ঐতিহাসিক কালী বাড়িগুলির মধ্যে অন্যতম কমলাকান্ত কালীবাড়ি, রইলো তার ইতিহাস
সঞ্জিত কুড়ি পূর্ব বর্ধমান :-
বর্ধমান শহরের ঐতিহাসিক কালী বাড়িগুলির মধ্যে অন্যতম কালীবাড়ি হলো কমলাকান্ত কালীবাড়ি।১৮০৯ সালে পূর্ব বর্ধমানের বোরহাট এলাকায় স্থাপনা করেন সাধক কমলাকান্ত।
কথিত আছে এই মন্দিরেই পঞ্চমুন্ডির আসন প্রতিষ্ঠা করে কালীর সাধনায় সিদ্ধিলাভ করেছিলেন কমলাকান্ত।তার মৃত্যুর পর সাধক কমলাকান্তের সমাধির উপরেই দেবী প্রতিষ্ঠিত হয়।
সাধক কমলাকান্ত পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার বাসিন্দা হলেও পাঁচ বছর বয়সে বাবার মৃত্যুর পর গলসির চান্না গ্রামে মামাবাড়িতে বসবাস করতেন তিনি। পরে তন্ত্রসাধনার জন্য এই গ্রামকেই বেছে নিয়েছিলেন সাধক।
বোরহাটের কাছে এই মন্দির প্রতিষ্ঠার পিছনেও রয়েছে নানা কাহিনি । কমলাকান্তর কালীসাধনার কথা জানতে পেরে তাঁকে বর্ধমানে নিয়ে আসেন তত্কালীন মহারাজ তেজচন্দ্র মহাতাব। সেখানে কালীর পুজোপাঠের দায়িত্ব দেন। পাশাপাশি মহারাজের উশৃঙ্খল পুত্র প্রতাপচাঁদকে শিক্ষাদীক্ষা ও সংস্কারে উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জন্যও কমলাকান্তের দ্বারস্থ হন। সে জন্য কমলাকান্তকে বোরহাটের লাকুড্ডিতে একটি বাড়ি এবং কোটালহাটে একটি মন্দিরের জমি দান করেছিলেন তেজচন্দ্র। সে জমিতেই মন্দির স্থাপনা করে সিদ্ধিলাভ করেন কমলাকান্ত।
মন্দিরের ট্রাষ্ট বোর্ডের প্রাক্তন সভাপতি প্রশান্ত কোনার বলেন, ‘‘প্রতি দিন কালীর পুজোয় মাগুর মাছের ভোগ খাওয়াতেন সাধক কমলাকান্ত। সে রীতি মেনে আজও মা কালীকে প্রত্যেক দিন মাগুর মাছের ভোগ দেওয়া হয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কমলাকান্ত ও এই মন্দিরকে ঘিরে বহু অলৌকিক কাহিনি রয়েছে। কথিত, মা কালী জীবিত অবস্থায় এ মন্দিরে অবস্থান করছেন প্রমাণ করতে তেজচন্দ্রের সামনে কালীমূর্তির পায়ে বেলকাঁটা ফুটিয়ে রক্ত বার করে দেখান কমলাকান্ত। এমনকি, অমবস্যায় মহারাজকে পূর্ণিমার চাঁদও দেখিয়েছিলেন তিনি প্রতি অমাবস্যায় নিজের হাতে মাটির কালীমূর্তি গড়ে তার পুজো করতেন সাধক কমলাকান্ত। বর্ধমান শহরের বোরহাটের কাছে তাঁর প্রতিষ্ঠিত মন্দিরে আজও সে পুজোয় ছেদ পড়েনি। ছেদ পড়েনি এ পুজোয় মাগুর মাছের পদ রেঁধে ভোগ সাজানোয়ও। কমলাকান্তের কালী মন্দিরে আড়াইশো বছরেরও বেশি সময় ধরে পুজো হচ্ছে। তবে এ মন্দির পরিচিত ‘কমলাকান্ত কালীবাড়ি’ নামে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊