বাঁকুড়ার ক্যান্সারাক্রান্ত দুঃস্থ শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ালেন 'জঙ্গলমহল' এলাকার মানবদরদী শিক্ষক 




গোপীবল্লভপুর, শচীন পাল


ক্রমবর্ধমান করোনা মহামারীর আতঙ্কের মধ্যেই আরো একবার "জঙ্গলমহল" এলাকার এক স্কুল শিক্ষকের মানবিক মুখ দেখলো বাংলার মানুষ । এবার বাঁকুড়া জেলার ক্যান্সার আক্রান্ত এক শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়িয়ে আরো একবার মানবিকতার চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন "জঙ্গলমহল" এলাকা হিসেবে পরিচিত ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ব্লকের নয়াবসান জনকল্যান বিদ্যাপীঠের সংস্কৃত বিষয়ের শিক্ষক হেরম্ব নাথ চক্রবর্তী ।



বাঁকুড়া জেলার সিমলাপাল থানার বন সারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা এবং বন সারেঙ্গা হাই স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র জয়দীপ মন্ডল ক্যান্সার আক্রান্ত । 14 বছরের এই কিশোরের শরীরে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা। এরই মধ্যে বাম চোখের দৃষ্টি হারিয়ে ফেলে জয়দীপ । বাবা গুরুপদ মন্ডল দিনমজুরের কাজ করেন। ছেলেকে সুস্থ করার জন্য যে বিপুল পরিমান অর্থের প্রয়োজন, দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করা এই পরিবারটির পক্ষে তা জোগাড় করা অসম্ভব ব্যাপার। ইতিমধ্যেই পরিবারটির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বেশকিছু সমাজসেবী সংস্থা এবং কিছু হৃদয়বান মানুষ। এমনই একটি সমাজসেবী সংস্থার মাধ্যমে পরিবারটির সাথে যোগাযোগ হয় হেরম্ব বাবুর। খবর পেয়ে পরিবারটির পাশে দাঁড়ান এই মানবদরদী শিক্ষক। ক্যান্সারাক্রান্ত এই শিক্ষার্থীর চিকিৎসার জন্য দশ হাজার টাকা পরিবারটির একাউন্টে পাঠিয়ে দেন তিনি। হেরম্ব বাবুর এই উদ্যোগকে বিভিন্ন মহল থেকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে।


উল্লেখ্য,হেরম্ব বাবুর বাড়ি বাঁকুড়া জেলার তালডাংরা থানার হাড়মাসড়া গ্রামে । তাঁর বাবা পন্ডিত তারানন্দ চক্রবর্তী ছিলেন বাঁকুড়া জেলার সারেঙ্গা থানার জাম্বনি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন ছাত্রদরদী ও মানবদরদী শিক্ষক । সমাজ ও শিক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য 2001 সালে তৎকালীন ভারত সরকার নতুন দিল্লির "বিজ্ঞান ভবনে" তারানন্দ বাবুকে "জাতীয় শিক্ষক"এর বিরল সম্মানে সম্মানিত করেছিলেন l হেরম্ব বাবু জানান, "এই সমস্ত জনহিতকর সামাজিক কর্মকাণ্ডে বাবা বরাবর পাশে থেকেছেন,উৎসাহ দিয়েছেন এবং এই ভাবে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন "।