লকডাউনের ফলে পরিবেশের উন্নতি হয়েছে- এমন খবরে আশা জেগেছিল মানুষের মনে। পৃথিবী নিজের মতো করে নিজেকে সারিয়ে তোলার কাজ করছে। কিন্তু এক নতুন খবরে ঘুম উড়েছে বিজ্ঞানীদের।
তারা জানিয়েছেন, উত্তর মেরুতে ওজন স্তরে আবারো একটি ছোট ছিদ্র দেখা দিয়েছে। স্ট্যাটোস্ফিয়ারে তাপমাত্রা অত্যাধিক কমে যাওয়ার ফলে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ওজন স্তরের এই ছিদ্রকে তারা মিনি হোল বলছেন। উত্তর মেরুর ঠিক ওপরেই এই ছিদ্র তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি এই খবর প্রকাশ করে উদ্বেগের কথা জানিয়েছে।
THE GUARDIAN সূত্রে জানা গেছে- কোপারনিকাস সেন্টিনাল–পাইভপি স্যাটেলাইট ব্যবহার করে এই তথ্য তারা পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। ওজন স্তর পৃথিবীর জীবন রক্ষা করে। কারণ, সূর্য থেকে আগত একাধিক ক্ষতিকর রশ্মি, যার মধ্যে অতিবেগুনি রশ্মিও পড়ছে, সেগুলোকে আটকে দেয় ওজন স্তর। যার ফলে বাতাসের ভারসাম্য বজায় থাকে।
ওজোন স্তর (Ozone layer) হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের একটি স্তর যেখানে তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজোন গ্যাস থাকে। এই স্তর থাকে প্রধানতঃ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিচের অংশে, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে কমবেশি ২০-৩০ কিমি উপরে অবস্থিত। এই স্তরের পুরুত্ব স্থানভেদে এবং মৌসুমভেদে কমবেশি হয়। ওজোনস্তরে ওজোনের ঘনত্ব খুবই কম হলেও জীবনের জন্যে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি এটি শোষণ করে নেয়। ওজোন স্তর সূর্যের ক্ষতিকর মধ্যম মাত্রার(তরঙ্গদৈর্ঘ্যের) শতকরা ৯৭-৯৯ অংশই শোষণ করে নেয়, যা কিনা ভূ-পৃষ্ঠে অবস্থানরত উদ্ভাসিত জীবনসমূহের সমূহ ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম। মধ্যম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সূর্যের এই অতিবেগুণী রশ্মি মানব দেহের ত্বক এমনকি হাড়ের ক্যান্সার সহ অন্যান্য মারাত্মক ব্যাধি সৃষ্টিতে সমর্থ। এই ক্ষতিকর রশ্মি পৃথিবীর জীবজগতের সকল প্রাণের প্রতি তীব্র হুমকি স্বরূপ। বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তর প্রতিনিয়তই এই মারাত্নক ক্ষতিকর অতিবেগুণী রশ্নিগুলোকে প্রতিহত করে পৃথিবীর প্রাণিকুলকে রক্ষা করছে।
ওজোন স্তরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ভূমিকার জন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ওজোন লেয়ার সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে সেপ্টেম্বরের ১৬ তারিখটি মনোনীত করেছে।
Social Plugin