‘লিখিত কারণ না জানিয়ে গ্রেপ্তার নয়’—ব্যক্তি স্বাধীনতা রক্ষায় ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের
ভারতের শীর্ষ আদালত ব্যক্তি স্বাধীনতার সুরক্ষায় এক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে, যা দেশের গ্রেপ্তারি প্রক্রিয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি এজি মাসিহের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, কোনও ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার সময় তদন্তকারী সংস্থাকে লিখিতভাবে গ্রেপ্তারের কারণ জানাতে হবে। শুধু লিখিতভাবে নয়, সেই কারণ অভিযুক্ত ব্যক্তি যে ভাষায় বোঝেন, সেই ভাষাতেই জানাতে হবে। এই নির্দেশ সংবিধানের ২২(১) ধারার ব্যাখ্যার ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারের কারণ জানা একজন অভিযুক্তের মৌলিক অধিকার।
আদালত আরও স্পষ্ট করে জানায়, যদি গ্রেপ্তারের মুহূর্তে লিখিতভাবে কারণ জানানো সম্ভব না হয়, তাহলে মৌখিকভাবে জানানো বাধ্যতামূলক। অন্যথায়, সেই গ্রেপ্তারি আইনবিরুদ্ধ ও অবৈধ বলে গণ্য হবে। এমন পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তি মুক্তির দাবি জানাতে পারবেন। এই রায় শুধু একটি নির্দিষ্ট মামলার জন্য নয়, বরং দেশের সমস্ত গ্রেপ্তারি প্রক্রিয়ায় প্রযোজ্য হবে বলে আদালত জানিয়েছে।
এই নির্দেশ এসেছে ২০২৪ সালে মুম্বইয়ের ওয়রলি এলাকায় ঘটে যাওয়া একটি BMW গাড়ি দুর্ঘটনার মামলার শুনানিতে। মামলাটি ছিল মহির রাজে শাহ বনাম মহারাষ্ট্র। সেই মামলার শুনানির সময়ই আদালত এই গুরুত্বপূর্ণ রায় দেয়। বিচারপতিরা পর্যবেক্ষণ করেন, ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় বর্ণিত অপরাধের ক্ষেত্রেও এই মৌলিক অধিকার প্রযোজ্য। অর্থাৎ, কোনও অপরাধের ক্ষেত্রেই এই অধিকার খর্ব করা যাবে না।
এই রায়ের ফলে দেশের পুলিশ এবং অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে গ্রেপ্তারি প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা ও মানবিকতা বজায় রাখতে হবে। অভিযুক্তের ভাষাগত অধিকারকে সম্মান জানিয়ে গ্রেপ্তারের কারণ জানানো হবে, যাতে আইনি প্রক্রিয়া হয় ন্যায্য ও সংবেদনশীল। ব্যক্তি স্বাধীনতার সুরক্ষায় এই রায় ভবিষ্যতের জন্য এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊