ঝাঁসি রেল স্টেশনে 'থ্রি ইডিয়টস'-এর পুনরাবৃত্তি-সেনা চিকিৎসকের হাতে সফল প্রসব!
ঝাঁসি, ৬ জুলাই, ২০২৫: জীবন বাঁচানোর জন্য হাসপাতাল বা উন্নত সরঞ্জামের সবসময় প্রয়োজন হয় না, বরং প্রয়োজন হয় উপস্থিত বুদ্ধি এবং মানবিকতার—'থ্রি ইডিয়টস' সিনেমার সেই বিখ্যাত ডায়ালগ এবার বাস্তবেই রূপ পেল উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি রেল স্টেশনে। প্ল্যাটফর্মে আকস্মিক প্রসব বেদনা ওঠা এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে সফলভাবে প্রসব করিয়েছেন ভারতীয় সেনার একজন চিকিৎসক, তাও পকেটের ছুরি আর চুলের ক্লিপের মতো সীমিত সরঞ্জাম ব্যবহার করে।
ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তরপ্রদেশের বীরাঙ্গনা লক্ষ্মীবাই ঝাঁসি স্টেশনে। পানভেল-গোরখপুর এক্সপ্রেসে যাত্রা করার সময় এক মহিলার প্রসব বেদনা ওঠে এবং তিনি ট্রেন থেকে নেমে স্টেশনে আশ্রয় নেন। ঠিক সেই মুহূর্তে ঝাঁসির সামরিক হাসপাতালের মেজর চিকিৎসক রোহিত স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় ছিলেন। প্ল্যাটফর্মে ওই মহিলার দুর্দশা তার চোখে পড়ে।
এক মুহূর্তও দেরি না করে মেজর রোহিত এগিয়ে আসেন। স্টেশন কোনো অপারেশন থিয়েটার ছিল না; সেখানে প্রসবের জন্য প্রয়োজনীয় কোনো যন্ত্রপাতি, এমনকি ছুরি বা কাঁচিও ছিল না। কিন্তু ঠিক সিনেমার 'র্যাঞ্চো'র মতো, সেনার এই চিকিৎসক তার পকেটে থাকা একটি ছুরি এবং মাথার ক্লিপকে হাতিয়ার করে পরিস্থিতি সামাল দেন। দ্রুত স্টেশন চত্বরে কাপড় দিয়ে প্রসব করানোর জায়গাটি ঘিরে ফেলা হয়। মেজর রোহিতের সাথে যোগ দেন স্টেশন চত্বরে উপস্থিত টিকিট চেকার কর্মীরা। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সফলভাবে একটি ফুটফুটে শিশুর জন্ম হয়।
প্রসব সম্পন্ন হওয়ার পর, রেলের অ্যাম্বুলেন্সে মা ও নবজাতককে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন।
ভারতীয় সেনার আধিকারিকরা সংবাদসংস্থা এএনআই-কে জানিয়েছেন, "আজ, ঝাঁসির সেনা হাসপাতালের চিকিৎসক মেজর রোহিত সফলভাবে ঝাঁসি রেল স্টেশনেই এক সদ্যোজাতের প্রসব করিয়েছেন। স্টেশনেই তিনি উপস্থিত ছিলেন। প্ল্যাটফর্মে এক মহিলার প্রসব বেদনা উঠতেই তিনি তড়িঘড়ি এগিয়ে আসেন। কোনো দেরি না-করে এবং খুব সামান্য কিছু জিনিসপত্র দিয়ে আর্মি চিকিৎসক নিরাপদে ডেলিভারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করিয়েছেন। চ্যালেঞ্জিং পরিবেশেও গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা পরিষেবা দিয়েছেন তিনি। সময়মতো পদক্ষেপ করায় মা ও সদ্যোজাত—দু'জনেই ভালো আছে বলে খবর।"
সেনা চিকিৎসকের এই সময়োপযোগী এবং সাহসী পদক্ষেপের জন্য উত্তর-মধ্য রেলওয়ে তার ভূয়সী প্রশংসা করেছে। এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল যে, সঠিক সময়ে সঠিক মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে এলে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও জীবন বাঁচানো সম্ভব।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊