প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গতকাল জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। মোদী বলেন, অভূতপূর্ব কোভিড-১৯ এর কারণে যে সঙ্কট দেখা দিয়েছে, সেই যুদ্ধে আমাদের কেবল নিজেকে রক্ষা করলেই হবে না, আরো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তৈরি করতে হবে আত্মনির্ভর ভারত। 

প্রাক কোভিড এবং কোভিড পরবর্তী ভারতের বিষয়ে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একবিংশ শতাব্দীর ভারতের স্বপ্ন পূরণ করতে হলে আমাদের স্বনির্ভর হয়ে উঠতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্বায়নের এই পৃথিবীতে আত্মনির্ভরতার সংজ্ঞা বদলে গেছে। তিনি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা করে বলেন, দেশ যখন স্বনির্ভরতার কথা বলে, তা আত্ম-কেন্দ্রিকতার থেকে আলাদা। সারা বিশ্বকে একটি পরিবার হিসেবে ভাবাই ভারতীয় সংস্কৃতি, ভারতের প্রগতির অংশীদার হবে গোটা বিশ্ব। তিনি বলেন, সারা বিশ্ব মনে করে সমগ্র মানবজাতির উন্নয়নে ভারতের প্রচুর অবদান থাকবে।

কচ্ছের ভূমিকম্পের পর সেখানের বিপর্যয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দৃঢ় সংকল্পের কারণে ওই এলাকার পুনর্গঠন সম্ভব হয়েছিল। সেই একই ধরণের সঙ্কল্পের মাধ্যমেই দেশকে আত্মনির্ভর করে তুলতে হবে। 


শ্রী মোদী বলেন, আত্মনির্ভর ভারত দাঁড়িয়ে থাকবে পাঁচটি স্তম্ভের উপর। এগুলি হল – 

১, অর্থনীতি, যা ক্রমবর্ধমান পরিবর্তনই আনবে না, প্রয়োজনীয় উচ্চতায়ও পৌঁছাবে। 
২। পরিকাঠামো যা হবে ভারতের পরিচয়। 
৩। ব্যবস্থা- একবিংশ শতাব্দীর প্রযুক্তি নির্ভর ব্যবস্থাপনা। 
৪। প্রাণবন্ত জনসাধারণ – যা হবে আত্মনির্ভর ভারতের শক্তির উৎস।.
৫। চাহিদা- আমাদের যে চাহিদা রয়েছে তা সরবরাহ শৃঙ্খলের পূর্ণ ক্ষমতার মাধ্যমে পূরণ করা হবে। 

তিনি সরবরাহ শৃঙ্খলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে আরো শক্তিশালী করে তোলার উপর জোর দেন যাতে সব চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়। 

এই আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী একটি বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন কোভিড সঙ্কটের মোকাবিলায় সরকারের আগের ঘোষণা ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তার সঙ্গে এই প্যাকেজ যুক্ত করলে মোট আর্থিক পরিমাণ দাঁড়াবে ২০ লক্ষ কোটি টাকা যা দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের প্রায় ১০%। আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই অর্থ ব্যয় করা হবে।  প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্যাকেজে ভূমি, শ্রমিক, ঋণ ও আইনের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে। কুটির শিল্প, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প, শ্রমিক, মধ্যবিত্ত , শিল্প সংস্থা সহ সকলের চাহিদাই এখান থেকে পূর্ণ করা হবে। তিনি বলেন আগামী কাল থেকে পর পর কয়েক দিন, অর্থমন্ত্রী এই প্যাকেজের বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন। 


দেশের দরিদ্র মানুষ, শ্রমিক, পরিযায়ী শ্রমিক সহ বিভিন্ন শ্রেণীর অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংগঠিত এবং অসংগঠিত౼ উভয় ক্ষেত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের এই প্যাকেজের মাধ্যমে ক্ষমতায়ন হবে। 

সম্প্রতী নোবেল জয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এমন কথাই বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন দেশের দরিদ্রতম জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ মানুষকে নগদ টাকা  এবং ক্ষুদ্র ঋণ মকুব করতে। এক ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সিনিয়র কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সাথে কথোপকথনে বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, দরিদ্রদের নগদ অর্থ প্রদান ব্যয় বাড়িয়ে তুলবে এবং এভাবে চাহিদা বাড়বে।

source: pib