নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহারঃ 
মহামারীতে বন্ধ হয়ে যায় কল-কারখানা থেকে অন্যান্য যাবতীয় কাজকর্ম। গৃহবন্দী হয়ে পড়েন সকলে। বাদ পড়েনি সমাজের নরসুন্দরেরাও (ক্ষৌরকার)। কাজ হারিয়ে অসহায় হয়ে ওঠে তাঁদের জীবন। পরবর্তিতে আনলক ফেজ ২ তে পুনরায় করোনার স্বাস্থ্যবিধান মেনে কাজ শুরুর কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। 


তবে কাজ শুরু হলেও করোনার আতঙ্ক নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে তাঁদের। অনেক ক্ষেত্রেই সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। তাই ক্ষৌরকারদের দাবী তাঁদের সাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। আর এই দাবী নিয়ে কোচবিহার জেলা ক্ষৌরকার সমিতি বার বার বিভিন্ন প্রশাসনিক মহলে যোগাযোগ করেও ব্যার্থ হয়েছে বলে অভিযোগ। সমিতির অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ৫ হাজার ক্ষৌরকারের স্বাক্ষর সম্বলিত দাবী পৌছাতেই দেওয়া হচ্ছে না।  

কোচবিহার জেলা ক্ষৌরকার সমিতির সম্পাদক রঞ্জিত শীল বলেন- "বর্তমান করােনা মহামারী চলাকালীন সময়ে সরকারি নির্দেশে ,পেটের দায়ে এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার কারণে, অনন্যপায় হয়ে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু বারংবার বিভিন্ন প্রান্তে সাহায্য চেয়েও এবং মুখ্যমন্ত্রীর সাথে যােগাযােগের চেষ্টা করেও আজ আমরা প্রত্যাক্ষিত ও অবহেলিত। অবশেষে দিনহাটা অশ্বমেধ - একটি সামাজিক সংস্থার হাত ধরে  জেলাশাসক মারফৎ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন পত্র পাঠানোর চেষ্টা চালাচ্ছি।" 

অশ্বমেধের পক্ষ থেকে অমিত দাস জানিয়েছেন যে- " অশ্বমেধ ক্ষৌরকারদের এই ন্যায্য দাবীর পাশে সর্বদা আছে এবং থাকবে। এছাড়া ক্ষৌরকারেরা যে প্রশাসনিক অবহেলার শিকার হচ্ছে এবং তাঁদের কথা মাননীয়া জনদরদী মুখ্যম্যন্ত্রীর কাছে পৌছাতে দিচ্ছে না, তার তীব্র বিরোধিতা করি।" 

জমা না হওয়া আবেদনপত্রের মূল বিষয়গুলি হলও -
(১) আমাদের কারাে করােনা রােগ হলে উপযুক্ত চিকিৎসার খরচ (বেসরকারি নার্সিংহােম , ভেন্টলেটর বা আনুসঙ্গিক কিছু প্রােয়ােজন হলে কে যােগাবে ? অতএব মহাশয়ার কাছে বিনীত অনুরােধ যেন তিনি অবিলম্বে আমাদের জনপ্রিয় ‘সাস্থ্যসাথী প্রকল্পের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিকরণ করেন।
(২) যদি করােনা আক্রান্ত হয়ে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিই মারা যায় এবং সেই পরিবার এর অন্য কেউ তার দ্বারা সংক্রামিত হয়ে থাকে, তবে তার অবর্তমানে সেই পরিবারটির তাৎক্ষণিক চিকিৎসা বা অনান্য খরচ কিভাবে চলবে? অতএব মহাশয়ার কাছে বিনীত অনুরােধ যেন তিনি অবিলম্বে আমাদের মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরন ঘােষণা করেন।
(৩) যদি করােনা আক্রান্ত হয়ে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিই মারা যায় তবে সেই পরিবারটির নাবালক সন্তান /বিধবা স্ত্রী /অক্ষম পিতা-মাতা কে যেন পেনশন এর ব্যবস্থা করেন৷
(৪) ক্ষৌরকার সম্প্রদায় কে বাঁচান - মহামারীর সময়ে উপরিলিখিত ও অনান্য সরকারি সুযােগ সুবিধা
অতিদ্রুত প্রদান করে বাধিত করুন।
উপরোক্ত দাবীগুলি নিয়ে এদিন কোচবিহার ক্ষৌরকার সমিতি ৫ হাজার গণস্বাক্ষরিত আবেদন পত্র জেলাশাসকের কাছে জমা করতে গিয়ে ব্যর্থ হন বলে জানিয়েছেন সমিতির সম্পাদক। যদি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হয় তবে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সমস্ত ক্ষৌরকর্ম বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। 

এই বিষয়ে জেলাশাসকের করণের  সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 

বিস্তারিত শুনুন ভিডিওতে-