Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মামলায় শুনানি শেষ, রায়দান স্থগিত রাখলো হাইকোর্ট

শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মামলায় শুনানি শেষ, রায়দান স্থগিত রাখলো হাইকোর্ট

Highcourt

শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মামলায় শুনানি শেষ, রায়দান স্থগিত রাখলো হাইকোর্ট। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চে আজ তিন পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতিরা।

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, কোন বিধি অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া সংগঠিত হবে সেটা চাকরিপ্রার্থীরা ঠিক করতে পারেন না, কমিশন যা ঠিক করবে সেটাই হবে। রাজ্যের যুক্তি, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কোথাও বলা নেই যে ২০১৬ সালের বিধি অনুযায়ী নিয়োগ করতে হবে। কমিশনের কাছে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে তিনটি বিধি আছে। ২০১৬ সালের বিধি, ২০১৯ সালের বিধি এবং ২০২৫ সালের বিধি। যে সিদ্ধান্তই গ্রহণ করা হোক না কেন, সেটা পড়ুয়াদের ভালোর কথা চিন্তা করেই।

শুনানিপর্বে এজি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট পুরনো নিয়োগ বাতিল করে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছে। শীর্ষ আদালত কোথাও বলে দেয়নি ২০১৬ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়া নতুন করে করতে হবে। হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট শুধু শূন্যপদ পূরণ করতে বলেছে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে এসএসসি নতুন বিধি তৈরি করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করছে। যদি মামলাকারীদের মনে হয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করা হয়েছে তারা সেখানে গিয়ে বলুন। যদি ভুল থাকে, শীর্ষ আদালত তা বলে দেবে। ইতিমধ্যে এসএসসির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়েছে শীর্ষ আদালতে। সেখানে প্রায় ১৮০টি রিভিউ পিটিশন করা হয়েছে।’’

এজির সওয়াল, ‘‘চাকরিতে অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য পায়। এক্ষেত্রেও অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যোগ্যতামান নিয়ে রায়ে সুপ্রিম কোর্ট কোনও নির্দেশ দেয়নি। এসএসসি নিজের ক্ষমতাবলে প্রার্থীদের যোগ্যতামান নির্ধারণ করেছে।’’




এজি তাঁর সওয়ালে আরও বলেন, ‘‘২০১৬ সালের নিয়োগবিধির পরে ২০১৯ সালের নিয়োগবিধি তৈরি করা হয়েছিল। এখন ২০২৫ সালের নিয়োগবিধি। কেউ এসএসসির নিয়োগবিধিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে না। ২৬ হাজার চাকরি বাতিল ২০১৯ সালের নিয়োগবিধির পরে এসেছিল। কিন্তু সেই বিধিকে কেউ চ্যালেঞ্জ করেনি।’’

আইনজীবী কল্যাণ বলেন, ‘‘কী ভাবে কমিশনের আইনকে চ্যালেঞ্জ করা যায়? হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছে। কিন্তু কোন বিধি মেনে হবে তা উল্লেখ করেনি। শুধু বলেছে ঘোষিত শূন্যপদে নিয়োগ করতে হবে। এটা ২০১৯ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়াও হতে পারে। আবার নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়াও হতে পারে। ফলে কোথাও বলে দেওয়া নেই ২০১৬ সালের বিধি মেনেই নিয়োগ করতে হবে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর যুক্তি, ‘‘গত ন’বছর ধরে নতুনেরা সুযোগ পাননি। আপনার যদি যোগ্যতা থাকে কেন মামলা করছেন? নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ দিন। উত্তীর্ণ হয়ে চাকরি করুন। আসল সমস্যায় ১৫০০ দিন ধরে ময়দানে বসে ছিলেন। এখন এটা চাই-ওটা চাই বলছেন।’’




কল্যাণের দাবি, ২০১৬ সালের বিধি মেনে বয়সে ছাড় দেওয়া সম্ভব ছিল না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মান্যতা দিয়ে ওই বিধি সংশোধন করতে হত। বয়সে ছাড় দিতে হলে ২০১৬ সালের বিধি সংশোধন অথবা নতুন বিধি তৈরির প্রয়োজনীয়তা ছিল। আবার আদালত যদি নতুন বিধি খারিজ করে দেয় তবে ২০১৬ সালের বিধিতে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তিনি বলেন, ‘‘একটি নিয়োগপ্রক্রিয়ায় সবচেয়ে ভাল প্রার্থীকেই বাছাই করাই লক্ষ্য হয়ে থাকে। ভাল প্রার্থী কারা বাছাই করার অধিকার আমার রয়েছে। কেউ ৪০ শতাংশ, আর কেউ ৭০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। ৭০ শতাংশ যিনি পেয়েছেন সেই প্রার্থীকে সুযোগ দেওয়া উচিত।’’

বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের তরফে অনিন্দ্য বলেন, ‘‘বিধি সংশোধন করবে কি না, সেটা এসএসসির বিষয়। তাদের ভুলে এমন পরিস্থিতি হয়েছে। এখন ইচ্ছাকৃত ভাবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করছে এসএসসি। সুপ্রিম কোর্ট নিয়োগ বাতিল করেছে। কোনও প্যানেল বাতিল করেনি। সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলে দেয়নি নতুন নিয়োগ শুরু হলে যোগ্যতামান বদল করতে পারবে এসএসসি।’’

অন্য দিকে আইনজীবী বিকাশ বলেন, ‘‘দুর্নীতির কারণে আগের নিয়োগ বাতিল হয়েছে। সেখানে ঘোষিত শূন্যপদে নতুন করে নিয়োগ করতে হবে বলে রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ২০১৯ সালের বিধি মেনে নিয়োগ হয়নি।’’

চাকরিহারাদের আইনজীবীর কথায়, “বিধি সংশোধন করবেন কি না, সেটা এসএসসির বিষয়। কিন্তু ওদের ভুলের কারণেই এই জটিলতা। এখন ইচ্ছাকৃত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করছে এসএসসি। সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলে দেয়নি নতুন নিয়োগ শুরু হলে যোগ্যতামান বদল করতে পারবে এসএসসি।” তিনপক্ষের যাবতীয় যুক্তি শোনার পর রায়দান স্থগিত রেখেছে ডিভিশন বেঞ্চ।

তিন পক্ষের কথা শোনার পর রায়দান স্থগিত রাখলে হাইকোর্ট।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code