করোনা পরিস্থিতিতর জেরে সারা দেশে চলছে লক ডাউন। লক ডাউনের এই পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন অর্থনীতি ধাক্কা খাচ্ছে আবার অন‍্যদিকে পরিস্থিতির স্বীকারে ছুটে বেড়িয়েছে মানুষ। পরিযায়ী শ্রমিকের ঘরে ফেরার কাতর আর্জি ফুটে উঠেছে বারে বারে। এছাড়াও, নানান দুর্নীতি সামনে আসছে। করোনার মতো কঠিন পরিস্থিতিতে নানান সমস্যায় একাধিকবার সরব হতে দেখা গেছে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীকে।

এদিন,বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী ড. সুজন চক্রবর্তী মমতার সরকারের রাজ‍্যত্বকে কার্যত তুঘলকি শাসন ব‍্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করলেন। পাশাপাশি স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন তিনি। এদিন তিনি বলেন, "করোনা সংক্রমনের খুব কঠিন সময়ের মধ‍্যে আমরা আছি। মানুষ খুব কষ্টে, একটা ভয়ঙ্কর বিপদের মধ‍্যে আছে। সেখানে কি বাংলায় একটা তুঘলকি রাজ‍্যত্ব চলছে? দায়বদ্ধতা নেই, পরিকল্পনা নেই, কোনো স্বচ্ছতা নেই, মানুষ পারলে খাও না পারলে নাই, এক জায়গার লোক আর জায়গায় আটকে আছেন যা ইচ্ছে করো, কোনো গাইড লাইন নেই। বাইরে যারা আটকে আছেন, কে আসবে কে আসবে না, কবে আসবে তাঁর কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। পয়সা থাকলে প্লেনের থেকে বেশি ভাড়া দিয়ে আসো। কোনো হিসেব নেই, মৃত‍্যুর হিসেব নেই।অসুস্থ মানুষের চিকিৎসার বন্দোবস্ত নেই, কতজনকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হল তার কোনও হিসেব নেই। কি হচ্ছে এসব।" 

পাশাপাশি এদিন তিনি রাজ‍্য যে দুর্নীতি করছে, রাজ‍্য সরকার তা স্বীকারও করছে বলেই মন্তব‍্য করেন। সচিব বদল নিয়েও মন্তব‍্য করেন তিনি। এবিষয়ে তিনি বলেন, "সরকার এটা স্বীকার করছে। খাদ‍্য সচিব সরানো হল, কারন দুর্নীতি সামনে আসছে। স্বাস্থ‍্য দপ্তরের সচিবকেও বদল করা হল। সরকার ঘুর পথে স্বীকার করে নিতে বাধ‍্য হচ্ছে স্বাস্থ‍্য পরিষেবায় সরকার ব‍্যর্থ। তবে, এই ব‍্যর্থতা কি শুধু একজন আধিকারিকের? মন্ত্রীদের কি কোনও দায় নেই? সচিবরা কি এতই অপদার্থ, তবে মন্ত্রীরা কি করছেন, মন্ত্রীরা রেহাই পাচ্ছে কেন? গোটা রাজ‍্যটার বারোটা বাজিয়ে দেওয়া হচ্ছে।"

তিনি সরকারের ব‍্যর্থতার দায় স্বীকার করে মুখ‍্যমন্ত্রীকে সড়ে দাড়ানোরও পরামর্শ দেন। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, "মাননীয়া মুখ‍্যমন্ত্রীকে আবেদন করছি, এর থেকে খারাপ অবস্থা হতে পারে না। যদি একের পর এক বাতিল করতে হয়, সব কিছুই যদি ঢেকে রাখতে হয় তবে কিছুদিন সরে থাকেন। দলের বলিষ্ট কাউকে কিছুদিনের জন‍্য মুখ‍্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দিন। পরে ফিরে আসুন আপত্তি নেই। এই করোনা মোকাবিলার কঠিন সময়ে তুঘলকি রাজত্ব না করে সরে দাড়ান, দলের কাউকে দায়িত্ব দিন।"

স্বাস্থ‍্য দপ্তরের পরিকল্পনা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। সাথে সচিবের রদবদল নিয়েও সরব হোন। তিনি বলেন, "এর থেকে খারাপ হতে পারে না, একটা একটা কোপ মাড়বো ইত‍্যাদি ইত‍্যাদি ইত‍্যাদি। এটা খুব খারাপ হচ্ছে, অপরিকল্পনা চূড়ান্ত। হাসপাতালে কোভিড মুক্ত মানুষ যাচ্ছেন, কোভিড যুক্ত হয়ে ফিরছেন। করোনা যারা আক্রান্ত নয় তাদের চিকিৎসা বিপদে। হাহাকার হচ্ছে হাহাকার। স্বাস্থ‍্যসচিবকে যদি কোপ দিতে হয় তবে স্বাস্থ‍্যমন্ত্রী নয় কেন? এ প্রশ্ন উঠবেই। খাদ‍্যসচিবকে যদি কোপ দিতে হয় খাদ‍্য মন্ত্রী নয় কেন? এ প্রশ্ন উঠবেই।"