কী হবে প্রায় সাড়ে চার হাজার আপার প্রাইমারী প্রার্থীর ভবিষ্যৎ ? ক্রমশ ক্ষোভের পাহাড় জমছে


"উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০১৪ সালে, পরীক্ষা হয় ২০১৫ সালে,এবং ফল প্রকাশিত হয় ২০১৬ সালে। এরপর ২০১৯ সালে ভেরিফিকেশন ও ইন্টারভিউ নেওয়া হয় সেখানে দেখা যায় অনেক অপ্রশিক্ষনরত এবং কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা ডাক পেয়েছে।" এমনই অভিযোগ সামনে এনে কলকাতা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন প্রায় সাড়ে চার হাজার প্রার্থী।  এরপর বেশ কয়েকজন কেস পিটিশনের ভেরিফিকেশন ডাক পায় । কিন্তু এখনও প্রায় ৪২০০ জন কেস পিটিশনের অর্থাৎ রিট পিটিশনের ভেরিফিকেশন ও ইন্টারভিউ হয়নি বলে জানা গিয়েছে। 

এক মামলার শুনানিতে সাত দিনের মধ্যে উচ্চ প্রাথমিকের মেধা তালিকার প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশ করতে কমিশনকে নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য৷ সেখানে তিনি সাফ নির্দেশ দিয়েছেন, মেধা তালিকায় টেটে প্রাপ্ত নম্বর, শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রফেশনাল কোয়ালিফিকেশন ও মৌখিক পরীক্ষায় কোন প্রার্থী কত নম্বার পেয়েছে, তার তালিকাও তুলে ধরতে হবে৷ এই চার স্তরের নম্বরের যোগফল উল্লেখ করতে বলা হয়েছে কমিশনকে৷ এমনকি আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এই নিয়োগ প্রক্রিয়া করতেও নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ 

কিন্তু তালিকা প্রকাশ করেই নিয়োগ করা যাবে না। ২১ দিন সময় দিতে হবে। সেই তালিকা দেখে কোনও প্রার্থীর আপত্তি থাকলে, সেটা তিনি যাতে এসএসসিতে লিখিতভাবে জানানোর সুযোগ পান, সেইজন্যই সময় চাওয়া হয়।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে মেধাতালিকা প্রকাশ করে কমিশন।আর এরপরেই উঠে আসে  একাধিক অভিযোগ। যে অভিযোগ গুলো মুলত সামনে এসেছে-

১) যারা ঘুষ দিয়েছে তাদের নাম আছে লিস্টে।১০/১২/১৪/১৬ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছে কেউ কেউ।
২) টেটের নম্বর বেড়ে হয়েছে ১০৩>১২০, ১০৪>১২২, ১০১>১৪০, ৯২>১০৮(ইতিহাস)
৩) ট্রেইন্ড নয় অথচ নাম আছে
৪)৯০/৯৫ পেয়েও নাম আছে। বাংলা জেনারেল মেল/ফিমেল
৫) ভাইভার নম্বর ইচ্ছেমতো পরে কম্পিউটারে বসানো হয়েছে।
৬) ভাইভায় কেন্ডিডেটের পরীক্ষা খারাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রচুর নম্বর পেয়েছে।
৭) সরকার ইচ্ছে করে এমন লিস্ট দিয়েছে যাতে কেস হয়ে লিস্ট বাতিল হয়।
৮) মেরিট লিস্ট প্রার্থীদের টেট ওয়েইটেজ নিয়ম বহির্ভূত বৃদ্ধি।
৯) রেশিও মেইনটেইন না করা।
১০) গেজেট না মানা।

(উপরোক্ত অভিযোগ গুলো বিভিন্ন প্রার্থীদের স্যোসাল মিডিয়ার পোস্ট থেকে সংগৃহীত) 

কিন্তু আজও সেই অভিযোগ গুলির কোন নিস্পতি হয়নি বলে অভিযোগ। তাছাড়া প্রভিশনাল মেরিট লিস্ট বের করার সময় কোর্ট থেকে রায় দিয়েছিল যতক্ষণ এই রিট পিটিশন দের ভেরিফিকেশন এবং ইন্টারভিউ না হচ্ছে কোনো নিয়োগ হবে না। আর এইরকম প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪২০০ জন।

এই উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার 'রিট পিটিশনার ' প্রার্থীরা কিভাবে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ভেরিফিকশন থেকে এখনো বঞ্চিত তা নিয়ে ক্রমশ ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

একদিকে যখন রাজ্যজুড়ে আপার প্রাইমারীর দ্রুত নিয়োগের জন্য দাবী  উঠছে তখন ক্রমশ হতাশা আর ক্ষোভে আচ্ছন্ন প্রায় সাড়ে চার হাজার প্রার্থী । 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ