তিন বছর পর পুলিশের চেষ্টায় ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া তরুণী





সোমনাথ পাল, বনগাঁ: স্বাদ করে বাপ, মা আদরের মেয়ের নাম রেখে ছিল রাবেয়া। অভাবের সংসার। তাই মেয়েকে কয়েক ক্লাস পড়াশোনা করিয়ে তড়িঘড়ি বিয়ে দিয়েছিলেন বাবা মা।। কিন্তু সেই বিয়েই হল কাল। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর বাড়িতে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারের শিকার হয়েছিল বছর বাইশের তরুণী। এমনকি স্বামীও তাঁকে বেধড়ক মারধর করত বলে জানায় ওই তরুণী।



পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে উত্তর ২৪ পরগণার গোপালনগর থানার ফুলবাড়ি এলাকার ওই তরুণীর সাথে বিয়ে হয় কলকাতার এক যুবকের। বিয়ের পরপরই স্ত্রী রাবেয়াকে নিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে মুম্বাই পাড়ি দেয় তাঁর স্বামী। সেখানে গিয়েও স্ত্রী রাবেয়াকে কারণে অকারণে মারধর করত ওই যুবক। 


অবশেষে স্বামীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে মুম্বাই থেকে গোপালনগর নিজের বাড়িতে বাবা মায়ের কাছে ফিরবে বলে মনস্থির করে রাবেয়া। সেই মতো বছর দুয়েক আগে রাতের অন্ধকারে চুরি করে স্বামীর ঘর ছেড়ে কলকাতার উদ্দ্যেশ্যে রওনা দেয় ওই তরুণী। কিন্তু ভুল করে কলকাতার ট্রেন ভেবে রাজস্থানের ট্রেনে চেপে বসে সে। বাকিটা ইতিহাস। 


কয়েকদিন পর রাজস্থান পুলিশ ওই তরুণীকে উদ্ধার করে তুলে দেয় স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হাতে। কয়েকমাস আগে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও রাজস্থান পুলিশের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় গোপালনগর থানায়। সমস্থ কথা শুনে গোপালনগর থানার পুলিশ ফুলবাড়ি এলাকায় খোঁজ পাই রাবেয়ার বাবা, মায়ের। অবশেষে শনিবার সুদূর রাজস্থান থেকে গোপালনগর থানার ফুলবাড়িতে ফিরল রাবেয়া। 


তিন বছর পর নিজের মেয়েকে ফিরে পেয়ে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললেন রাবেয়ার মা ফিরোজা বিবি। পাশাপাশি মেয়েকে ফিরে পেয়ে পুলিশকেও ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি তিনি। 


ঘটনায় গোপালনগর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কাজল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আমরা শুধু আমাদের কর্তব্য করেছি মাত্র। বাপ মায়ের কাছে সন্তান বড় আদরের। আমরা সেটা বুঝি, কারণ আমরাও তো মানুষ।