Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

শুধুই কী স্যোসাল মিডিয়া ব্যান ? আর কী কী কারন রয়েছে নেপালের এই অভ্যুত্থানের পিছনে?

শুধুই কী স্যোসাল মিডিয়া ব্যান ? আর কী কী কারন রয়েছে নেপালের এই অভ্যুত্থানের পিছনে? 

Nepal Gen Z protests, KP Sharma Oli resignation, Nepal youth unrest, social media ban Nepal, Kathmandu violence, Nepal political crisis, Nepal student movement, Ramesh Lekhak resignation, Nepal unemployment, youth frustration Nepal, Nepal government instability, Nepal digital censorship, Nepal Gen Z uprising

নেপালে সাম্প্রতিক গণআন্দোলন, যা ‘জেনারেল-জেড প্রতিবাদ’ নামে পরিচিত, দেশটির রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় রচনা করেছে। সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা, ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব, এবং দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষুব্ধ তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই আন্দোলন সহিংস রূপ নেয়, যার ফলে অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু ঘটে। পরিস্থিতির চাপে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

কেন এই অভ্যুত্থান? 

এই আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি ছিল ২৮ বছরের কম বয়সী তরুণ-তরুণীরা, যারা দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক স্থবিরতা, কর্মসংস্থানের অভাব এবং ক্ষমতাসীন নেতাদের পুনঃপুন নির্বাচনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছিল। প্রধানমন্ত্রী ওলির তৃতীয় মেয়াদেও দেশে কাঙ্ক্ষিত স্থিতিশীলতা না আসায় তরুণদের মধ্যে হতাশা আরও গভীর হয়।

সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা: প্রতিবাদের ঘৃতাহুতি

নেপাল সরকার সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি করে, যা তরুণদের মধ্যে ক্ষোভের আগুনে ঘৃতাহুতি দেয়। এই সিদ্ধান্তকে ‘প্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত’ বলে মনে করে আন্দোলনকারীরা, যারা ডিজিটাল মাধ্যমে সংগঠিত হয়ে রাজধানী কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভে নামে।

নেপালের সাম্প্রতিক ‘জেনারেল-জেড’ অভ্যুত্থানের পেছনে একাধিক গভীর ও দীর্ঘমেয়াদি কারণ রয়েছে, যা একত্রিত হয়ে দেশজুড়ে গণবিক্ষোভের রূপ নেয়। নিচে প্রধান কারণগুলি সংক্ষেপে তুলে ধরা হল:

১. সমাজমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা
সরকার ২৬টি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি করে, যার মধ্যে ছিল Facebook, YouTube, X ইত্যাদি। তরুণদের মতে, এটি ছিল মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর সরাসরি আঘাত এবং সরকারের সমালোচনাকে দমন করার চেষ্টা।

২. দুর্নীতি ও রাজনৈতিক স্বজনপোষণ
নেপালের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ জমছিল রাজনৈতিক নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে। ‘NepoKids’ বা রাজনৈতিক পরিবারের সন্তানদের ক্ষমতা ও বিলাসিতার বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ তীব্র হয়ে ওঠে।

৩. বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক অসাম্য
দেশে কর্মসংস্থানের অভাব, কম আয় এবং সুযোগের সংকট তরুণদের মধ্যে হতাশা বাড়িয়ে তোলে। প্রতিবাদকারীরা অভিযোগ করেন, সাধারণ নাগরিকরা অর্থনৈতিক সংকটে ভুগলেও রাজনৈতিক অভিজাতরা বিলাসিতায় জীবন কাটাচ্ছেন।

৪. পুলিশি দমন ও সহিংসতা
শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে পুলিশের গুলিচালনায় অন্তত ১৯ জন নিহত হন এবং শতাধিক আহত হন। এই ঘটনার পর আন্দোলন আরও বিস্ফোরক হয়ে ওঠে এবং সরকারের উপর চাপ বাড়ে।

৫. রাজনৈতিক স্থবিরতা ও নেতৃত্বের ব্যর্থতা
প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির তৃতীয় মেয়াদেও দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসেনি। তরুণদের মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে যে বর্তমান নেতৃত্ব পরিবর্তন না হলে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতই থেকে যাবে।

এই অভ্যুত্থান শুধু একটি সরকারের পতন নয়, বরং তরুণ প্রজন্মের গণতান্ত্রিক অধিকার, ডিজিটাল স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক জবাবদিহিতার দাবির প্রতিফলন। বিশ্লেষকদের মতে, এটি নেপালের রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য একটি মোড় পরিবর্তনকারী মুহূর্ত।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code