Putin India Visit: রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন ভারত সফরে আসছেন
২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরু হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন ভারত সফরে আসছেন। ৪-৫ ডিসেম্বরের এই সফর বিশ্বজুড়ে নজর কেড়েছে এবং ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এই সফর কেবল কূটনৈতিক সৌজন্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, এবং জ্বালানি ক্ষেত্রে গভীর সহযোগিতার নতুন অধ্যায় শুরু হতে পারে।
রাশিয়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে সীমিত বাণিজ্য অংশীদার খুঁজছে, যেখানে ভারত তার অন্যতম প্রধান অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ভারত রাশিয়ার তেল ও অন্যান্য পণ্য আমদানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে দৃঢ় করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ৫০% শুল্ক আরোপ সত্ত্বেও ভারত-রাশিয়া বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে, যা এই সম্পর্কের গভীরতা ও স্থায়িত্বের প্রমাণ।
পুতিনের সফরের সময় একটি নতুন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে, যার লক্ষ্য আগামী পাঁচ বছরে বাণিজ্য পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা। এই চুক্তি দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং নতুন শিল্প ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করবে।
রাশিয়া ডলারের ব্যবহার বাদ দিয়ে রুপি-রুবেল ভিত্তিক লেনদেন ব্যবস্থা চালু করতে চায়, যা তেল ছাড়া অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে আর্থিক লেনদেন সহজতর ও নিরাপদ হবে। পুতিন নয়াদিল্লিতে ভারত-রাশিয়া ব্যবসায়িক ফোরামে অংশ নেবেন, যেখানে শিল্প সহযোগিতা ও প্রযুক্তি উন্নয়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
রাশিয়া থেকে তেল আমদানিতে ভারতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হলো মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও অতিরিক্ত শুল্ক। রোসনেফ্ট ও গ্যাজপ্রোমনেফ্টের কর্মকর্তারা এই সফরে অংশ নেবেন, যারা নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন। ভারত আশা করছে যে এই সফরের মাধ্যমে রাশিয়া তেল ক্রয় সম্পর্কিত উদ্বেগ দূর করবে এবং আমদানিতে সহায়তা করবে।
ভারত সরকার ONGC বিদেশ লিমিটেডকে রাশিয়ার সাখালিন-১ প্রকল্পে ২০% অংশীদারিত্বের প্রস্তাব দিতে পারে, যা ভারত-রাশিয়া জ্বালানি সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ভারত তার জ্বালানি নিরাপত্তা বাড়াতে পারবে এবং রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
পুতিনের ভারত সফর কেবল কূটনৈতিক সৌজন্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি ক্ষেত্রে বাস্তব সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে। এই সফর ভারত-রাশিয়া সম্পর্ককে আরও গভীর ও বহুমাত্রিক করে তুলবে, যা ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊