সংবাদ একলব্যঃ

"শাশ্বতোহয়ং পুরাণো ন হন্যতে হন্যমানে শরীরে"। কঠোপনিষদের উদ্ধৃত শ্লোকে বলা হয়েছে আমাদের শরীর তুচ্ছ। আত্মাই অবিনশ্বর। মহাভারতের নৃপতি অর্জুন "প্রতিজ্ঞাং ষণ্ঢ কোহস্মীতি করিষ্যমি মহীপতে।" অর্থাৎ তৃতীয় লিঙ্গ বৃহন্নলা রূপে বিরাট রাজ্যে আবির্ভুত ও সমাদৃত হয়েছিলেন। আর আজকের তৃতীয় লিঙ্গের নৃপতি অনিকেত সমাজ সেবার এক অনন্য নজির স্থাপন করলেন।

অনিকেত একজন মডেল ও টলিউডের অভিনেতা। সম্প্রতি তিনি ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশন দ্বারা ন্যাশানাল পেজেন্টে বাংলাকে গর্বিত করেছেন। সর্বভারতীয় তৃতীয় লিঙ্গের প্রতিনিধিত্ব করে 🌈 crown জয় করেছেন। বর্তমানে তিনি LGBTQ কমিউনিটি হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে সামাজিক কাজে নিয়োজিত। তৃতীয় লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে তিনি একটি ফিল্মও পরিচালনা করছেন। তাতে তিনি নিজেও অভিনয় করছেন বলে জানান আমাদের সংবাদ প্রতিনিধিকে।

এতো কিছুর পরেও বিশ্ব শান্তি ও মানবতার আদর্শে বিশ্বাসী অনিকেত ও তার সংস্থা "কাত্যায়নী" চলে যান  ফুটপাতে বসবাসকারী শিশু দের হাতে বই,খাতা,খাবার তুলে দিতে। অনেকটা সময় ধরে চলে তাদের সুখ-দুঃখের আদানপ্রদান।

দীপান্বিতার আলো যেখানে ব্রাত্য সেখানে আলো জালানোই অনিকেত এর ব্রত। মাদার টেরিজা আর গান্ধীজীর আদর্শে বিশ্বাসী অনিকেত চান শুধুমাত্র ধর্ম, জাতি, বা নারী- পুরুষ লিঙ্গভেদে মনুষ্যত্বের বিচার না করে মানুষকে তার যোগ্যতার নিরিখেই বিচার করা উচিত। অনিকেত একজন সমকামী পুরুষ, তিনি সগর্বে বলেন তার মতো আরো যে সকল মানুষ সমাজে বাস করেন, তারা যেন সমাজের অন্য সবার মতোই সমানাধিকার পান। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা কোনো অংশে পিছিয়ে নেই তাই তারা কোনো সহানুভূতি চায় না। এটা তারা বেশ গর্বের সাথে বলতে পারেন।
সেই কারনেই অনিকেত চলে গিয়েছিলেন দমদম ক্যান্টনমেন্টের স্ট্রীট চিলন্ড্রেন  সোসাইটি ‘হেল্প-র পাশে দাঁড়াতে। সেই সব বাচ্চাদের পাশে, যাদের দিনযাপন হয় রাস্তায় ভিক্ষাবৃত্তি করে। তাদের হাতে তুলে দেওয়া হল বই, খাতা, খাবার এবং জামাকাপড়। অনিকেত তার সাথে পেয়েছিলেন তার  "কাত্যায়নী "এলজিবিটিকিউ কমিউনিটির সদস্য বন্ধুদের।
তাদের উদ্যোগ এই প্রথম নয়, এর আগেও তারা এরকমই অনেক সমাজসেবামূলক দৃষ্টান্ত রেখেছেন। ভবিষ্যতে তাদের আরো অনেক এরকম কর্মসূচী রয়েছে বলে জানিয়েছেন।

সংবাদ একলব্য কাত্যায়নী দলের এইরকম উদ্যোগকে কুর্ণিশ জানায়।