আঠারোখাই অঞ্চল মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাখী বন্ধন উৎসব
সুজাতা ঘোষ , বাগডোগরা :
এই বিশ্বজগতের মাঝে আমরা প্রত্যেকেই একে অপরের সঙ্গে এক নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ ; প্রত্যেকে প্রত্যেকের প্রতি বেঁধে রয়েছি স্নেহ, প্রেম ও মায়ার বন্ধনে। পারিবারিক বিভিন্ন উৎসব এই বন্ধনকে আরো দৃঢ় করে তোলে। রাখী বন্ধন হলো সেইরকমই একটি উৎসব।
এই রাখী বন্ধন এক বন্ধন শক্তির প্রতিরূপ ; যে শক্তি সকল প্রকার বাধা-বিঘ্নতা ও প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে জীবন যুদ্ধে জয় করার শক্তি যোগায় । প্রতিবছর শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমার দিনে রাখী বন্ধন উৎসব পালিত হয় । এই দিনে দিদি বা বোন তার ভাইয়ের হাতে রাখী বেঁধে দেয়, এই বন্ধনে থাকে ভাইয়ের প্রতি দিদিদের আন্তরিক শুভকামনা । এই মাঙ্গলিক উৎসবের পেছনে রয়েছে অনেক পৌরাণিক ও ঐতিহাসিক কাহিনী।
পৌরাণিক কাহিনীর মধ্যে রয়েছে মহাভারতের কৃষ্ণ দ্রৌপদীর গল্প।আর ঐতিহাসিক দিক থেকে বাংলায় রাখী বন্ধন উৎসব প্রবর্তন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।সালটা ছিল ১৯০৫; লর্ড কার্জন বাংলাকে দুইভাগে ভাগ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন । এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলার শক্তিকে খর্ব করা । ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর এ সিদ্ধান্ত কার্যকরী হয় । সমগ্র বাংলা এর প্রতিবাদে গর্জে ওঠে । শুরু হয় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন। এই আন্দোলনের অন্যতম ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ।তিনি সবাইকে আহবান করেন এর প্রতিবাদে আন্দোলনে সামিল হবার জন্য। এদিন তিনি ধর্ম,বর্ণ,নির্বিশেষে একে অপরের হাতে হলুদ রঙের সুতো বেঁধে দিয়ে রাখী বন্ধন উৎসব পালন করেন।এই অনুষ্ঠানের মধ্যে ধ্বনিত হয়েছিল ঐক্যের সুর আর বিভেদের তীব্র প্রতিবাদ। এই উৎসবের মূলমন্ত্র ছিল " ভাই ভাই এক ঠাঁই"-এইভাবে সেই দিন থেকে রাখী বন্ধন উৎসব পারিবারিক মিলন বন্ধনের মধ্যে দিয়ে আজও আমাদের জীবনে, আমাদের মননে, আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে পালিত হয়ে আসছে ।
করোনা আবহের মধ্যে এ বছরের রাখী বন্ধন উৎসব একটু অন্যরকম । অন্যান্য বছর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে গোটা রাজ্যজুড়ে জাঁকজমকভাবে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় । কিন্তু করোনার আবহে দেখা দিয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতি।
এবছর রাখীবন্ধন উৎসব উপলক্ষে আঠারোখাই অঞ্চল মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এলাকাবাসীকে রাখীর সঙ্গে সঙ্গে করোনা প্রতিরোধে মাস্ক বিতরণ করা হয়। এদিন আঠারোখাই অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি বর্ষীয়ান শ্রী অনিল সিনহা মহাশয়কে রাখী পরান মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি শ্রীমতী যূথিকা রায়। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আঠারোখাই অঞ্চল মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা উপপ্রধান সম্পা বর্মন, দার্জিলিং জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভানেত্রী অনিন্দিতা গুহ পাল, মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি শ্রীমতী যূথিকা রায় খাসনবিশ, আঠারোখাই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধাণ শ্রী অভিজিৎ পাল, পঞ্চায়েত সদস্যাবৃন্দ ও দলিয় কর্মীরা।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊