আমাদের ঢিলে ঢালা চলন , সংস্কার ! করোনা বলছে সচেতন হতে
শুভাশিস দাশ
বিশ্বের বৃহৎ গনতান্ত্রিক দেশ আমাদের এই ভারতবর্ষ । বিশাল জনগোষ্ঠী নিয়ে এই ভারত ।
এই মুহুর্তে আমরা এক ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন । যে কারণে আজ সবাই চিন্তিত । এক সংকটময় মুহূর্তে আমরা উপনীত । এমন এক মারণ ব্যাধি আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে তাতে আগামীতে কী দাঁড়াবে তা বলা কঠিন তবে এটা বলা যায় নিরবিচ্ছিন্ন স্বচ্ছতা এবং নির্মলতা আমাদের কে ভয়ঙ্কর সময় থেকে উতরে দেবে ।
স্বচ্ছ ভারত কিংবা নির্মল বাংলা ডাকের মধ্যে কতটা বিজ্ঞান ছিল আজ নিন্দুকেরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে । স্কুল গুলোতে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে খেতে হবে এই মন্ত্র আজ অক্ষরে অক্ষরে কতটা সত্যি হয়ে দাঁড়িয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না । এই সচেতনা আজ বড্ড জরুরী হয়ে দেখা দিয়েছে আমাদের দেশে । আমরা এখনও চলছি সেই ঢিমা তালে আমাদের অন্তরের সংস্কার কে প্রশ্রয় দিয়ে ।
করোনা আতংক বিশ্বের সাথে সাথে আমাদের দেশেও থাবা বসিয়েছে । বিশ্বের ১২৮ দেশে এই মুহুর্তে প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষ আক্রান্ত । মৃত্যুর হারও বেড়ে চলেছে সমান তালে । আতংকিত মানুষ জন । আমাদের দেশের মানুষও আজ আক্রান্ত ।
সারা বিশ্বের চিকিত্সা বিজ্ঞান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এই মারণ রোগের প্রতিষেধক তৈরি করার । হাজার হাজার স্বাস্থ্য কর্মী তাঁদের জীবন বাজী রেখে দিনরাত করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবায় নিয়োজিত আছেন ।
এই দুঃসময়ে আমাদের চারপাশে এখনও অন্ধ সংস্কারের মানুষজন তাঁদের নিজস্ব মুনশিয়ানা দেখাতে তৎপর । সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে চলছে পুজো পাঠ , নামাজ ইত্যাদি । এই জন্য বললাম দেখছি এখনো অনেকের বাড়িতে পুজো উপলক্ষে মানুষের জমায়েত । গাঁ গঞ্জের অনেক মসজিদে শুক্রবারের নামাজে জমায়েত ।
বাড়িতে বসে কেউ পুজো করলে বা একা নামাজ পড়লে কিছু বলার ছিল না ।
এই দুঃসময়ে দেশের সরকার জনতা কারফিউ জারি করেছেন । একদিনের জনতা কারফিউ র পর আবার লক ডাউন ঘোষণা হয়েছে সারা দেশে । স্বাস্থ্য সংস্থার কর্তারা বলছেন এই করোনা ভাইরাস বারো ঘণ্টার বেশী বাঁচে না এবং মানব দেহে এর সংক্রমণ হয় কাজেই আমরা যদি এই সময়ে নিজেরা বিচ্ছিন্ন থাকি তবে মহামারী রোধ হবেই ।
করোনা ভাইরাস ঠেকাতে দেখা যাচ্ছে গাঁ গঞ্জে অনেক মায়েরা বাড়ির সামনে সন্ধ্যে হলেই প্রদীপ জ্বালছে , উপোস করছেন , কেউ কোরান কে টানছেন কিন্তু আসল কাজটি তাঁরা করছেন কি ?
ধর্মীয় গোরামী এবং অবৈজ্ঞানিক মানসিকতার উর্ধে উঠে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এই মারণ ব্যাধির প্রতিরোধের লড়াই এ । বিজ্ঞান সম্মত নিয়ম মেনে আমাদের উচিত নিজে সচেতন হয়ে অন্যকে সচেতন করা । মনে রাখতে হবে মানুষ আপন হলেও রোগ কিন্তু আপন নয় ।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এসময় অবশ্যই খাওয়া খাদ্যের উপর জোড় দিতে হবে । মনে রাখতে হবে শরীরের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে গেলে শুধু করোনা নয় যে কোন ভাইরাস অনায়াসে কাবু হতে বাধ্য ।
স্যোসাল মিডিয়ায় কিংবা কাগজে বার বার সতর্ক করে বলা হচ্ছে ভালো করে হাত ধুয়ে নিন , হাঁচি কাশি হলে মুখে রুমাল অথবা কনুই দিয়ে মুখ নাক ঢাকুণ আর সুষম আহার গ্রহণ করুণ ।
আমাদের কোটি কোটি মানুষের দেশে করোনা ভাইরাস যদি মহামারীর আকার ধারণ করে তবে সরকারের কিচ্ছু করার থাকবে না । কেননা আমাদের দেশের সেই পরিকাঠামো নেই । কাজে নিজেদের স্বার্থে দেশের কথা ভেবে আসুন আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করি ।
এর আগেও অনেক মারণ ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে , ঘটেছে প্রাণ হানিও । বিজ্ঞান চেষ্টা করে তা দূরে সরিয়ে দিয়েছে । বিজ্ঞানের এই অগ্রগতির যুগে আমরা আশা করতেই পারি কটা দিন আমরা সংযত হলে রোগের চেন টা ছিন্ন হবে আর এই সময়ের মধ্যেই হয়তো আমরা শুনব এই করোনা ভাইরাসের অষুধ আবিষ্কার হয়ে গেছে । তবে সেইদিন বেশী দূরে নয় । শুধু সময়ের অপেক্ষা ।
আমাদের প্রধান মন্ত্রী এবং মুখ্য মন্ত্রী ঝাঁপিয়ে পড়েছেন করোনা মোকাবেলা করতে । আমাদের এই সময় ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে ।
আর এই সময়ের মধ্যে রাজনীতি থাক রাজনীতির জায়গায় । মানবিকতার স্পর্শে আমরা সুচি হই এই দূষিত সময়ে । ধর্ম নয় , জাতি নয় কোন বর্ণ নয় কেবল দেশবাসী , আমাদের ভারতবর্ষের মানুষদের কথা ভাবি , একদিন অবশ্যই আবার সুন্দর সকাল আমরা দেখবো সেদিন দূরে নয় ।
Social Plugin