Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

'ডিএ কোন দয়ার দান নয়, এটি কর্মীদের ন্যায্য অধিকার': ডিএ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে কড়া প্রশ্ন

'ডিএ কোন অনুগ্রহ নয়, এটি কর্মীদের ন্যায্য অধিকার': ডিএ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে কড়া প্রশ্ন

৬ আগস্ট, ২০২৫:  ডিএ (DA) মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) বুধবারের শুনানি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আদালতের বিচারপতিরা রাজ্য সরকারকে একাধিক কড়া প্রশ্ন করেছেন, যা থেকে বোঝা যায় যে ডিএ-কে আর শুধুমাত্র প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে না।

আদালতের কড়া প্রশ্ন:
আদালত রাজ্য সরকারের কাছে সরাসরি জানতে চায়, 'এতদিন ধরে কেন ডিএ দেওয়া হয়নি?' একইসঙ্গে আদালত প্রশ্ন তোলে, 'পশ্চিমবঙ্গের যে কর্মীরা দিল্লি, চেন্নাইয়ে কর্মরত, তাঁরা কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পেলে রাজ্যের কর্মীদের ক্ষেত্রে এই বৈষম্য কেন?'

আইনজীবীর জোরালো সওয়াল:
মামলাকারী কর্মীদের আইনজীবী গোপাল চন্দ চট্টোপাধ্যায় আদালতে জানান, ডিএ (DA) কোনো অনুগ্রহ নয়, বরং এটি কর্মীদের ন্যায্য অধিকার। তিনি বলেন, 'ডিএ কোনো দয়া নয়, এটি বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় অন্তর দেওয়া বাধ্যতামূলক। এটিকে ইচ্ছাধীন বলে দেখা ঠিক নয়।'
আইনজীবী গোপালবাবু আরও বলেন, "জানুয়ারি থেকে ডিএ কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও, রাজ্য সরকার ২০০৬ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত বকেয়া ডিএ দিতে চাইছে না।" তার মতে, ডিএ নির্ধারণের ভিত্তি হলো অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (AICPI), যা কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের অধীনস্থ শ্রম ব্যুরো প্রতি মাসে প্রকাশ করে। কেন্দ্রীয় সরকার এই ইনডেক্স অনুযায়ী ডিএ নির্ধারণ করে, যা রাজ্যেরও মেনে চলা উচিত।

বৈষম্যের অভিযোগ:
আইনজীবী গোপাল চট্টোপাধ্যায় আদালতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "নয়াদিল্লির বঙ্গভবন এবং চেন্নাইয়ের ইউথ হোস্টেলে কর্মরত পশ্চিমবঙ্গের কর্মীরা কেন্দ্রীয় নিয়মে ডিএ পান। অথচ, পশ্চিমবঙ্গে কর্মরত কর্মীদের সেই সুবিধা নেই।" তিনি এই বৈষম্যকে সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ (সমতার অধিকার) লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন। তার যুক্তি হলো, একই নিয়মে নিযুক্ত কর্মীদের একাংশকে বেশি ডিএ এবং অন্য অংশকে কম ডিএ দেওয়া অসাংবিধানিক।

রাজ্য সরকারের পাল্টা যুক্তি ও আদালতের প্রশ্ন:
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে পাল্টা যুক্তি দেওয়া হয় যে, ডিএ কোনো মৌলিক বা আইনগত অধিকার নয় এবং এটি রাজ্যের আর্থিক সামর্থ্য বিচার করে দেওয়া হয়। এই যুক্তি শুনে বিচারপতি মিত্র পাল্টা প্রশ্ন করেন, 'যদি ভোক্তা মূল্য সূচক (Consumer Price Index) না মানা হয়, তাহলে ডিএ নির্ধারণের ভিত্তি কী?'

উল্লেখ্য, এর আগে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যকে বকেয়া ডিএ-র ২৬ শতাংশ ৬ সপ্তাহের মধ্যে মেটানোর নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু রাজ্য অর্থ জোগাড় করতে না পারার কারণ দেখিয়ে আরও ৬ মাস সময় চেয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে এখন সবার নজর সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code