হারিয়ে যায়নি মানবিকতা, অসহায় পথচারীকে জলখাবার আর যাতায়াতের খরচ দিয়ে বাড়ি পাঠানোর ব্যাবস্থা করলেন জঙ্গলমহলের যুবক বাপ্পা মাহাত
নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর
সমাজসেবার ক্ষেত্রে অনন্য নজির রাখলেন জঙ্গলমহলের যুবক বাপ্পা মাহাত।এই আত্মকেন্দ্রিকতায় গ্রাস করা সমাজ থেকেও এখনো যে মানবিকতা হারিয়ে যায়নি তার প্রমান রাখলেন জঙ্গলমহলের যুবক বাপ্পা মাহাত৷ বাড়িতে থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দুরে থাকা এক পথচারীর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে ফের তাকে তার পরিবারের সাথে মিলিত হওয়ার সুযোগ করে দিলেন বাপ্পাবাবু।
জানা যায় বর্ধমানের আলমপুর থানা এলাকার এক বাসিন্দা মহেশ্বর মুর্মু রবিবার ঝাড়গ্রামের লোধাশুলি থেকে লালগড় - মেদিনীপুর রাজ্য সড়ক পথ ধরে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছিলেন। সবে লালগড় থেকে ঝিটকার ঘন অরণ্য পথ পেরিয়ে ঝিটকাতে প্রবেশ করতেই মহেশ্বরকে দেখেন বাপ্পা। মহেশ্বরের উস্কোখুস্কো চুল, পরনে কাপড় এবং শরীরে ভালো শীতের পোশাকের না থাকা এবং খালি পা নজর কাড়ে বাপ্পাবাবুর।
পথচারী মহেশ্বরের এই অবস্থা দেখেই কৌতুহল জন্মায় লালগড়ের ঝিটকার যুবক বাপ্পা মাহাতর মনে। বাপ্পা কাছে গিয়ে ছেলেটির নাম, ঠিকানা এবং কোথায় যাবেন, তা জানতে চাইলে ওই পথচারী জানান, তার নাম মহেশ্বর মুর্মু বাবার নাম সুকচাঁদ মুর্মু , বর্ধমানের আলমপুর থানা এলাকায় বাড়ি। কিন্তু এতো দুরে বাড়ি তাহলে হেটে হেটে যাচ্ছে কেন? বাপ্পা ফের জানতে চাইলে মহেশ্বর জানান, আসলে বাড়ি যাওয়ার মতো তার হাতে কোনো টাকা নেই, নেই খাওয়ার মতো টাকাও। কিন্তু বাড়ি যেতেই হবে। মিলিত হতে হবে পরিবারের সাথে৷ তাই বাড়ি হেঁটে হেঁটে যাবো।
মহেশ্বরের এই কথা শুনে তাকে সাহায্যের হাত বাড়িতে দেন বাপ্পা। যে বাপ্পা এলাকায় সমাজসেবী ও একজন জঙ্গল ও পশুপ্রেমিক হিসেবে সুপরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে গোয়ালতোড় নিউজ এক্সপ্রেস পোর্টালের চিফ এডিটর হিসেবে কাজ করেন। সেই বাপ্পা মহেশ্বরের খাওয়ার ব্যাবস্থা করে,পরে তার বাড়ি যাওয়ার মতো আর্থিক সহায়তা করার পাশাপাশি রাস্তায় যাতে অভুক্ত থাকতে না হয় সেজন্য সঙ্গে কিছু খাবার দিয়ে বাসে তুলে দেন।
অভুক্ত ও কপর্দকহীন মহেশ্বরের কাছে জঙ্গলমহলের বাপ্পার উপস্থিতি যেন দেবদুতের মতো। বাসে চাপার আগে বার বার নিজের মনেই বিড়বিড় করে বলে উঠে মহেশ্বর, তোমার এই উপকার জন্মজন্মান্তরেও ভুলিব না। আর যিনি এই ধরনের সমাজ সেবা অহরহ করে থাকেন সেই বাপ্পা কিন্তু এখনো চিন্তায়, মহেশ্বর ঠিক মতো বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছেন কিনা? কারন মহেশ্বরের কাছে কোনো ফোন নেই যে খোঁজ নেবেন।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊