কোন বয়সের পুরুষ এবং মহিলা পরকিয়াতে জড়ান এবং কেন ? কী বলছে গবেষণা !
সাম্প্রতিককালে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক বা পরকীয়ার মতো জটিল সামাজিক ঘটনা নিয়ে একাধিক গবেষণা হয়েছে। এই ধরনের সম্পর্কগুলি পারিবারিক ও সামাজিক কাঠামোর ওপর যে গভীর প্রভাব ফেলে, তা আজ গবেষণার মূল কেন্দ্রে। এই প্রতিবেদনটি তেমনই একটি গবেষণার ফলস্বরূপ প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি, যেখানে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে কোন বয়সে বেশি এবং তার মূল কারণগুলো কী, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
বিভিন্ন সমাজতাত্ত্বিক ও মনস্তাত্ত্বিক গবেষণায় দেখা গেছে, নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার বয়স ও এর পেছনের মানসিক কারণগুলির মধ্যে স্পষ্ট ভিন্নতা রয়েছে। এই বিশ্লেষণগুলি সম্পর্কের চাহিদা এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনগুলিকে তুলে ধরে।
১. পুরুষদের প্রবণতা: মধ্যজীবনের সঙ্কট (৪০-৫৫ বছর)
গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, পুরুষদের মধ্যে সাধারণত ৪০ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যে পরকীয়ায় জড়ানোর প্রবণতা সর্বাধিক। এর প্রধান কারণগুলি হলো:
ক) জীবন-মধ্যবর্তী সঙ্কট (Mid-life crisis): এই বয়সে পুরুষরা নিজেদের জীবনের লক্ষ্য ও অর্জন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং হারিয়ে যাওয়া যৌবনকে পুনরায় ফিরে পেতে চান।
খ) বিবাহিত জীবনে একঘেয়েমি: দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে আবেগ ও উদ্দীপনার অভাব বোধ করলে তারা নতুনত্বের সন্ধানে বাইরে সম্পর্ক খোঁজেন।
গ) আত্মবিশ্বাসের পরিবর্তন: কর্মজীবন বা ব্যক্তিগত জীবনে কোনো বড় পরিবর্তন বা নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিলে তারা অন্য সম্পর্কের মাধ্যমে নিজেদের গুরুত্ব ও সক্ষমতা প্রমাণ করতে চান।
২. নারীদের প্রবণতা: আবেগের শূন্যতা পূরণ (৩০-৪৫ বছর)
অন্যদিকে, নারীদের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা কিছুটা কম বয়সে, সাধারণত ৩০ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে বেশি দেখা যায়। নারীরা যে কারণগুলির জন্য এই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, তার মূল ফোকাস আবেগের দিকে:
ক) আবেগের শূন্যতা বা সংযোগের অভাব: দাম্পত্য সঙ্গী থেকে পর্যাপ্ত মানসিক সংযোগ, যত্ন বা সমর্থন না পেলে নারীরা সেই আবেগের শূন্যতা পূরণের জন্য অন্য কারও কাছে যান।
খ) অবহেলিত বোধ করা: সন্তান ও পরিবারের দায়িত্ব পালনের ভিড়ে নিজেদের ব্যক্তিগত চাহিদা বা আবেগ উপেক্ষিত হচ্ছে মনে করলে তারা মানসিক নির্ভরতা খোঁজেন।
গ) স্বীকৃতির আকাঙ্ক্ষা: বিবাহিত জীবনে নিজেদের অবদান বা আবেগ যদি স্বীকৃত না হয়, তবে অন্য সম্পর্কের মাধ্যমে প্রশংসা ও গুরুত্ব পেতে চান।
এই বয়সভিত্তিক গবেষণাগুলি প্রমাণ করে যে পরকীয়ার মূল কারণ কেবল শারীরিক আকর্ষণ নয়, বরং মানসিক চাহিদা ও সম্পর্কের জটিলতা। পুরুষরা যেখানে জীবনে নিজেদের প্রতিষ্ঠার ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে সৃষ্ট অসন্তোষ থেকে মুক্তি চান, সেখানে নারীরা খুঁজছেন মানসিক সংযোগ ও আবেগের বৈধতা।
গবেষকরা মনে করেন, আধুনিক দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিয়মিত ও খোলামেলা যোগাযোগ বজায় রাখা এবং একে অপরের ব্যক্তিগত ও মানসিক চাহিদাগুলি বোঝা—এই প্রবণতা কমাতে সহায়ক হতে পারে।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊