Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

তিস্তার রুদ্ররূপ- কাঁপছে পাহাড়, বন্যা-ধসের আশঙ্কায় উত্তরবঙ্গ

তিস্তার রুদ্ররূপ- কাঁপছে পাহাড়, বন্যা-ধসের আশঙ্কায় উত্তরবঙ্গ

Teesta - Mountains are shaking, North Bengal in fear of floods and landslides



২৯ জুলাই, দার্জিলিং-কালিম্পং: একটানা প্রবল বর্ষণে একদিকে তিস্তার রুদ্ররূপ আর অন্যদিকে পাহাড়ের বুকে ধসের বাড়তে থাকা আশঙ্কা, এই দুইয়ের দোলাচলে রীতিমতো কাঁপছে পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। যখন দক্ষিণবঙ্গ বন্যার জলে ভাসছে, তখন উত্তরবঙ্গের পাহাড় এবং সংলগ্ন সমতল ভূমি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের নতুন আশঙ্কায় ভুগছে।

তিস্তা নদী যেন তার বাঁধভাঙা রূপ নিয়ে পাহাড়ি গ্রামগুলোর দিকে ধেয়ে আসছে। নদীর জলস্তর ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। রবিঝোরা এবং ২৯ মাইল অঞ্চলে জাতীয় সড়ক ১০-এর ওপর দিয়ে তিস্তার জল বইছে, যার ফলে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। কালিম্পং ও দার্জিলিং সংযোগকারী প্রধান সড়কটিও তিস্তার করাল গ্রাসে সম্পূর্ণ জলের তলায় চলে গেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসন গতকাল রাত থেকেই এই রুটে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে এবং বিকল্প পথের সন্ধান দিয়েছে।

তবে শুধু জলস্ফীতিই নয়, আরও বড় বিপদ দানা বাঁধছে পাহাড়ের বুকে। দিনের পর দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের মাটি আলগা হয়ে আসছে। ভূতত্ত্ববিদরা সতর্ক করে বলেছেন যে "যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় ধস নামতে পারে।" এই ভয়াবহ আশঙ্কা মাথায় রেখেই বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর ইতোমধ্যেই ধসপ্রবণ এলাকার গ্রামবাসীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসও আশাব্যঞ্জক নয়। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার ও বুধবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, মালদা, দুই দিনাজপুর এবং আলিপুরদুয়ারের কিছু অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর সঙ্গে বজ্রপাত এবং ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

প্রশাসন এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। নদী তীরবর্তী এবং ধসপ্রবণ এলাকায় বসবাসকারী সকলকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। একই সাথে, পাহাড়মুখী সব ধরনের পর্যটন আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন জেলায় উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যাতে দ্রুত এবং কার্যকরভাবে পদক্ষেপ নেওয়া যায়।

এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের অগ্নিপরীক্ষা আর কতদিন চলবে, তা নিশ্চিতভাবে বলা মুশকিল। তবে সতর্কতা এবং প্রস্তুতিই এখন রাজ্যের একমাত্র ভরসা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code