বড় খবর : দিল্লী বিস্ফোরণ কান্ডে পাকিস্তানের পর এবার মিললো বাংলাদেশী যোগ !
২০২৫ সালের ১০ নভেম্বর দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লার কাছে একটি ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এই ঘটনায় ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড়সড় ফাঁকফোকর ধরা পড়ে এবং তদন্তে উঠে আসে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের জটিল নেটওয়ার্ক। বিস্ফোরণের পেছনে পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা, বাংলাদেশে নিষিদ্ধ আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (ABT), এবং হিযবুত তাহরীরের যৌথ ষড়যন্ত্রের প্রমাণ মিলেছে।
তদন্তকারী সংস্থাগুলির দাবি, বিস্ফোরণের আগে ঢাকায় একটি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন লস্কর-ই-তৈয়বার কমান্ডার সাইফুল্লাহ সাইফ, হিযবুত তাহরীরের ঢাকা প্রধান জুবায়ের আহমেদ, সাইফের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইবতিসাম এলাহি জহির, এবং ABT-এর সদস্য হাফিজ সুজাদুল্লাহ ও হাফিজ আলী ফজুল। বৈঠকে আরও দুই বাংলাদেশি সরকারি কর্মকর্তার উপস্থিতির কথাও উঠে এসেছে। এই বৈঠকেই ভারতে হামলার নির্দেশ জারি হয় বলে সূত্রের দাবি।
বৈঠকের পর একটি দল পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ভারতে প্রবেশ করে এবং কলকাতা সংলগ্ন এলাকায় ABT-এর ব্যবহৃত একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। তদন্তে জানা গেছে, এই দলটি ভারতে বিস্ফোরক সরবরাহ ও হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল। এনআইএ এবং দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ ও স্পেশাল সেল পৃথকভাবে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।
অর্থের জোগান নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। জৈশ-ই-মোহাম্মদের একজন হ্যান্ডলার হাওয়ালা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ২০ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছিলেন। এই অর্থের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনজন চিকিৎসক—ডঃ উমর নবী, ডঃ মুজাম্মিল এবং ডঃ শাহীন। তদন্তে জানা গেছে, তারা ২৬ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেছিলেন, যার মধ্যে ৩ লক্ষ টাকা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট কেনার জন্য ব্যয় হয়। অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে ডঃ উমর এবং ডঃ শাহীন ও মুজাম্মিলের মধ্যে বিরোধের কথাও উঠে এসেছে, যা জিজ্ঞাসাবাদের সময় মুজাম্মিল স্বীকার করেছেন।
তদন্তে আরও জানা গেছে, অভিযুক্তরা হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম অ্যাপে একাধিক গ্রুপে সক্রিয় ছিলেন। ৯ নভেম্বর গ্রেপ্তারের পর অনেকেই এই গ্রুপগুলি লাইভ করেন, যা তদন্তকারীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হয়ে ওঠে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি এখন এই গ্রুপগুলিকে কেন্দ্র করে তদন্ত চালাচ্ছে।
পাকিস্তানে একটি সমাবেশ থেকে সাইফুল্লাহ সাইফের একটি ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পর নিরাপত্তা সংস্থাগুলি উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। ভিডিওতে তিনি দাবি করেন, লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্যরা বাংলাদেশে সক্রিয় এবং ভারতে হামলার পরিকল্পনা করছে। এই ভিডিও এবং ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের তথ্য মিলিয়ে তদন্তকারীরা লাল কেল্লা বিস্ফোরণের সঙ্গে সরাসরি যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন।
এই বিস্ফোরণ মামলায় এনআইএ নিজস্ব তদন্ত চালাচ্ছে, পাশাপাশি দিল্লি পুলিশের দুটি ইউনিটও সক্রিয়ভাবে তদন্তে যুক্ত। গ্রেপ্তারকৃতদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, মোবাইল কল ডিটেলস, এবং ডিজিটাল footprint খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তে উঠে এসেছে, এই নেটওয়ার্কে বহু ব্যক্তি যুক্ত ছিলেন এবং তারা সক্রিয়ভাবে ভারতে জঙ্গি কার্যকলাপ চালানোর পরিকল্পনা করছিলেন।
এই বিস্ফোরণ শুধু দিল্লির নিরাপত্তা নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জঙ্গি নেটওয়ার্কের জটিলতা ও আন্তঃদেশীয় ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেয়। তদন্ত এখনও চলছে এবং ভবিষ্যতে আরও বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊