জাতীয় সঙ্গীত অথচ কোন কথা নেই! জেনে নিন সেই চেনা দেশের না যাদের জাতীয় সঙ্গীতে কোন কথা নেই
সংবাদ একলব্য ডিজিটাল ডেস্কঃ সেই ছোটবেলা বা মূলত বলা চলে স্কুল জীবন থেকে শুরু করে আমরা আমাদের দেশের জাতীয় সংগীত শুনছি এবং পাঠ করছি। কিন্তু এমন কোনদিন শুনিনি যে এমনও কোন দেশ রয়েছে যাদে জাতীয় সংগীতে কোন কথাই নেই। কারন সংগীত বলতে আমরা সাধারণ ধ্বনি, সুর ও তালের সমন্বয়ে সৃষ্ট এক প্রকারের সুসংবদ্ধ শব্দমালাবেক বুঝি। পৃথিবীতে মূলত সংগীতের সৃষ্টি হয় স্বর এবং ধ্বনির সমন্বয়ে। এরপর সময়ে সময়ে সংগীতে এসেছে নতুনত্ব। কিন্তু মূলের সেই স্বরলিপি সবসময়ই প্রয়োজন ছিল সংগীতে। ভিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন সময়ে রচিত হয়েছে নানা প্রকারের সংগীত।
কিন্তু সংগীত অথচ কোন কথা নেই! কেমন অবাক হবার বিষয়না। আরও অবাক হবার বিষয় হল যে- এই কথা ছাড়া সংগীত কোনো সাধারণ সংগীত নয়, এগুলো হল পৃথিবীর চারটি পরিচিত দেশের জাতীয় সংগীত যার মধ্যে কোন কথা নেই, রয়েছে শুধু সুর। আর সেসব সুর তৈরি করা হয়েছে দেশীয় সব বাদ্যযন্ত্র দিয়ে। দেশগুলো হলো স্পেন, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, সান মারিনো এবং কসোভো। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই চারটি দেশের জাতীয় সংগীত এর ব্যাপারে বেশ কিছু অজানা তথ্য।
স্পেন: স্পেনের জাতীয় সংগীত 'মার্সা রিয়েল' নামে বহুল পরিচিত। অনুমান করা হয় বর্তমান জার্মানির অন্তর্গত প্রাশিয়ার রাজ্যের রাজা দ্বিতীয় ফ্রেডেরিক এই সংগীতটি রচনা করেন। ১৮৬১ সালে সংগীতটি সর্বপ্রথম পুরুশিয়ায় প্রকাশ হওয়ার পর ১৮৬৪ সালের দিকে প্রাশিয়ায় বিশাল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সে সময় স্পেনের রাজা তৃতীয় চার্লস, দ্বিতীয় ফ্রেডেরিকের সেনাবাহিনীর দ্বারা উন্নত সামরিক কৌশল শিখতে একবার জুয়ান মার্টিন নামে এক ব্যাক্তিকে পাঠান। এরপর জুয়ানকে ফেরত পাঠানোর সময় পুরস্কার হিসেবে ফ্রেডেরিক চার্লস কে মার্সা রিয়েলের সুরকৌশল লিখে দেন। এরপর ১৯০৮ সালে স্পেনে প্রকাশিত এনসাইক্লোপেডিয়া এস্পানাতে সংযুক্ত করা হয় এই সংগীত। মূলত সেখান থেকেই রাণী দ্বিতীয় ইসাবেলা, সংগীতটিকে প্রথমবারের মতো স্পেনের জাতীয় সংগীত হিসেবে ঘোষণা করেন।
এরপর দীর্ঘ্য সময় বাদে ২০০৭ সালে স্পেনের এই সংগীতের জন্য লিরিক্সের আহ্বান করা হলে অনেক লিরিক্স জমা পড়ে। কিন্তু সেখান থেকে কোনো লিরিক্স স্পেন সরকারের পছন্দ না হওয়ায় এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কথাহীন এই সংগীতটিই স্পেনের জাতীয় সংগীত হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
বসনিয়া - হার্জেগোভিনা: দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে অবস্থিত এই দেশের জাতীয় সংগীতেও নির্দিষ্ট কোন লিরিক্স নেই। তবে স্থানীয়ভাবে এই দেশে বেশ কিছু লিরিক্স প্রচলিত রয়েছে। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে যে জাতীয় সংগীতটি প্রচারিত হয় সেটিতে কোনো ধরনের লিরিক্স বা কথা নেই। ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সরকারিভাবে কথাহীন এই সংগীতটি বসনিয়ার পূর্বের জাতীয় সংগীত 'জেদনা সি জেদিনা'র স্থলাভিষিক্ত হয়। বসনিয়া- হার্জেগোভিনা দেশটি বসনিয়া নামেই বহুল প্রচলিত।
সান মারিনো: বিখ্যাত ইতালিয়ান বেহালাবাদক ফেদেরিকো কনসোলো একটি সংগীত রচনা করেন। ১৮৯৪ সালে ফেদেরিকো কনসোলো রচিত এই সংগীতটি সান মারিনোর জাতীয় সংগীত হিসেবে প্রচলিত হয়। এই সংগীতের কোনো অফিশিয়াল লিরিক্স না থাকলেও স্থানীয়ভাবে এর বেশকিছু লিরিক্স প্রচলিত রয়েছে। স্থানীয় ভাষায় সান মারিনোর জাতীয় সংগীতকে ডাকা হয় 'ইন্নো নোজিওনালে' নামে।
কসোভো: এই দেশের জাতীয় সংগীতে কোন লিরিক্স না থাকায় প্রথম থেকেই একটু বেশিই আলোচিত ছিল কসোভা। তবে ২০০৮ সালের জুন মাসে কসোভোর বিখ্যাত শহর প্রিস্টিনায় এর লিরিক্সের জন্য খোলা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে কসোভোর জাতীয় পরিষদ। আর সেখান থেকে পাওয়া লিরিক্স বর্তমানে কসোভোর জাতীয় সংগীতের লিরিক্স হিসেবে স্থানীয়ভাবে ব্যবহার করা হয়। কসোভোর জাতীয় সংগীত ইউরোপে 'হিমনি আই রিপাব্লিকাস সি কসোভোস' নামে বেশ পরিচিত।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊