নথিতে বানান ভুল, শিলিগুড়ি জ্যোৎস্নাময়ী স্কুলে প্রায় ৪০ ছাত্রীর ভর্তি নিয়ে জটিলতা, ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: নাম বা অভিভাবকের নামের বানানে এক-দুটি অক্ষরের ভুল। আর সেই কারণ দেখিয়েই ক্লাস ফোর থেকে ফাইভে ছাত্রীদের ভর্তি নিতে অস্বীকার করল স্কুল কর্তৃপক্ষ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির ঐতিহ্যবাহী জ্যোৎস্নাময়ী গার্লস হাই স্কুলে। স্কুলের এমন অনড় মনোভাবের জেরে প্রায় ৪০ জন ছাত্রীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে, যার প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন অভিভাবকরা।
অভিভাবকদের অভিযোগ, এই ছাত্রীরা দীর্ঘদিন ধরে ওই স্কুলেই পড়াশোনা করছে। প্রাথমিক বিভাগ থেকে উচ্চ প্রাথমিকে (ক্লাস ফাইভ) ওঠার সময় হঠাৎই নথিতে বানান বিভ্রাটের অজুহাতে তাদের ভর্তি আটকে দেওয়া হয়েছে। অভিভাবকদের দাবি, নথির সামান্য ত্রুটি সংশোধনযোগ্য হলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ তা মানতে নারাজ। উল্টে নিজেদের স্কুলের ছাত্রীদের ভর্তি না নিয়ে বাইরের পড়ুয়াদের আগে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।
বিষয়টি নিয়ে স্কুলের টিআইসি (TIC) বনানী রায়ের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, নথি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই ভর্তি নেওয়া সম্ভব নয়। তাঁর যুক্তি, "আমি চাই বাচ্চারা আগে নথি ঠিক করে আসুক, পরে আমি রেজিস্টার কাটতে পারব না।" এদিকে অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উঠলেও তিনি তা অস্বীকার করেছেন। টিআইসি-র দাবি, ধাক্কাধাক্কি বা দুর্ব্যবহারের যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং প্রমাণসাপেক্ষ।
কোনো উপায় না দেখে ভুক্তভোগী অভিভাবকরা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (DI) দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। ডিআই বালিকা গোলে এই প্রসঙ্গে জানান, সরকারি নথিপত্রে নামের নির্ভুল বানান থাকা জরুরি হলেও তার জন্য পড়ুয়াদের ভর্তি আটকে রাখা উচিত নয়। আগে ছাত্রীদের ভর্তি নিয়ে পরে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
স্কুল এবং শিক্ষা দপ্তরের এই টানাপোড়েনের মাঝে পড়ে মানসিক উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটছে খুদে পড়ুয়াদের। অভিভাবকদের মতে, জানুয়ারিতে নতুন সেশন শুরু হতে চলেছে, অথচ এখনো ভর্তি হতে না পারাটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের। স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানানো মায়েদের দাবি, অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান করে ছাত্রীদের পঠনপাঠনের সুযোগ করে দিতে হবে।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊