টাকার খেলায় এবার টিআরপি,জালিয়াতির অভিযোগ ধৃত ৪

 


টাকার খেলায় এবার টিআরপি,জালিয়াতির অভিযোগ ধৃত ৪


তনজিৎ সাহা, কলকাতা


টাকা নিয়ে টিআরপি কেনার অভিযোগ উঠল এবার অর্ণব গোস্বামীর রিপাবলিক টিভির বিরুদ্ধে।বৃহস্পতিবার মুম্বাই এর পুলিশ কমিশনার পরমবির সিং ।তার দাবি রিপাবলিক টিভি ফক্ত মারাঠি এবং বস্ক সিনেমা টাকা দিয়ে টিআরপি কিনেছে রাডারে রয়েছে আরো বেশ কতগুলি নিউজ চ্যানেল।তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ লক ডাউনের সময়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এই চ্যানেল গুলি চালিয়ে রাখার জন্য টাকা দিত ।আর জন্য পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে পাল্টা মানহানি মামলা দায়ের করতে চলেছে রিপাবলিক টিভি।



গ্রাহকরা জানিয়েছেন, যাঁরা কারসাজির সঙ্গে জড়িত, তাঁরা গ্রাহকদের ঘুষ দিয়েছেন । গ্রাহকদের বলা হয়েছিল, তাঁরা যখন টেলিভিশন দেখছেন না বা যখন বাড়িতে নেই, তখন যাতে নির্দিষ্ট কিছু চ্যানেল টেলিভিশনে চালু করে রাখা হয় ।" বলছেন মুম্বই পুলিশের কমিশনার পরমবীর সিং । টেলিভিশন রেটিং পয়েন্ট (TRP) চক্রের পর্দাফাস করল মুম্বই পুলিশ । ভিওয়ারশিপ রেটিংয়ের উপর কারসাজি করার অভিযোগে দুই মারাঠি চ্যানেলের কর্ণধার-সহ মোট চারজনকে আজ গ্রেপ্তার করল মুম্বই পুলিশের ডিটেকশন ক্রাইম ব্রাঞ্চ ।



মুম্বই পুলিশের কমিশনার পরমবীর সিং জানিয়েছেন, সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তে মুম্বই পুলিশ ও মহারাষ্ট্র সরকারের কড়া সমালোচনা করেছে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম । ওই সংবাদমাধ্যমটিই এই TRP কারসাজি চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছেন তিনি ।তিনি জানিয়েছেন, "TRP কারসাজি চক্রে এই সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমও জড়িত রয়েছে । ওই খবরের চ্যানেলটির ডিরেক্টর, প্রমোটার বা অন্য যে কোনও কর্মী, যাঁরা এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে । TRP-র উপর নির্ভর করে চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের দেওয়ার জন্য বিজ্ঞাপনদাতারা কত টাকা দেবেন, তা নির্ধারণ করা হয় । হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা । TRP-র সঙ্গে কারসাজি করা মানে বিজ্ঞাপনদের টার্গেট অডিয়েন্স ভুল হওয়া । ফলে এই ধরনের কারসাজি হওয়ার মানে কয়েকশো কোটি টাকার ক্ষতি ।"TRP থেকে বোঝা যায়, কোন টেলিভিশন অনুষ্ঠানটি সবথেকে বেশি দেখছেন দর্শকরা । পাশাপাশি কোনও একটি নির্দিষ্ট চ্যানেলে কোন অনুষ্ঠানটি দর্শকদের সবথেকে বেশি পছন্দের, তাও নির্ধারণ করা যায় এর থেকে । 



সম্প্রতি, মুম্বই পুলিশ দাবি করেছিল, মহারাষ্ট্র সরকার ও সরকারের গোটা পরিকাঠামোর বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়ানোর জন্য সোশাল মিডিয়ায় প্রায় আট হাজার ভুয়ো অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়েছিল । এর ঠিক পরপরই TRP নিয়ে কারসাজির অভিযোগে দুই মারাঠি চ্যানেলের মালিককে গ্রেপ্তার করল পুলিশ ।ওই দুই চ্যানেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিও খতিয়ে দেখছে পুলিশ । এছাড়া, যাঁদের যাঁদের নাম জড়িয়েছে, তাঁদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠাচ্ছে পুলিশ ।নাম উঠেছে তিনটি চ্যানেলের, নজর রয়েছে রিপাবলিকের উপরেও।
 


পরমবীর সিং জানিয়েছেন, "এখনও পর্যন্ত যা কিছু তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে তিনটি চ্যানেলকে শনাক্ত করা হয়েছে । এর মধ্যে দু'টি আঞ্চলিক ভাষার চ্যানেল -- ফকত মারাঠি ও বক্স সিনেমা । তৃতীয়টি সর্বভারতীয় চ্যানেল -- রিপাবলিক টেলিভিশন । BARC-এর রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে তদন্তে নেমেছিল পুলিশ । গ্রাহকরা জানিয়েছেন, যাঁরা কারসাজির সঙ্গে জড়িত, তাঁরা গ্রাহকদের ঘুষ দিয়েছেন । গ্রাহকদের বলা হয়েছিল, তাঁরা যখন টেলিভিশন দেখছেন না বা যখন বাড়িতে নেই, তখন যাতে নির্দিষ্ট কিছু চ্যানেল টেলিভিশনে চালু করে রাখা হয় ।"ব্রডকাস্ট অডিয়েন্স রিসার্চ কাউন্সিল (BARC) প্রতি সপ্তাহে ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলির রেটিং পয়েন্ট প্রকাশ করে । BARC-এর আধিকারিকদেরও বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরমবীর সিং ।



গোটা মুম্বই শহরে TRP নির্ধারণের জন্য 2000 ব্যারোমিটার বসানো রয়েছে । এর জন্য হংস নামের একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে BARC । যে দুই চ্যানেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তার মালিকদের আজ আদালতে পেশ করা হলে তাঁদের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দেওয়া হয় । ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির 409 নং ও 420 নং ধারায় মামলা রুজু হয়েছে । পরমবীর সিংয়ের কথায়, "এটা যদি মুম্বইয়ে হতে পারে, তবে আমাদের অনুমান, ভারতের অন্যান্য প্রান্তেও হয়ে থাকতে পারে । হংস সংস্থার তরফে TRP কারসাজির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল এবং সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয় ।



"মুম্বই পুলিশের অভিযোগে অর্ণব গোস্বামীর প্রতিক্রিয়া TRP নিয়ে কারসাজির অভিযোগে রিপাবলিক মিডিয়া নেটওয়ার্কের এডিটর ইন চিফ অর্ণব গোস্বামী জানিয়েছেন, মিথ্যা অভিযোগ আনার জন্য মুম্বই পুলিশের কমিশনারের বিরুদ্ধে তিনি মানহানির মামলা করবেন ।পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি আরও দাবি করেন যে, এর আগেও মুম্বইয়ের কমিশনার পালগড়ের ঘটনা নিয়ে রিপাবলিক টিভিকে নিশানা করেছিলেন । এবার সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর মামলা সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করার জন্য নিশানা করছে । BARC -এর রিপোর্টে রিপাবলিক টিভির বিরুদ্ধে কোনও সন্দেহজনক বিষয়ের উল্লেখ নেই বলেও দাবি অর্ণব গোস্বামীর ।এই অভিযোগের তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি । মুম্বই পুলিশকে লিখিত ক্ষমা চাইতে বলেও জানিয়েছেন । বিষয়টি নিয়ে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন অর্ণব ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ