শিব পূজার ফর্দমালা
শিব পূজা হিন্দু ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা মহাদেব শিবকে তুষ্ট করার জন্য করা হয়। এই পূজা সাধারণত সোমবার, প্রদোষ তিথি, মহাশিবরাত্রি এবং শ্রাবণ মাসে বিশেষ ভক্তি সহকারে অনুষ্ঠিত হয়। শিব পূজার জন্য কিছু নির্দিষ্ট উপকরণ প্রয়োজন হয়, যা পূজার পবিত্রতা ও সম্পূর্ণতা নিশ্চিত করে। নিচে শিব পূজার একটি বিস্তারিত ফর্দমালা দেওয়া হলো:
শিব পূজার প্রয়োজনীয় উপকরণ (ফর্দমালা):
১. পূজার স্থান ও পরিবেশের জন্য:
আসন: পূজারী এবং শিবলিঙ্গ স্থাপনের জন্য পরিষ্কার আসন।
শঙ্খ: পূজার শুরুতে ও শেষে বাজানোর জন্য।
ঘণ্টা: দেবতাকে আহ্বান করার জন্য।
ধূপদানি ও ধূপকাঠি: সুগন্ধ ও পবিত্র পরিবেশ তৈরির জন্য।
প্রদীপ ও সলতে: আলো জ্বালানোর জন্য (ঘি বা তেলের প্রদীপ)।
কর্পূর: আরতির জন্য।
চন্দন কাঠ বা চন্দন গুঁড়ো: তিলক ও পূজার জন্য।
আবীর ও সিঁদুর: তিলক ও পূজার জন্য।
গঙ্গা জল: পবিত্র জল।
সাধারণ জল: পূজার বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য।
পঞ্চপাত্র: জল, ফুল, চন্দন ইত্যাদি রাখার জন্য।
আচমনী: আচমন করার জন্য।
শুদ্ধ বস্ত্র: পূজার সময় পরিধানের জন্য।
২. শিবলিঙ্গের পূজার জন্য:
বিল্বপত্র (বেলপাতা): শিবের অত্যন্ত প্রিয়, এটি ছাড়া শিব পূজা অসম্পূর্ণ।
ধুতুরা ফুল ও ফল: শিবের প্রিয় উপকরণ।
আকন্দ ফুল ও মালা: শিবের প্রিয় ফুল।
অপরাজিতা ফুল: নীল রঙের ফুল।
শ্বেতচন্দন: শিবলিঙ্গে লেপনের জন্য।
ভস্ম বা বিভূতি: শিবলিঙ্গে লেপনের জন্য।
দুধ: শিবলিঙ্গে অভিষেক করার জন্য।
দই: শিবলিঙ্গে অভিষেক করার জন্য।
ঘি: শিবলিঙ্গে অভিষেক করার জন্য।
মধু: শিবলিঙ্গে অভিষেক করার জন্য।
চিনি বা গুড়: শিবলিঙ্গে অভিষেক করার জন্য।
পঞ্চামৃত: দুধ, দই, ঘি, মধু ও চিনি মিশিয়ে তৈরি।
জল: অভিষেকের পর শিবলিঙ্গ ধোয়ার জন্য।
৩. ভোগ ও প্রসাদের জন্য:
ফল: বিভিন্ন ধরনের ফল (যেমন - কলা, আপেল, আম, পেয়ারা ইত্যাদি)।
মিষ্টি: লাড্ডু, বরফি বা অন্য কোনো মিষ্টি।
নৈবেদ্য: চাল, ডাল, সবজি ইত্যাদি দিয়ে তৈরি নিরামিষ খাবার।
পান সুপারি: পূজার শেষে নিবেদনের জন্য।
৪. অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ:
কলা গাছ বা কলা পাতা: পূজার স্থান সাজানোর জন্য।
ফুল ও ফুলের মালা: পূজার স্থান সাজানো এবং দেবতাকে অর্পণের জন্য।
কড়ি, শঙ্খ, কড়ি-শঙ্খ: কিছু পূজায় ব্যবহৃত হয়।
দক্ষিণা: ব্রাহ্মণ বা পুরোহিতকে দেওয়ার জন্য।
পূজার পদ্ধতি (সংক্ষেপে): সাধারণত, শিব পূজা শুরু হয় শিবলিঙ্গকে জল, দুধ, দই, ঘি, মধু, চিনি এবং পঞ্চামৃত দিয়ে অভিষেক করার মাধ্যমে। এরপর বিল্বপত্র, ধুতুরা, আকন্দ ফুল ইত্যাদি নিবেদন করা হয়। চন্দন, ভস্ম ও সিঁদুর দিয়ে শিবলিঙ্গ সজ্জিত করা হয়। ধূপ, প্রদীপ জ্বালিয়ে আরতি করা হয় এবং মন্ত্র পাঠ করা হয়। শেষে ফল, মিষ্টি ও নৈবেদ্য নিবেদন করা হয়।
এই ফর্দমালাটি একটি সাধারণ নির্দেশিকা। স্থানীয় প্রথা এবং পুরোহিতের নির্দেশ অনুযায়ী কিছু উপকরণের পরিবর্তন হতে পারে। ভক্তি ও নিষ্ঠাই শিব পূজার মূল বিষয়।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊