মার্কিন শুল্কের মধ্যে ভারতকে পুতিনের বড় উপহার
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মধ্যে ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে আরও ছাড়ে অপরিশোধিত তেল এবং উন্নত S-400 বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পেতে পারে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে। এই দুই কৌশলগত সুবিধা—জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা—ভারতের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা কাঠামোকে শক্তিশালী করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
বর্তমানে ইউরাল গ্রেডের রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল ব্রেন্টের তুলনায় প্রতি ব্যারেল ৩ থেকে ৪ ডলার কম দামে ভারতের কাছে বিক্রি হচ্ছে। এই ছাড়ের সুবিধা সেপ্টেম্বরের শেষে এবং অক্টোবর মাসে পাওয়া যেতে পারে। জুলাই মাসে এই ছাড় ছিল মাত্র ১ ডলার, আগস্টে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২.৫০ ডলারে, এবং এখন তা আরও বাড়ছে। এই ছাড়ের ফলে ভারত অতিরিক্ত ১.৫ থেকে ৩ লক্ষ ব্যারেল তেল কিনেছে সেপ্টেম্বর মাসে, যা আগের মাসের তুলনায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেশি। এই বাড়তি আমদানি ভারতের জ্বালানি খরচে উল্লেখযোগ্য সাশ্রয় এনে দিতে পারে।
এদিকে, রাশিয়া থেকে S-400 বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সরবরাহ বৃদ্ধির সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। ২০১৮ সালে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে ৫.৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যার আওতায় পাঁচটি S-400 ইউনিট কেনার কথা ছিল। এর মধ্যে তিনটি ইতিমধ্যেই ভারত পেয়েছে, এবং বাকি দুটি ২০২৬ ও ২০২৭ সালের মধ্যে সরবরাহের কথা রয়েছে। রাশিয়ার ফেডারেল সার্ভিস ফর মিলিটারি টেকনিক্যাল কোঅপারেশনের প্রধান দিমিত্রি সুগায়েভ জানিয়েছেন, উভয় দেশ S-400 সম্পর্কিত সহযোগিতা আরও বাড়ানোর জন্য আলোচনা করছে এবং নতুন চুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
S-400 সিস্টেম অপারেশন সিন্দুরের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এই সিস্টেমের মাধ্যমে ভারতীয় বিমান প্রতিরক্ষা আরও নির্ভুল ও কার্যকর হয়ে ওঠে, যার ফলে পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানগুলি ভারতের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিতে সাহস করেনি। এই অভিজ্ঞতা থেকেই ভারত আরও S-400 ইউনিট কেনার কথা বিবেচনা করছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যার মধ্যে ২৫ শতাংশ সরাসরি রাশিয়ান তেল আমদানির জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ভারত রাশিয়ান তেল কিনে ইউক্রেন যুদ্ধের অর্থায়নে সাহায্য করছে। এই শুল্ক ভারতের উপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেছে, এবং রাশিয়ার পক্ষ থেকে ছাড় ও প্রতিরক্ষা সরবরাহকে অনেকেই পুতিনের তরফে ভারতের প্রতি কৌশলগত উপহার হিসেবে দেখছেন।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আরও গভীর হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊