করোনা সংক্রমণে কুপোকাত বিশ্বে এখনও প্রতিষেধক মেলেনি। প্রতিষেধক হাতে আসার আগেই করোনার চিকিৎসায় সস্তার ‘জীবনদায়ী’ ওষুধের খোঁজ দিয়ে দিয়েছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। ব্রিটিশ গবেষকরা প্রমাণ দিয়েছেন অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি স্টেরয়েড ‘ডেক্সামেথাসোন’ ‘জীবনদায়ী’ ওষুধ। 

মুমূর্ষু করোনা রোগীর চিকিত্‍সায় এ বার সস্তার স্টেরয়েড ডেক্সামেথাসোন ব্যবহারে সবুজ সংকেত দিল সরকার। শনিবারই স্বাস্থ্যমন্ত্রক থেকে জানানো হয়, এবার আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা করোনা রোগীদের উপর ব্যবহার করা হবে এই ওষুধ। 

স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পক্ষ থেকে গত ১৩ জুনৱ নির্দেশিকায় জানানো হয়েছিল করোনা রোগীদের উপর বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ মেনে রেমডিসিভির ব্যবহার করা হবে। পরীক্ষামূলক ভাবে প্লাজমা থেরাপি এবং অপেক্ষাকৃত কম সংকটাপন্ন রোগীকে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেওয়ার নির্দেশও ছিল।

নতুন নির্দেশিকায় নাম এসেছে ডেক্সামেথাসোনের। বলা হচ্ছে. রোগীকে ০.১ মিলিগ্রাম থেকে ০.২ মিলিগ্রাম হিসেবে তিনদিন এই ওষুধ দেওযা হবে।

এর আগে করোনার চিকিৎসায় অক্সফোর্ডের গবেষকদের এই অভূতপূর্ব খোঁজ নিয়ে উচ্ছসিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO। 

ওষুধ প্রয়োগে ভেন্টিলেশন বা অক্সিজেনের সাহায্য নেওয়া মরনাপন্ন করোনা রোগীদের মৃত্যুর হার এতটা কমানোর ঘটনা এই প্রথম। এটা করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অগ্রগতি ঘটাবে বলে মন্তব্য করেন WHO-এর ডিরেক্টর জেনারেল! WHO-এর ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রস আধানম ঘেব্রেইসাস জানান, অত্যন্ত সৌভাগ্যের বিষয়, করোনার চিকিৎসায় ‘জীবনদায়ী’ প্রমাণিত হওয়া এই স্টেরয়েডের দাম খুবই সামান্য। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই এই ওষুধ অত্যন্ত সহজলভ্য। তাই গুরুতর অসুস্থ বা মরনাপন্ন করোনা রোগীদের প্রাণ বাঁচাতে ডেক্সামেথাসোন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

অক্সফোর্ডের গবেষকরা জানান, পরীক্ষা করে দেখা গেছে ‘ডেক্সামেথাসোন’ প্রয়োগ করে ভেন্টিলেশনে থাকা রোগীদের মৃত্যুর হার কমানো গিয়েছে। যার হার প্রায় ৪১ শতাংশ। এই ওষুধের প্রয়োগে অক্সিজেনের সাহায্য নেওয়া গুরুতর অসুস্থ করোনা আক্রান্তদের মৃত্যুর হার কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ এবং স্থিতিশীল করোনা রোগীদের মৃত্যুর হার প্রায় ১৩ শতাংশ কমেছে।