যে ভাগ করে নিতে পারে, সেই অভিপ্রায় থেকেই ওভাবে কথাগুলো বলেছিলাম।'



এদিকে মহুয়া দাসের এই মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক সমালোচনাও। তাঁর পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিবাদের মঞ্চ তৈরি হয়েছে। এর মাঝেই নেহাত আবেগের বশে কথাগুলো বলেছিলেন, অন্য কোনও অভিপ্রায় তাঁর ছিল না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের প্রধান।