পরিবেশবান্ধব গঙ্গাসাগর মেলা ২০২৬: সাগরদ্বীপকে প্লাস্টিক মুক্ত করতে বিশাল সাফাই অভিযান
নিজস্ব প্রতিনিধি, সাগর: ২০২৬ সালের গঙ্গাসাগর মেলাকে সম্পূর্ণ ‘পরিবেশবান্ধব’ ও ‘প্লাস্টিক মুক্ত’ হিসেবে গড়ে তুলতে কোমর বেঁধে নামল রাজ্য সরকার। মেলা শুরুর আগে থেকেই সাগরের পবিত্রতা রক্ষা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে এক বিশাল সাফাই অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরাসহ প্রশাসনের একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিক।
প্রতি বছর মকর সংক্রান্তিতে কয়েক লক্ষ পুণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে ভিড় জমান। বিপুল জনসমাগমের ফলে সৈকত ও মেলা প্রাঙ্গণে প্লাস্টিক ও অন্যান্য বর্জ্য জমে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ২০২৬-এর মেলায় যাতে তার পুনরাবৃত্তি না হয়, সেই উদ্দেশ্যেই এই আগাম সচেতনতা ও সাফাই অভিযান। মূল লক্ষ্য হলো:
- মেলা প্রাঙ্গণ ও সমুদ্র সৈকতকে সম্পূর্ণ প্লাস্টিক বর্জ্য মুক্ত করা।
- পুণ্যার্থীদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বাড়ানো।
- গঙ্গাসাগরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও আধ্যাত্মিক পবিত্রতা বজায় রাখা।
সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা নিজেই এই সাফাই অভিযানে ঝাড়ু হাতে অগ্রণী ভূমিকা নেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সাগরের বিডিও (BDO) কানাইয়া কুমার রাও, গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ (GBDA)-এর চেয়ারম্যান সীমন্ত কুমার মালি এবং ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপ কুমার পাত্র।
প্রশাসনের পাশাপাশি এই উদ্যোগে শামিল হয়েছে ধর্মীয় সংগঠনগুলিও। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের নিমাই মহারাজ এবং কপিল মুনির আশ্রমের পুরোহিতরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেন, যা সাধারণ মানুষের কাছে এক বিশেষ বার্তা পৌঁছে দিয়েছে।
মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী গঙ্গাসাগর মেলাকে এবার আরও স্বচ্ছ ও পরিবেশবান্ধব করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে: ১. মেলা চলাকালীন প্লাস্টিক ব্যবহারের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। ২. পর্যাপ্ত পরিমাণে ডাস্টবিন ও বায়ো-টয়লেটের ব্যবস্থা করা হবে। ৩. স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহারের প্রচার চালানো হবে।
গঙ্গাসাগরের পবিত্রতা রক্ষা কেবল সরকারের একার দায়িত্ব নয়, বরং সাধারণ মানুষ ও পুণ্যার্থীদের সচেতনতাই এই অভিযানকে সফল করতে পারে। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশবিদরা। ২০২৬ সালের মেলাটি বিশ্বের দরবারে এক ‘গ্রিন মেলা’ হিসেবে পরিচিতি পাবে বলেই আশা করছে সুন্দরবন উন্নয়ন দপ্তর।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊