‘এক দেশ, এক ভোট’ নিয়ে সংসদীয় কমিটির সামনে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না
১৯ আগস্ট, দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ‘এক দেশ, এক ভোট’ (One Nation, One Election) সংক্রান্ত বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির (JPC) সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করবেন। এই আলোচনাকে ঘিরে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক মহলে তীব্র কৌতূহল তৈরি হয়েছে, কারণ বিচারপতি খান্না ইতিমধ্যেই তাঁর লিখিত মতামতে বিলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বিলটির মূল প্রস্তাব—লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভাগুলির নির্বাচন একসঙ্গে আয়োজন করা। যদিও এর সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে সরাসরি আপত্তি তোলা হয়নি, বিচারপতি খান্না স্পষ্টভাবে বলেছেন, “সংবিধানিক বৈধতা মানেই প্রস্তাবের প্রয়োজনীয়তা বা কাম্যতা নয়”।
তিনি বিশেষভাবে যে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তা হল—নির্বাচন কমিশনের উপর “অসীম ক্ষমতা” অর্পণ। বিল অনুযায়ী, কমিশন একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে কোনও রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন স্থগিত করে তা লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে একত্রে আয়োজন করা হবে কি না। বিচারপতি খান্নার মতে, এই ধারা সংবিধানের মৌলিক কাঠামো এবং Article 14 (আইনের সামনে সমতা) লঙ্ঘন করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন স্থগিতের ফলে পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রপতির শাসন জারি হতে পারে, অর্থাৎ কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের ক্ষমতা গ্রহণ করতে পারে। এটি বিচারিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ, কারণ এটি সংবিধানের ফেডারাল কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে”।
এই আলোচনায় বিচারপতি খান্না ছাড়াও এর আগে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিরা—ডি.ওয়াই. চন্দ্রচূড়, ইউ.ইউ. ললিত, জে.এস. খেহার এবং রঞ্জন গগৈ—তাঁদের মতামত দিয়েছেন। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞই বিলকে অসাংবিধানিক বলেননি, তবে এর বাস্তবায়ন ও প্রভাব নিয়ে গভীর প্রশ্ন তুলেছেন।
বিজেপি এবং তাদের শরিক দলগুলি এই বিলকে সমর্থন করে বলেছে, এটি প্রশাসনিক ব্যয় কমাবে এবং বারবার নির্বাচনের ফলে যে উন্নয়নমূলক কাজ থেমে যায়, তা রোধ করবে। অন্যদিকে বিরোধীরা বলছে, এটি গণতান্ত্রিক কাঠামো দুর্বল করে এবং রাজ্যগুলির স্বায়ত্তশাসন হরণ করে ।

0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊