সারা বিশ্বে করোনার ভয়াল কোপে কুপোকাত। এমন পরিস্থিতিতে একদিকে দেশ জুড়ে চলছে লক ডাউন অন্যদিকে বিজ্ঞানীরাও করোনার প্রকোপকে আটকাতে নানা বিধ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টায় দিন রাত একাকার করে দিয়েছে বিজ্ঞানীরাও। গবেষণা করতে গিয়ে উঠে এল এক নতুন তথ্য। ভারতে করোনার যে ভাইরাস সংক্রমিত হচ্ছে সেটির প্রকৃতি অনেকটাই দুর্বল বলেই জানাচ্ছে গবেষকরা। বিশ্বের অন্য প্রান্তে তাই যতটা দাপট দেখাতে পারছে কোভিড-১৯ ভাইরাস ভারতে ততটা দাপট দেখাতে পারছে না। একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ভাইরাসটিকে পৃথিবীর অন্যান্য ভাইরাসের থেকে আলাদা করে তুলেছে। 

বিশ্বের বহু দেশে করোনার প্রকোপ অনেকটা বেশি হলেও ভারতে অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটা কম এর পিছনে দায়ী জিনোম কাঠামোর একটি অংশ যার নাম 'ক্ল্যাড আই/এথ্রি আই' (Clade I/A3i)।ভারতে আক্রান্ত রোগীরদের দেহ থেকে ভাইরাসের যে নমুনা নেওয়া হয়েছে সেখানে ৪৩ শতাংশ রয়েছে এই বৈশিষ্ট্যটি। বিশ্বে মাত্র ৩.৫ শতাংশ জিনোম কাঠামোতে রয়েছে এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যটি। আর জীবজগতের শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী 'ক্ল্যাড' হল যারা একই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন প্রজাতি থেকে সৃষ্টি হোমোলোগাস প্রকৃতির একটি ভাইরাস। সাধারণ ভাষায় বলতে গেলে ক্ল্যাড হল ভাইরাসের অপর একটি স্ট্রেন।

সোমবার সেলুলার ফর মলিক্যুলার বায়োলজি অফ দ্য কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ-এর পক্ষ থেকে একটি টুইটে বলা হয়, 'ভারতে যে ভাইরাসটি সংক্রমণ ছড়াচ্ছে রেজাল্ট বলছে সেই ভাইরাসটি একটি পৃথক গোষ্ঠীর। এই যে প্রজাতিটি দেখা যাচ্ছে এটাই ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ছড়িয়ে পড়েছে। এই প্রজাতিতে ৪১ শতাংশ সারস-কোভ ২ জিনোম যেমন রয়েছে তেমনই ৩.৫ শতাংশ বিশ্বের কোনও জিনোম কাঠামোও পরিলক্ষিত হয়েছে।'

গবেষকরা জানাচ্ছে মোট ৬৪টি জিনোম কাঠামো তাঁরা বের করতে পেরেছেন যার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এই Clade I/A3i বৈশিষ্ট্যটি। 

আইসিএমআর জানিয়েছে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের মাধ্যমে ভারতে মোট তিন প্রকারের করোনা ভাইরাস এসেছে। চিন, আমেরিকা ও ইউরোপ থেকে। 

আইসিএমআর আরও জানিয়েছে, ভারতে এসে এই ভাইরাসগুলি নিজেরা চরিত্র বদলও করেছে। অতিমারী বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে যে এই তিন ভাইরাসের উত্‍পত্তি এক প্রজাতি থেকে। আর সেই প্রজাতিই ভারতে সংক্রমণ ছড়িয়েছে প্রথমে। কিন্তু সেটির দাপট অনেক কম। এর থেকেই বোঝা যায় জিনোম কাঠামোর বৈশিষ্ট্যর ফলেই তা হয়েছে।