Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রতিরোধে প্রযুক্তির ব্যবহার- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ

নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রতিরোধে প্রযুক্তির ব্যবহার- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ

নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রতিরোধে প্রযুক্তির ব্যবহার- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ


হিন্দুস্তান টাইমস এবং টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, ভারতে নারীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান অপরাধ মোকাবিলায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (Ministry of Home Affairs - MHA) বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা সুপ্রিম কোর্টের নারী আইনজীবী সমিতির দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার জবাবে নেওয়া হয়েছে। 

টাইমস অফ ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে যে দিল্লি, মুম্বাই এবং অন্যান্য শহরের সাতটি রেলস্টেশন দ্রুতই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সিস্টেম দিয়ে সজ্জিত করা হবে, যা জনবহুল স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে যে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পর্যবেক্ষণের জন্য স্বয়ংক্রিয় লাইসেন্স প্লেট স্বীকৃতি (Automatic License Plate Recognition - ALPR), স্মার্ট আলো ব্যবস্থা এবং ড্রোনের মতো অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে; এই ব্যবস্থাগুলো অপরাধ শনাক্তকরণ এবং প্রতিরোধে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুপ্রিম কোর্টকে অবহিত করেছে যে জাতীয় ডেটা শেয়ারিং অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মে (NDSEP) সংবেদনশীল তথ্য সংরক্ষিত আছে। এই ডেটাবেসে ধর্ষণ, স্টকিং এবং শিশু নির্যাতনের মতো বিভিন্ন যৌন অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা, ছবি এবং আঙুলের ছাপের বিবরণ রয়েছে। বর্তমানে, এই ডাটাবেসে ২০.২ মিলিয়ন (২.০২ কোটি) এন্ট্রি রয়েছে এবং আন্তঃপরিচালিত ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেম (Inter-operable Criminal Justice System - ICJS) ডাটাবেসের মাধ্যমে সারা দেশের সমস্ত থানা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এই তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারে। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো প্রযুক্তির সাহায্যে পুলিশ, আদালত, কারাগার, ফরেনসিক ল্যাব এবং প্রসিকিউশনকে একীভূত করা, যাতে অপরাধ বিচার ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করা যায়।

তবে, প্রতিবেদন অনুসারে, সুপ্রিম কোর্টের নারী আইনজীবী সমিতি যুক্তি দিয়েছে যে নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধ মোকাবেলায় আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, কারণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক বর্ণিত বিদ্যমান পদক্ষেপগুলো 'বড় পরিবর্তন' আনছে না। 

ভারতের জাতীয় অপরাধ রেকর্ড ব্যুরোর (National Crime Records Bureau - NCRB) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ৫৮ লাখ নারীর বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছিল, যা ২০২২ সালে ৬৬ লাখে পৌঁছেছে; এই পরিসংখ্যান নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের উদ্বেগজনক বৃদ্ধি নির্দেশ করে। 

এছাড়াও, সম্প্রতি একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে যেখানে সিনিয়র শিক্ষক বারবার যৌন হয়রানি করায় ২০ বছর বয়সী এক ছাত্রী অধ্যক্ষের অফিসের বাইরে নিজের গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এই ঘটনাটি নারীদের নিরাপত্তা এবং তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রতিরোধের প্রয়োজনীয়তাকে আরও প্রকট করে তুলেছে। এই উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর। 

তবে, নারী আইনজীবী সমিতির উদ্বেগ এবং ক্রমবর্ধমান অপরাধের পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দেয় যে এই সমস্যা মোকাবিলায় আরও ব্যাপক এবং কার্যকর পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code