আমাদের ফেসবুক পেজে যুক্ত হতে এখানে ক্লিক করুন

এখন পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী গ্রেপ্তার হওয়া শয়ে শয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের নিঃশর্তে মুক্তি দিয়েছে বিধাননগরের বিভিন্ন থানা।
তবে কোন কারণ ছাড়াই কেবল শিক্ষক হওয়ার কারণে করুনাময়ী বাসস্টান্ডে বাস থেকে নামতেই গ্রেপ্তার হতে হয়েছে,এমনকি আন্দোলন বা মিছিলে যোগ না দেওয়া সত্ত্বেও গ্রেপ্তার হতে হয়েছে একজন অপরাধীর মতো-এমনি অভিযোগে ক্ষোভে ফুঁসছে শিক্ষক মহল।

তাদের দাবী পুলিসের পক্ষ থেকে তাদের 'অবৈধ মানুষ' বলা হয়েছে। এই ঘটনায় শুধু প্রাথমিক শিক্ষকের নয় অন্যান্য শিক্ষক- শিক্ষিকাদেরও বিনা কারণে গ্রেপ্তার হতে হয়েছে বলে জানা গেছে। কারণ করুনাময়ী বাসস্টান্ডের পাশেই BGTA এর গ্রাজুয়েট শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি অবস্থান ছিল।প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙগে গ্রাজুয়েট শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। 
শিক্ষক অনুপ সাহু 

এই ঘটনায় সমগ্র শিক্ষক মহলে নিন্দার ঝড় উঠে যায়। সামগ্রিক ঘটনার ব্যাপারে UUPTWA এর গুরুত্ত্বপূর্ণ সদস্য অনুপ সাহুর সঙগে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন এই ঘটনাটির জন্য ১১ ই ফেব্রুয়ারি শিক্ষক সমাজের কাছে একটা  'কালো দিন' হিসাবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। তিনি আরও বলেন এই ঘটনা প্রমাণ করে পশ্চিমবঙগে কোন গণতন্ত্র নেই। এখানে যদি কারও সঙগে কোন অন্যায় হয় তবে তিনি কি কারও কাছে  সুবিচার চাইতে যেতে পারেন না? তিনি আরও বলেন গত একদশক ধরে এ রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা বঞ্চিত,গত দুবছর ধরে তারা নানা আন্দোলন করে আসছেন।মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন তাদের বঞ্চনার অবসান করবেন।কিন্তু সেটা হয়নি,তাইতো তারা শান্তিপূর্ণভাবে ডেপুটেশান দিতে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে যেতে চাইছিলেন।কিন্তু মিছিল শুরুও হলোনা তাই  তাদের তরফ থেকে কোন প্ররোচনা সৃষ্টি হবার প্রশ্নই ওঠে না,তাহলে কেন তাদের গ্রেপ্তার করে থানার লকআপে নিয়ে যাওয়া হলো? তাহলে কি পঃবঃ এর সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার বলে কিছু থাকবে না? তাই তাদের সেই গনতান্ত্রিক আধিকার হরণ করা হচ্ছে বলে তিনি দাবী করেন।
এই ঘটনার নিন্দায় গতকাল  শিক্ষকরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সংসদে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বা আজও বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ  কর্মসূচী নিয়েছেন।

আগামী দিনের পরিকল্পনা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে অনুপ সাহু জানালেন "আমরা অনেকদিন ধরে অনেক কঠোর পরিশ্রম করে,নিজেদের নানা স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে সবাইকে নিয়ে একত্রিত হতে পেরেছি গণতান্ত্রিক ভাবে লড়াই আন্দোলন করব বলে। আমাদের একটাই লক্ষ্য সেটা পশ্চিমবঙগের প্রায় ১ লক্ষ ৮৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকদের একদশক ধরে চলে আসা বঞ্চনা মেটানো।তাই এতো সহজে হাল ছাড়ার পাত্র আমরা নই বরং আগামীদিনে আরো বড় লড়াই আন্দোলনের মাধ্যমে শিক্ষকদের বঞ্চনা মেটাতে তারা হাজির হবেন। কারণ যতদিন যাচ্ছে আমাদের পাশে হাজার হাজার শিক্ষক- শিক্ষিকা এসে দাঁড়াচ্ছেন,সমর্থন জানাচ্ছেন।আমরা খুবই আশাবাদী সরকার অতি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করবেন কারণ আইনত আমরা আমাদের নায্য বেতন পাবার সম্পূর্ণ অধিকারী। তিনি মাননীয় মন্ত্রীর কাছে  আবার আবেদন করছেন তিনি যেন অবিলম্বে এই বঞ্চনা মেটানোর ব্যাবস্থা করে লক্ষ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক- শিক্ষিকার মুখে হাসি ফোটান ও তাদের সন্মান ফিরে পেতে  সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
সংগঠনের সভাপতি সন্দীপ ঘোষ জানিয়েছেন 
"শিয়ালদহ উত্তর শাখায় বহু দুরপাল্লা,লোকাল ট্রেন কার্যত বাতিল তাই নদীয়া, মুর্শিদাবাদ,উঃ২৪ পরগণা থেকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকা  আসতে পারেননি, তা সত্ত্বেও আমাদের আজকের কর্মসূচীতে প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছিলেন, তারা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন।আমাদের সুস্থভাবে যদি মিছিল ও ডেপুটেশানটি করতে দেওয়া হতো তাহলে আরো বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকা এসে উপস্থিত হতেন।
তিনি আরো বলেন যারা ভাবছিলেন UUPTWA ঝিমিয়ে পড়েছে এটা তাদের জানান দেওয়া যে পশ্চিম বঙগের লক্ষ-লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বঞ্চনার অবসান না হলে UUPTWA সংগঠনটি হাল ছেড়ে দেবে না।
তিনি আরো বলেন যে সরকার যদি ভেবে নেয় UUPTWA সংগঠন আর কোন লড়াই,আন্দোলন করবে না তাহলে তারা ভুল ভেবেছেন।তিনি আশা প্রকাশ করেন যে সরকার তাদের বঞ্চনার ইতি টানুক ও হৃত সম্মান ফিরিয়ে দিক।নতুবা আবার নতুন রণ কৌশলে UUPTWA সংগ্রাম, আন্দোলনে রাস্তায় নামবে।


         এখন দেখার আগামিদিনে আন্দোলনের নতুন কি ডালি সাজিয়ে UUPTWA সংগঠন মাঠে নেমে লড়াই,সংগ্রামে ফিরে আসেন,অবশ্য সেটা সময়ই বলবে।


নিয়মিত আপডেট পেতে নজর রাখুন আমাদের ফেসবুক পেজে -