Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

ডিজিটাল আসক্তি কাটিয়ে প্রকৃতির কোলে খুদেরা: বন দপ্তরের অভিনব ‘স্ক্রিন টু গ্রিন’ কর্মসূচি

ডিজিটাল আসক্তি কাটিয়ে প্রকৃতির কোলে খুদেরা: ঘোষপুকুরে বন দপ্তরের অভিনব ‘স্ক্রিন টু গ্রিন’ কর্মসূচি

Digital addiction, Screen to Green program, Ghoshpukur Forest Department, Nature awareness for kids, West Bengal Forest Department initiative, Kids and nature, Digital detox for children, Ghoshpukur nature camp.

নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: বর্তমান সময়ের শিশুরা শৈশবের বড় একটা অংশ কাটাচ্ছে মোবাইল, ট্যাব বা ল্যাপটপের ডিজিটাল পর্দায়। শৈশবের এই যান্ত্রিকতা কাটিয়ে শিশুদের অরণ্যের সতেজতা ও প্রকৃতির প্রকৃত রূপের সঙ্গে পরিচয় করাতে শিলিগুড়ি সংলগ্ন ঘোষপুকুরের দুলালি পার্কে আয়োজিত হল এক ব্যতিক্রমী পরিবেশ সচেতনতা কর্মসূচি, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্ক্রিন টু গ্রিন’। কার্শিয়াং ফরেস্ট ডিভিশনের ঘোষপুকুর রেঞ্জের উদ্যোগে এই অভিনব ভাবনার মাধ্যমে একদল খুদেকে নিয়ে আসা হয়েছিল প্রকৃতির পাঠশালায়।

এই বিশেষ কর্মসূচিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল এফডব্লিউএন (FWN) ফাউন্ডেশন, শিলিগুড়ি বন্ধুচল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন এবং গিভ লাইফ সোসাইটির মতো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি। কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিল ২৫ জন ছাত্রছাত্রী এবং বেশ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী। শিশুদের জন্য দিনটি সাজানো হয়েছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে। সেখানে ছিল না কোনো বইয়ের পড়ার চাপ বা যান্ত্রিক কোলাহল। ‘নো ইয়োর হ্যাবিট্যাট’ পর্বের মাধ্যমে শিশুরা নিজেদের চারপাশের বনভূমি, স্থানীয় গাছপালা এবং প্রাণিজগত সম্পর্কে বাস্তব ধারণা লাভ করে। অডিও-ভিজ্যুয়াল মাধ্যমের সাহায্যে তাদের সামনে তুলে ধরা হয় স্থানীয় জীববৈচিত্র্যের নানা অজানা দিক। তবে শুধু দেখাই নয়, শিশুদের জন্য ছিল অরণ্যের অন্দরে ঘুরে দেখার সুযোগ বা ‘নেচার ট্রেল’। এর পাশাপাশি পরিবেশ বিষয়ক কুইজ, ট্রেজার হান্ট, গাছকে জড়িয়ে ধরে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ বা ‘ট্রি হাগিং’ এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে খেলার ছলে শিক্ষার এক অনন্য পরিবেশ তৈরি হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বাগডোগরা এডিএফও রাহুলদেব মুখোপাধ্যায় শিশুদের ক্রমবর্ধমান স্ক্রিন নির্ভরতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, আধুনিক প্রজন্মের শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা এখন সময়ের বড় প্রয়োজন। হাতে-কলমে প্রকৃতির পাঠ দেওয়ার মাধ্যমেই আগামী দিনে তাদের একজন সচেতন ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব। অন্যদিকে, গিভ লাইফ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা রনিত তালুকদার এই উদ্যোগকে অত্যন্ত ইতিবাচক বলে বর্ণনা করেন। তাঁর মতে, এমন কর্মসূচির মাধ্যমেই শিশুরা প্রকৃতিকে ভালোবাসতে শিখবে এবং পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্ব উপলব্ধি করবে।

এই আনন্দময় অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়ে খুদে পড়ুয়ারাও ছিল উচ্ছ্বসিত। অংশগ্রহণকারী রাখি সাহানি জানায়, এই প্রথমবার সে প্রকৃতিকে এত কাছ থেকে অনুভব করল। পরিবেশ রক্ষা করা যে আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য, সেই শিক্ষা সে আজ এই পাঠশালা থেকেই লাভ করেছে। অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কার্শিয়াং ফরেস্ট ডিভিশনের আধিকারিকরা। পরিবেশপ্রেমীদের মতে, ডিজিটাল জগতের মায়া কাটিয়ে শিশুদের অরণ্যের কোলে ফিরিয়ে আনার এই ‘স্ক্রিন টু গ্রিন’ উদ্যোগ ভবিষ্যতে তাদের চিন্তা ও আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code