ঢাকায় পরপর বিস্ফোরণ ও গুলির ঘটনায় চাঞ্চল্য, নিরাপত্তা জোরদার; রাজনৈতিক উত্তেজনার আবহে আতঙ্ক ছড়াল
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা মঙ্গলবার গভীর রাতে একাধিক বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে। শহরের মোতিঝিল, পল্টন, মীরপুর, মহম্মদপুর, ধানমন্ডি, গুলশান-সহ একাধিক এলাকায় এই শব্দ শোনা যায়। বিস্ফোরণের তীব্র শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে। রাতভর শহরের বিভিন্ন প্রান্তে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল ও তল্লাশি অভিযান চলে। যদিও এখন পর্যন্ত কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি, তবে বিস্ফোরণের ধরন এবং সময় নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
এই ঘটনার সময়কাল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ১৩ নভেম্বর ঢাকায় ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। প্রশাসনের অনুমতি না নিয়েই এই কর্মসূচি ঘোষণার ফলে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, এই বিস্ফোরণগুলি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নাশকতা হতে পারে, যার লক্ষ্য শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল করা এবং জনমনে আতঙ্ক ছড়ানো।
মীরপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের সদর দফতরের সামনে একটি বিস্ফোরণ ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মোটরবাইকে করে এসে দুষ্কৃতীরা বোমা ছোড়ে এবং দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যায়। মোহাম্মদপুরে প্রবর্তনা নামে একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ছোড়া বোমার একটি ভিতরে বিস্ফোরিত হয়। ধানমন্ডি ও গুলশানেও একই ধরনের বিস্ফোরণ ও আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে। তিনটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, যদিও দমকল বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই ঘটনার ঠিক আগেই পাকিস্তানের ইসলামাবাদে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে দুই প্রতিবেশী দেশে পরপর বিস্ফোরণ ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের প্রশাসন ইতিমধ্যেই শহরজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (DMP) শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়, সরকারি ভবন, কূটনৈতিক এলাকা ও জনবহুল স্থানে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করেছে।
সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হলেও প্রশাসনের তরফে বারবার আশ্বস্ত করা হচ্ছে যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তদন্ত চলছে, এবং দোষীদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। শহরের স্বাভাবিক জনজীবন যাতে ব্যাহত না হয়, তার জন্য প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊