রাজ্যের প্রতিটি মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতে স্টাফ প্যাটার্ন নিয়ে এক অভূতপূর্ব আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ বিভিন্ন প্রশ্ন করছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কে, তার কোন সঠিক উত্তর মিলছে না। এত দ্রুত স্টাফ প্যাটার্ন জমা দিতে গিয়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বিশৃংখলাও তৈরী হচ্ছে ।
আজ ALL POST GRADUATE TEACHERS' WELFARE ASSOCIATION (রাজ্যের প্রত্যেক জেলার বিভিন্ন সরকার পােষিত বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা এর Hons/PG শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন) এর পক্ষ থেকে - Hons/PG শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পেশাগত কিছু দাবি, শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীদের রােপা 2019 দ্রুত প্রকাশের জন্য ও স্টাফ প্যাটার্ন সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনামার কিছু অসংগতির ওপর শিক্ষামন্ত্রীর মানবিক দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এবং প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দাবীপত্র পেশ করেন বিকাশ ভবনে।
সংগঠনের মূলদাবী গুলি একনজরে-
1) 1.1.16 থেকে পিজিটি স্কেল দিতে হবে। 47600-151100 এই বেতনক্রম চালু করতে হবে। এই বেতনক্রমে উন্নীত করার জন্য পিজি টিচারদের ফিটমেন্ট ফেক্টর 2.67 চালু করতে হবে।
2) সরকারি কর্মচারীদের মতো 8,16,25 বছরে Career Advancement Scheme এর সুবিধা প্রদান করতে হবে।
3) অর্থ দপ্তর থেকে সরকারী কর্মচারী ও সরকারী বিদ্যালয়গুলির টিচারদের জন্য CAS সহ রোপা- 2019 বিষয়ক নোটিফিকেশন বের হলেও, শিক্ষা দপ্তর GOVT. SPONSORED এবং GOVT. AIDED স্কুলগুলির জন্য এখনও নোটিফিকেশন প্রকাশ করেনি। দ্রুত এই নোটিফিকেশন প্রকাশ করতে হবে। অবসরকালীন সুবিধা -এর যাতে কোনো ক্ষতি না হয় এবং পে প্রটেকশন বিষয় সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করার দাবি জানাই। মহামান্য High Court ও SAT এর রায় মেনে বকেয়া D.A প্রদান করে এরিয়ার সহ ROPA-2019 চালু করতে হবে।
4) " Control of Expenditure act 2005" সংশোধন করে শিক্ষকদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ দিতে হবে। অনার্স শিক্ষকদের পিজি করার জন্য ডিআই এর প্রাক অনুমোদনের নিয়ম বাতিল করতে হবে এবং পিজি ডিগ্রী লাভের পর পিজি স্কেল দিতে হবে। Ph.D, M.Phil ও M.Ed ডিগ্রি অর্জনকারী টিচারদেরকে প্রাপ্য ইনক্রিমেন্ট প্রদান করতে হবে।
5) পিজি পোষ্টের সংখ্যা বৃদ্ধি করে General Transfer এর মাধ্যমে তা পূরন করতে হবে।পিজি পোস্টে অস্থায়ী টিচার নিয়োগ চলবে না।
6) সরকারী কর্মচারীদের মতো WBHS, E.L,L.T.C,H.T.C রোপা-2019 এর সাথেই চালু করতে হবে।
7) সমস্ত ইচ্ছুক টিচারদেরকে অতিসত্বর মিউচুয়াল ও জেনারেল ট্রান্সফার এর ব্যবস্থা করতে হবে। আবেদনের ভিত্তিতে ইচ্ছুক জুনিয়র হাইস্কুলের টিচারদেরকে মাধ্যমিক/ উচ্চ মাধ্যমিক হাইস্কুলে ট্রান্সফার করতে হবে। স্পেশাল ট্রান্সফার এর ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতে হবে।
8) Paternity leave এর উর্দ্ধসীমা 180 দিন করতে হবে।
9) অবসরের বয়সসীমা 65 বছর করতে হবে।
10) 2016 এর আগে নিযুক্ত যে সকল শিক্ষক-শিক্ষ্কাদের স্নাতক বা স্নাতকোত্তরে 50% নম্বর না থাকার কারনে B.Ed ডিগ্রি নেই তাদের B.Ed করার সুযোগ দিতে হবে।
11) Staff Pattern: শিক্ষা দপ্তরের দ্বারা প্রকাশিত দুটি সাম্প্রতিক নির্দেশিকা (Memo No- 214-SSE/19 Dated 16.09.19 এবং Memo No- 247-SSE/19 Dated 31.10.19) তে যেসকল অসঙ্গতি দেখা গিয়েছে তা হল-
a) নির্দেশিকাতে secondary section এ সিনিয়র টিচারদের রাখতে বলা হয়েছে কিন্তু 'সিনিয়রিটি'র কোনো ব্যাখ্যা বা সংজ্ঞা নেই।
b) SSC ACT 1997 এবং SSC ACT 2016 তে উচ্চ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক এই বিভাজনের কথা উল্লেখ নেই। একারনে স্টাফ প্যাটার্ন এর নির্দেশিকা, 2016 এর আগে নিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর প্রয়োগ করা সঙ্গত নয়। তাই, 2016 সালের আগে নিযুক্ত টিচারদের উচ্চ প্রাথমিক এ পরিবর্তন ও APPROVAL সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করে স্টাফ প্যাটার্ন কার্যকর করতে হবে।
c) এই নির্দেশিকা দুটি বলবৎ করতে গিয়ে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শারীর শিক্ষা বিভাগ থাকা সত্ত্বেও উক্ত শিক্ষকদের অজ্ঞাত কারণে উচ্চ প্রাথমিক বিভাগে দেখাতে বাধ্য হচ্ছেন।
d) Hons/PG শিক্ষকদের উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিভাগে যেভাবে রাখা হচ্ছে তার ফলে পরবর্তীকালে উক্ত শিক্ষকদের Mutual Transfer, General Transfer ও Special Transfer এর সুযোগ একেবারেই কমে যাবে বলে মনে করি।
e) Staff Pattern এ যে সকল শিক্ষকদের Surplus হিসেবে দেখানো হচ্ছে তাদের অন্যত্র বদলি করা হবে না - এ বিষয়ে কোন স্পষ্ট বক্তব্য নেই।
f) এখনো পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা কাজে নিযুক্ত হওয়ার সময় নিজের পছন্দমত বিদ্যালয় এ যোগদান করে থাকেন। বিভিন্ন শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজের পছন্দের স্কুল নিতে গিয়ে Normal Section এ যুক্ত হয়েছিলেন। বর্তমানে এই নির্দেশিকা পালন করতে গিয়ে- তাদেরকে অনেক ক্ষেত্রেই আপার প্রাইমারি বা সেকেন্ডারি তে রাখতে হচ্ছে। তাদের ভবিষ্যতে বাধ্যতামূলক অন্য স্কুলে ট্রান্সফার করা হবে না, এ বিষয়ে কোন প্রতিশ্রুতি নেই।
g) Staff Pattern এর কাজ করতে গিয়ে, এক বিষয়ে নিযুক্ত শিক্ষককে অন্য বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এছাড়াও, বিষয়-গ্রুপের ও পরিবর্তন করা হচ্ছে ফলে ভবিষ্যতে সমস্যা জটিল আকার নিতে পারে। পূর্বে ঘটে যাওয়া দাড়িভিট কান্ড এখনো আমাদের কষ্ট দেয়।
h) বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন কাঠামোর কোনো পরিবর্তন না হলেও, আগামী Pay commission এর পরবর্তী pay commission এ বেতন কাঠামোর কোনরূপ পরিবর্তন হবে না - তা উল্লেখ নেই। তাই নির্দেশিকা বলবৎ করার পূর্বে, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের Pay-protection এর ব্যবস্থা করা উচিত বলে মনে হয়।
i) Normal Section এ নিযুক্ত Hons/ PG শিক্ষকরা যারা উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগে পাঠদান করেন, তাদের উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগে যুক্ত করার অনুমতি প্রদান করতে হবে। এক্ষেত্রে সিনিয়রিটি না দেখে, Pass Graduate শিক্ষকদের বদলে Hons/ PG শিক্ষকদের পাঠদানে জন্য যুক্ত হওয়ার সুযোগ দিতে হবে, না হলে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পঠন-পাঠনের মানদন্ডের অবনমন ঘটবে। Hons/ PG শিক্ষকদের অবসর গ্রহণের পর vacancy টি Hons/ PG এর জন্য রাখতে হবে।
j) বিভিন্ন স্কুলে নর্মাল সেকশনে নিযুক্ত উদ্বৃত্ত টিচারদের ভবিষ্যতে কি হবে তার সুস্পষ্ট নির্দেশিকা ছাড়া Staff Pattern চালু করা যাবে না। এই সকল বাড়তি শিক্ষক শিক্ষিকাদের ভবিষ্যতে যেকোন ধরণের ট্রান্সফার এর আওতায় ফেলবে না তার কোন সঠিক নিশ্চয়তা নাই।
রাজ্যকমিটির সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র শ্রীমতি বৈশাখী সাহা সংবাদ একলব্য'কে জানান- " সংগঠনের পক্ষথেকে প্রথমবারের মতন দাবীপত্র পেশ করা হলো। আগামীতে আমাদের পোস্টগ্র্যাজুয়েট সংগঠনকে আরও অনেক কাজ করতে হবে।''
প্রত্যেক অনার্স ও পোস্ট গ্রাজুয়েট টিচারকে তিনি এগিয়ে এসে তাদের সমস্যার কথা সংগঠনে জানানোর আহ্বান করেন এবং সংগঠনকে মজবুত করার লক্ষ্যে সকলকে একত্রিত হতে বার্তা দেন।
নিয়মিত আপডেট পেতে নজর রাখুন আমাদের ফেসবুক পেজে -
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊