পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্মানে বিশ্বকর্মা পুজোয় ছুটি, নিয়োগ ও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ি সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ সফরের দ্বিতীয় দিনে জলপাইগুড়িতে প্রশাসনিক সভা থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের সম্মান জানিয়ে তিনি জানান, এবার থেকে রাজ্য সরকার বিশ্বকর্মা পুজোয় ছুটি দেবে।
আধার কার্ড ও নাগরিক পরিষেবা
সভায় মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, যাঁদের আধার কার্ড নেই, তাঁদের ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের মাধ্যমে আধার কার্ড করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। জেলা প্রশাসনকে এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিয়োগ পরীক্ষা ও আইনি জটিলতা
নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আদালতের নির্দেশে বন্ধ থাকা পরীক্ষা ফের শুরু হয়েছে। গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি পদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। তিনি জানান, শিক্ষক নিয়োগে ইতিমধ্যে ৩৫ হাজার পদ পূরণ হয়েছে, আরও ২১ হাজার পদ খালি রয়েছে। বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, PIL করে বারবার নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে দেওয়া হচ্ছে, যা চাকরি প্রার্থীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
চা-শ্রমিকদের জন্য আবাসন ও বোনাস
জলপাইগুড়ি জেলার চা-বাগানে ১৩ হাজার বাড়ি নির্মাণের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। চা-শ্রমিকদের জন্য ২০ শতাংশ বোনাস ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রমিকদের বোনাস পাওয়ার ক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যসচিবকে। বিরোধী শ্রমিক সংগঠনগুলিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “শ্রমিকদের টাকা নিয়ে খেলবেন না।”
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ
মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকার সর্বশিক্ষা অভিযান, রাস্তা নির্মাণ সহ একাধিক প্রকল্পে বাংলাকে বঞ্চিত করছে। তিনি বলেন, “দিল্লির দয়া চাই না, বাংলার মানুষকে বিনা আশ্রয়ে মরতে দেব না।” কর্মশ্রী প্রকল্পে ৭৮ লক্ষ মানুষকে কাজ দেওয়া হয়েছে, জলপাইগুড়ি জেলায় ৩.৩৬ লক্ষ কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
ভাষা ও সাংস্কৃতিক অধিকার
ভিনরাজ্যে বাঙালিদের উপর ভাষাগত অত্যাচারের অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলা বলায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। আমরা আরও বেশি করে বাংলায় কথা বলব। আমাদের বাংলা, বাংলা চালাবে—দিল্লি নয়।”
রাজনৈতিক বার্তা ও আত্মপক্ষ সমর্থন
সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যতদিন রাজনীতি করব, মাথা উঁচু করে করব।” তিনি জানান, পার্লামেন্ট থেকে পেনশন নিলে কয়েক কোটি টাকা পেতেন, কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি। নিজের নামে কোনও প্রকল্প না করে মনীষীদের নামে প্রকল্প করার পক্ষে মত দেন। বক্তব্যের শেষে বলেন, “বাংলা ভালো থাকলে দেশ ভালো থাকবে। জয় বাংলা বলব।”
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊