দুর্গা অঙ্গনের শিলান্যাস, বাংলার উৎসবকে সারাবছরের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করে তুলতে মমতার উদ্যোগ
কলকাতা, ডিসেম্বর ২০২৫:
বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো এবার আর কেবল শরৎকালের চারদিনে সীমাবদ্ধ থাকবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিউটাউনে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্গা অঙ্গনের শিলান্যাস করে ঘোষণা করলেন, সারাবছর ধরে দেবী দুর্গার পূজা ও দর্শন সম্ভব হবে। ইউনেস্কো দুর্গাপুজোকে ‘কালচারাল হেরিটেজ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, সেই সম্মানেই এই অঙ্গন গড়ে তোলা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।” বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, তিনি নির্বাচনের আগে হিন্দুত্বে জোর দিচ্ছেন। তার জবাবে মমতা স্পষ্ট করে দেন, দুর্গা অঙ্গন কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, বরং বাংলার সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতার প্রতীক। তাঁর বক্তব্যে প্রতিফলিত হয় উৎসবকে ঐতিহ্যে রূপান্তরিত করার প্রয়াস।
প্রায় ১৭.২৮ একর জমিতে গড়ে উঠছে দুর্গা অঙ্গন। চারপাশে থাকবে ২০ ফুট চওড়া রাস্তা। প্রতিদিন প্রায় এক লক্ষ ভক্তের আগমন সম্ভব হবে। উঠোনে একসঙ্গে হাজার ভক্তের বসার ব্যবস্থা থাকবে। ১০৮ দেবদেবীর মূর্তি ও ৬৪ সিংহ মূর্তি স্থাপন করা হবে। দেবী দুর্গার পাশাপাশি লক্ষ্মী ও সরস্বতীর জন্য আলাদা মণ্ডপ থাকবে। প্রসাদ তৈরির ঘর, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য পৃথক স্থান এবং মন্দির চত্বরে দোকান তৈরি হবে, যা কর্মসংস্থানের সুযোগও এনে দেবে।
প্রকল্পে মোট খরচ হবে প্রায় ২৬১ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা। রাজ্য সরকার বরাদ্দ করেছে ১৭০০ কোটি টাকা। পুরো কাজের দায়িত্বে রয়েছে হিডকো। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হবে।
দুর্গা অঙ্গন হবে সারাবছর খোলা। ভক্তরা ৩৬৫ দিন দেবী দুর্গার দর্শন ও পূজা করতে পারবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এটি হবে বাংলার সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতার মেলবন্ধন। উৎসবকে সারাবছরের অভিজ্ঞতায় রূপান্তরিত করার মাধ্যমে বাংলার ঐতিহ্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে।
দুর্গা অঙ্গন শুধু একটি ধর্মীয় কেন্দ্র নয়, বরং বাংলার সাংস্কৃতিক পরিচয়কে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার এক প্রয়াস। ইউনেস্কোর স্বীকৃতিকে সম্মান জানিয়ে এই প্রকল্প বাংলার উৎসবকে স্থায়ী ঐতিহ্যে রূপান্তরিত করবে। একইসঙ্গে কর্মসংস্থান, পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।
.webp)
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊