উৎসবের আনন্দে মাঝেই পুড়ে ছাই সর্বস্ব! শালবনীর দিনমজুর পরিবারের পাশে দাঁড়ালো-ছত্রছায়া


শচীন পাল, সংবাদ একলব্যঃ আগুনের লেলিহানে সর্বস্ব খোয়ানো বাচ্চু কর্মকারের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এলেন ছত্রছায়ার সদস‍্যরা। শারদ উৎসবের মাঝেই অষ্টমীর দুপুরে হঠাৎ আগুন লাগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের ২ নং অঞ্চলের তিলাবনী গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর বাচ্চু কর্মকারের বাড়িতে। সেইসময় বাচ্চুবাবু স্ত্রী ও তিন সন্তানকে (দুই মেয়ে ও এক ছেলে) নিয়ে একটু ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। সেই ফাঁকে বাড়িতে আগুনে লেগেপুড়ে ছাই হয়ে যায় বাড়ির আসবাবপত্র, টাকাকড়ি, রেশন কার্ড, আধার কার্ড, নতুন ও পুরাতন জামাকাপড়, খাদ‍্যসামগ্রীসহ প্রায় সবকিছুই। 


লোকমুখে এই খবর গিয়ে পৌছাঁয় শালবনীর স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'ছত্রছায়া'র কাছে। উৎসবের মাঝে এহেন দুঃসংবাদে বিচলিত হয়ে পড়েন 'ছত্রছায়া' গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা নূতন ঘোষ সহ অন্যান্য সদস্যরা। তাঁরা একরাতের মধ্যেই উদ্যোগ গ্রহণ করেন, নবমীর সকালে সাধ্যমতো ত্রাণসামগ্রী এবং নতুন জামাকাপড় পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে। সদস‍্য-সদস‍্যা ও শুভাকাঙ্খীদের সহৃদয় সহযোগিতয় সেই আন্তরিক প্রচেষ্টা সফলও হয়। 

নবমীর সকালে 'ছত্রছায়া'র সদস্যরা সাধ্যমতো ত্রাণ নিয়ে পৌঁছলে, চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি বাচ্চু কর্মকার ও তাঁর পরিবার বলে জানাযায়। শুধু তাই নয় পুনরায় একাদশীর দিন মঙ্গলবার 'ছত্রছায়া'র পক্ষ থেকে দিনমজুর বাচ্চু'র বাড়িতে গিয়ে লেপ, বালিশ, কম্বল,মশারী ,মাদুর , শাকসবজি, ভূষিমাল দ্রব্য এবং প্রয়োজনীয় আরও কিছু সামগ্রী দিয়ে আসা হয়। 

'ছত্রছায়া' গ্রুপের পক্ষে নূতন ঘোষ বাবু জানালেন, "পঞ্চমী থেকে অষ্টমী পর্যন্ত শালবনী ব্লকের বিভিন্ন দারিদ্র্যপীড়িত গ্রামে এক হাজারেরও বেশি কচিকাঁচার হাতে নতুন পোশাক তুলে দিতে পেরেছি অসংখ্য মানুষের সহায়তায়। অষ্টমীর কর্মসূচি শেষে বাড়ি ফেরার কিছুক্ষণের মধ্যেই এই দুঃসংবাদ পাই! এই অবস্থায় রাতের মধ্যেই বন্ধু-বান্ধবদের সাহায্যে সাধ্যমতো কিছু ভূষিমালের জিনিসপত্র, নতুন কাপড় চোপড় নিয়ে, নবমীর দিন আমরা টিম ছত্রছায়া পৌঁছে গিয়েছিলাম তিলাবনী গ্রামে। ওই দিনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, ওদের বিছানাপত্র এবং চিকিৎসার ন্যূনতম ব্যবস্থা আমরা করব। সেইমতো, মঙ্গলবার বিছানাপত্র ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র আমরা নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম, আমাদের শুভাকাঙ্খীদের সহায়তায়। এছাড়াও, দিনমজুর বাচ্চুর তিনটি ছোট ছোট সন্তানের জন্য, বিভিন্ন খাবার দাবার ও বেবি ফুডও নিয়ে গিয়েছিলাম। ভবিষ্যতেও সাধ্যমতো পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে এসেছি এবং আগামী এক বছরের জন্য ওদের ৫ জনের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ আমরা বহন করব বলে অঙ্গীকার করেছি। একইসাথে, শালবনীর বিডিও, এমএলএ এবং স্থানীয় রেশন ডিলার সবার কাছে আবেদন করবো, ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।"