দিনহাটা কলেজের ছাত্রছাত্রীরা সেমিস্টার ফি কমানোর দাবিতে দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন করে আসছে। দিনহাটা কলেজের ছাত্র- শুভজিত দাস, ভৌমিতা বর্মন, সঞ্জীব কর্মকাররা জানায়- "ছাত্রদের কাছে কলেজ অযৌক্তিক ভাবে অতিরিক্তি পরিমানে সেমিস্টার ফী নিচ্ছে। আমরা বার বার জানিয়েছি এসেছি ছাত্রদের অভিযোগ শুনে আলোচনার মাধ্যমে  সেমিস্টার ফী কমানো হোক। কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের সাথে কোনো আলোচনা করতে রাজি হননি।" 

জানা গেছে গত 29 শে মে, 2019 থেকে সেমিস্টার ফী কমানোর জন্য আবেদন করে আসছে কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। তাতে কোনো কাজ না হওয়ায় গত 24 শে জুলাই, 2019 দ্বিতীয় বার অধ্যক্ষের কাছে সেমিস্টার ফী কমানোর জন্য আবেদন করে ছাত্র-ছাত্রীরা। এর পর আবার  7  আগস্ট , 2019 তারিখে কলেজ গেটের সামনে প্রতিকী অবস্থান ও দাবি সনদ পেশ করে তারা।

তারপর 16ই আগস্ট , 2019 অধ্যক্ষের কক্ষের সামনে অনির্দিষ্ট কালের অবস্থানে বসে। সেদিন রাত্রি 2 টা নাগাদ অধ্যক্ষের কাছ থেকে আলোচনার আশ্বাস পেয়ে অবস্থান তুলে নেয়। কিন্তু তার পরেও  দীর্ঘ 6 মাসেও কোনো আলোচনায় না বসায় গত 27/01/2020 তারিখ ছাত্ররা ক্লাস বয়কট করে অবস্থানে বসে এবং প্রবল শৈত্যপ্রবাহকে উপেক্ষা করে সারারাত ধরে অবস্থান চালিয়ে যায়। 

শুভজিত দাস জানিয়েছে- "পরের দিন অর্থাৎ 28/01/2020 তারিখ দুপুর 3 টায় প্রিন্সিপাল মহাশয় আমাদের কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার আশ্বাস দেন। কিন্তু পরে দেখা যায় প্রিন্সিপাল মহাশয় গত 01/02/2020 তারিখ রবিবার দিনহাটা পৌরভবনে দুজন আন্দোলনকারীকে আলোচনাসভায় ডাকেন। ফলত ক্ষোভে ছাত্র-ছাত্রীরা সেই মিটিং বয়কট করেন। আমরা চাই কলেজের আলোচনা কলেজেই হোক। এর পর স্যারের কাছে অনুরোধ করেও আমরা আলোচনায় বসার কোনো তারিখ পাই নি। ছাত্র ছাত্রীরা 17 দিন ধরে ক্লাস বয়কট করে। 12 ই ফেব্রুয়ারি , 2019 আমরা আবার অধ্যক্ষ মহাশয়কে কক্ষে না পেয়ে টিচার্স কমন রুমে অবস্থানে বসি। সেখানে কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতির মদতে আমাদের ওপর আবার হামলা হয়। সেদিন সন্ধেবেলা আবার আশ্বাস পাই 15 ই ফেব্রুয়ারি এর আগে আলোচনার কথা জানানো হবে।   ক্লাসের সমস্যার জন্য 13 ই ফেব্রুয়ারি, 2019 ছাত্র ছাত্রীরা আবার ক্লাসে ফিরে যাই। কিন্তু আজ 15 ফেব্রুয়ারি অধ্যক্ষ মহাশয়ের কাছে গেলেও জানতে পারি আলোচনার কোনো সদিচ্ছা দেখাচ্ছে না কলেজ কর্তৃপক্ষ। 15 ই ফেব্রুয়ারি আজই কলেজে ভর্তির শেষ তারিখ। ফলত আমরা ছাত্ররা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেই যে আমাদের কথা জানানোর জন্য আমরা মহামান্য আদালতের দ্বারস্থ হবো।" 

ছাত্র - ছাত্রীরা  মূলত যে দাবী গুলো নিয়ে আদলতের দারস্থ হতে চলেছে তা নিম্নরূপ-

1. এডমিশন ফী 200 টাকা নেওয়ার পরেও , 100 টাকা রি-এডমিশন ফী নেওয়া হচ্ছে কেন? 
2. এক্সাম এর সময় এক্সাম ফী নিয়েও কেন সেমিস্টার ফী তে আলাদা করে এক্সাম ফী নেওয়া হচ্ছে।
3. Placement cell and capacity development fees 25 টাকা নেওয়া হচ্ছে। যার সুবিধা কি পাচ্ছি জানা নেই। এটা বাতিল করা হোক।
4. College automation fee ও it, sms and communication service fee 2 টি মিলে একটা করা হোক। একই নামে 2 বার টাকা নেওয়া হচ্ছে।
5. এতো কিছুর ফী নেওয়ার পরেও কেন  miscellaneous fees নেওয়া হচ্ছে। এটা কোথায় যাচ্ছে।
6.ক্যাম্পাসে ছাত্র ছাত্রীরা পড়াশোনা করতে আসে সেখানে  security fees  কেন নেওয়া হচ্ছে? 
7. Laboratory এর নামে 3 থেকে 4 বার টাকা নেওয়া হচ্ছে। এতো টাকা কেন?
8.ছাত্র ছাত্রীদের কাছে seminar fees  কেন নেওয়া হচ্ছে? এটা ছাত্র ছাত্রীদের দেওয়ার কথা না।