Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

কোভিড-১৯ সংক্রমণের ক্ষেত্রে হোম আইসোলেশনের জন্য সংশোধিত নির্দেশিকা

pic credit: decan herald
home isolation

কোভিড-১৯ এ সন্দেহভাজন বা নিশ্চিত সংক্রমিত'র ক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থাপনার জন্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের গত ৭ এপ্রিল জারি করা নির্দেশিকার সঙ্গে নতুন নির্দেশিকা যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমান নির্দেশিকা অনুসারে, খুব স্বল্প/ পরিমিত বা তীব্র কোভিড-১৯ সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীদের, (i) কোভিড কেয়ার সেন্টারে (ii) কোভিড স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা (iii) কোভিড হাসপাতাল পাঠানো উচিৎ বা ভর্তি করানো দরকার। খুব স্বল্প / প্রাক-লক্ষণীয় কোভিড-১৯ সংক্রমণের ক্ষেত্রে ঘরে পৃথকভাবে থাকা বা হোম আইসোলেশনের জন্য ২৭এপ্রিল সংশোধিত নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে ।পুরোনো নির্দেশিকার পরিবর্তে নতুন এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।

তবে খুব স্বল্প / প্রাক-লক্ষণীয় কোভিড-১৯ সংক্রমিত ব্যক্তির ঘরে পৃথকভাবে থাকা বা হোম আইসোলেশনের জন্য সবরকম সুযোগ সুবিধা থাকতে হবে।

ঘরে পৃথকভাবে থাকা বা হোম আইসোলেশনের জন্য শর্ত -
ক) কোন ব্যক্তি খুব স্বল্প / প্রাক-লক্ষণীয় কোভিড-১৯ সংক্রমিত কিনা তা চিকিৎসক নির্ধারন করবেন।

খ) স্বল্প / প্রাক-লক্ষণীয় কোভিড-১৯ সংক্রমিত ব্যক্তির ঘরে পৃথকভাবে থাকা বা হোম আইসোলেশনের জন্য সবরকম সুযোগ সুবিধা থাকতে হবে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের কোয়ারিন্টিনে থাকতে হবে।

গ) একজন শুশ্রূষা প্রদানকারীকে ২৪ ঘন্টার ভিত্তিতে শুশ্রূষা প্রদানের জন্য থাকা উচিত। হোম আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তিকে সেবার সময় শুশ্রূষা প্রদানকারী এবং হাসপাতালের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রেখে চলতে হবে।

ঘ) শুশ্রূষা প্রদানকারী এবং রোগির সংস্পর্শে আসা সমস্ত লোকেদের সংক্রমণ প্রতিরোধে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ম মেনে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন গ্রহণ করা উচিত।

ঙ) মোবাইলে আরোগ্য সেতু অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে। (https://www.mygov.in/aarogya-setu - এ লিঙ্কে অ্যাপ্লিকেশন টি পাওয়া যায়) এবং এটি সর্বদা ব্লুটুথ এবং ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে সচল রাখতে হবে ।

চ) রোগীর স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখার বিষয়ে রাজি থাকতে হবে এবং নিয়মিতভাবে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে জেলাস্তরে নজরদারি অফিসারকে অবহিত করতে হবে, যাতে পর্যবেক্ষক দলগুলি বিষয়টি অনুসরণ করতে পারে।

ঝ) রোগীকে বাড়িতে পৃথকভাবে থাকা বা হোম আইসোলেশনে থাকার বিষয়ে একটি প্রতিশ্রুতিপত্র পূরণ করতে হবে এবং বাড়িতে পৃথক বা হোম কোয়ারিন্টিনে থাকার নির্দেশকা অনুসরণ মেনে চলতে হবে।

ঘরে পৃথকভাবে থাকা বা হোম আইসোলেশনের আওতায় থাকা কোন রোগীর আইসোলেশনের মেয়াদ শেষ হবে, আক্রান্ত রোগীর রোগের লক্ষণগুলি (নমুনা সংগ্রহ,প্রাক-লক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়) শুরুর দিন থেকে ১৭ দিনের মধ্যে নতুন করে রোগের লক্ষণ দেখা না দিলে এবং ১০ দিনের মধ্যে জ্বর না এলে। হোম আইসোলেশনের মেয়াদ শেষের পরে আর পরীক্ষার দরকার নেই।

যাঁরা যত্ন করবেন তাঁদের জন্য নির্দেশাবলী -

• মাস্কঃ- যিনি নির্দিষ্ট ব্যক্তির যত্ন করবেন, তিনি যখন ঐ ব্যক্তির ঘরে থাকবেন, তখন তাকে ত্রিস্তরীয় মাস্ক পড়তে হবে। ব্যবহার করার সময় মাস্ক ছোঁয়া যাবে না। মাস্কটি যদি ক্ষরণের কারণে ভিজে যায় বা নোংরা হয়ে যায়, তাহলে সেটিকে তৎক্ষনাৎ বদলে ফেলতে হবে। ব্যবহারের পর মাস্কটিকে ফেলে দিতে হবে এবং হাত ভালো করে ধুতে হবে। 

• তিনি, নিজের মুখ, নাক ছোঁবেন না।

• অসুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে হাত ভালো করে ধোওয়া নিশ্চিত করতে হবে।

• খাবার তৈরি, খাওয়ার আগে, শৌচালয় ব্যবহারের পর এবং যখনই হাত নোংরা হবে, তখনই ভালো করে হাত ধুতে হবে। হাত ধোওয়ার সময় সাবান এবং জল দিয়ে কমপক্ষে ৪০ সেকেন্ড হাত ধুতে হবে। যদি হাতে কোনো নোংরা না লাগে, তাহলে অ্যালকোহল ভিত্তিক হ্যান্ডরাব ব্যবহার করা যেতে পারে। 


• সাবান এবং জল দিয়ে হাত ধোওয়ার পর, পেপার টাওয়েল দিয়ে ভালো করে হাত শুকনো করতে হবে। তার সেটি ফেলে দিতে হবে। যদি পেপার টাওয়েল না পাওয়া যায়, তাহলে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে হাত মুছতে হবে এবং যদি সেটি ভিজে যায়, তাহলে ফেলে দিতে হবে।


• রোগীর সংস্পর্শে আসলে পর,যা যা করণীয়ঃ- রোগীর মুখের বা নাকের থেকে ক্ষরণ হওয়া তরল পদার্থ যেন সরাসরি না লাগে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রোগীকে শুশ্রষা করার সময় গ্লাভস পরে থাকতে হবে এবং তার পর সেই গ্লাভস ফেলে দিতে হবে। গ্লাভস ব্যবহারের আগে এবং পরে ভালো করে হাত ধুতে হবে। 


• রোগীর ব্যবহৃত কোনো জিনিসপত্র ছোঁয়া চলবে না। যেমন – রোগীর সঙ্গে একই সিগারেট খাওয়া যাবে না। রোগী যে বাসনে খাওয়া – দাওয়া করবে এবং বিছানার যে চাদর ব্যবহার করবে, সেটি ছোঁয়া চলবে না।


• রোগীর ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে হবে। 


• রোগী যে বাসনে খাওয়া – দাওয়া করবেন, সেগুলি গ্লাভস পরে পরিস্কার করার সময় সাবান এবং জল ব্যবহার করতে হবে। রোগীর বাসনপত্র পুনরায় ব্যবহার করা যাবে। গ্লাভস খুলে ফেলার পর এবং রোগীর ব্যবহৃত জিনিস নাড়া-চাড়া করার পর, হাত ভালো করে ধুতে হবে।


• ত্রিস্তরীয় মেডিক্যাল মাস্ক এবং একবার ব্যবহার করার গ্লাভস পরে রোগীর ব্যবহৃত জামা – কাপড়, বিছানাপত্র পরিস্কার করতে হবে। গ্লাভস পরার আগে এবং পরে হাত ভালো করে ধুতে হবে।


• যিনি রোগীর যত্ন করবেন, রোগী যেন যথাযথ নিয়মাবলী মেনে চলে সেই বিষয়ে তাকে খেয়াল রাখতে হবে যে।


• যিনি রোগীর যত্ন করবেন তিনি এবং রোগীর কাছাকাছি যারা থাকবেন, তারা সবাই নিজের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখবেন। প্রতিদিন নিজের শরীরের তাপমাত্রা মাপবেন। যদি জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টের মতো কোভিড – ১৯ সংক্রান্ত কোনো লক্ষণ দেখা যায়, তাহলে তৎক্ষনাৎ তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।

রোগীর জন্য নির্দেশাবলীঃ-

• রোগীকে সবসময় ত্রিস্তরীয় মেডিক্যাল মাস্ক পরে থাকতে হবে। ৮ ঘন্টা অন্তর মাস্ক বদলাতে হবে। যদি দেখা যায়, তার আগেই মাস্কটি ভিজে গেছে, অথবা নোংরা হয়ে গেছে, তাহলে তখনই মাস্ক বদলে ফেলতে হবে। 

• মাস্কটি ফেলে দেবার আগে ১ শতাংশ সোডিয়াম হাইপো-ক্লোরাইট দিয়ে তা সংক্রমণ মুক্ত করে বাতিল করতে হবে।

• রোগীকে নির্দিষ্ট ঘরে একা থাকতে হবে। বয়স্ক মানুষ এবং যারা উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ বা কিডনীর রোগের মত গুরুতর আসুখে ভুগছেন, তাদের থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকতে হবে। 

• রোগীকে বিশ্রাম নিতে হবে এবং প্রচুর জল খেতে হবে।

• সব সময় নিঃশ্বাস নেওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী মেনে চলতে হবে।

• ঘন ঘন সাবান এবং জল দিয়ে কমপক্ষে ৪০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে। অথবা অ্যালকোহল ভিত্তিক স্যানিটাইজার দিয়েও ঘন ঘন হাত ধোওয়া যাবে।

• রোগীর ব্যবহৃত সামগ্রী, অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না।

• রোগী যে ঘরে থাকবেন, সেই ঘরে যে সমস্ত জিনিস তিনি বেশি ছোঁবেন, যেমন – টেবিল, দরজার কড়া ইত্যাদি, সেগুলিকে ১ শতাংশ সোডিয়াম হাইপো-ক্লোরাইট মিশ্রন দিয়ে মাঝে মাঝে পরিস্কার করতে হবে। 

• রোগীকে চিকিৎসকের সব পরামর্শ মেনে চলতে হবে। 

• রোগীকে তার স্বাস্থের বিষয়ে সব সময় খেয়াল রাখতে হবে এবং তাপমাত্রা মাপতে হবে। যদি শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়, তাহলে তৎক্ষনাৎ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।




PIB থেকে সংকলিত

Ad Code