এসএসসির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে হওয়া সব মামলা খারিজ করলো কলকাতা হাইকোর্ট
কলকাতা হাইকোর্টে এসএসসি মামলায় বড় জয় পেল রাজ্য। এসএসসির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে হওয়া সব মামলা খারিজ করলো কলকাতা হাইকোর্ট। এসএসসির নতুন বিজ্ঞপ্তিতে কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না। বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চে আজ শুনানি ছিল মামলা গুলির। কিন্তু সব মামলাই খারিজ করে দিল বেঞ্চ।
শুনানি শেষে রাজ্যের বড় জয়, রাজ্যের অধিকারের মান্যতা বলে মন্তব্য করেন আইনজীবী কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়। আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা রাজ্যের বড় জয়! রাজ্যের অধিকারকে মান্যতা দিল আদালত। সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলে দেয়নি ২০১৬ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়া মেনে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। অযৌক্তিক আবেদন আদালত মেনে নেয়নি। গত ন’বছরের মধ্যে কত জন এসেছেন, তাঁদের কথাও বিবেচনা করতে হবে।’’
এদিন এজি সওয়াল করেন, ২০১৬-র পর ২০১৯-এ নয়া বিধি এসেছিল। এরপর আসলো ২০২৫-এ। ২০১৯-এ কেউ বিরোধীতা করলো না কেন? এজি বলেন, ‘‘২৬ হাজার চাকরি বাতিলের রায় ২০১৯ সালের নিয়োগবিধির পরে এসেছিল। তখন সেই বিধিকে কেউ চ্যালেঞ্জ করেনি। ফলে কেউ এসএসসির নিয়োগবিধিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে না।’’ এসএসসির নির্ধারিত মূল্যায়ন বিধি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘কোনও নিয়োগপ্রক্রিয়ায় প্রার্থীদের যোগ্যতামান কী হবে, তা নিয়োগকারীই নির্ধারণ করে। ফলে কী কী যোগ্যতা থাকা প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণ করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে এসএসসি। যে কোনও চাকরিতে অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও তাই শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’’
কী ভাবে কমিশনের আইনকে চ্যালেঞ্জ করা যায়? প্রশ্ন তোলেন কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, কোথায় লেখা আছে নিয়োগ ২০১৬-র নিয়ম মেনে করতে হবে। আরও যুক্তি দেওয়া হয়, ২০১৬ সালের বিধি মেনে বয়সে ছাড় দেওয়া কার্যত সম্ভব ছিল না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মান্যতা দিয়ে ওই বিধি সংশোধন করতেই হত।
এসএসসির ভুলেই আজ এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ইচ্ছাকৃত ভাবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মামলা কারীর আইনজীবী। মামলাকারীদের তরফে অনিন্দ্য বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট কোথাও বলে দেয়নি নতুন নিয়োগ শুরু হলে যোগ্যতামান বদল করতে পারবে এসএসসি।’’
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী নিয়োগের প্যানেল বাতিলের জেরে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হয়েছে। আর এরপর দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশে নয়া নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য। তবে সেই নিয়োগবিধি নতুন। আর সেই নিয়োগ বিধি নিয়েই মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। মামলাকারীদের দাবি ছিল, ২০১৬ সালের নিয়োগপ্রক্রিয়ার বিধি ২০১৬ সালের মতোই করতে হবে। উল্লেখ্য, নয়া বিধিতে বলা হয়েছিল, ৬০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে, আগে যা ৫৫ নম্বরের ছিল। শিক্ষাগত যোগ্যতার উপরে ৩৫ নম্বরের পরিবর্তে রাখা হয়েছিল সর্বোচ্চ ১০ নম্বর। ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রে ১০ নম্বর। এছাড়াও নয়া সংযোজন ছিল শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং ‘লেকচার ডেমনস্ট্রেশন’-এর উপর নম্বর যুক্ত হয়েছে। যার সর্বোচ্চ ১০ নম্বর করে রাখা হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারির হিসাবে যাঁদের বয়স সর্বোচ্চ ৪০ বছর, তাঁরাই নিয়োগের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন বলেও জানিয়েছিল এসএসসি।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊