Latest News

6/recent/ticker-posts

Ad Code

air india boeing 787 crash : আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার কারন সামনে এলো

আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা: প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার ইঙ্গিত

air india boeing 787 crash air india plane crash report aaib air india crash report air india crash air india aaib preliminary report air india plane


নয়াদিল্লি, ১১ জুলাই ২০২৫: আহমেদাবাদের মেঘানীনগরে ঘটে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮ বিমান দুর্ঘটনার প্রায় এক মাস পর, এয়ারক্রাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB) তাদের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ১২ জুন ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব AAIB-কে দেওয়া হয়েছিল, এবং এখন তাদের প্রাথমিক রিপোর্টে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের প্রধান বিষয়গুলি:

AAIB-এর প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, এয়ার ইন্ডিয়া বিমান সংখ্যা বি-৭৮৭-৮-এর উভয় ইঞ্জিনের ফুয়েল কাটঅফ সুইচ "RUN" থেকে "CUTOFF" হয়ে গিয়েছিল, যার ফলে বিমানের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। তবে, ব্যুরো স্পষ্ট করেছে যে এটি একটি প্রাথমিক রিপোর্ট এবং দুর্ঘটনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য বিস্তারিত তদন্ত এখনও চলছে। ইঞ্জিন বন্ধ হওয়ার অন্যান্য সম্ভাব্য কারণগুলি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

পাইলটদের কথোপকথনের বিশ্লেষণ:

তদন্তের সময়, AAIB ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (CVR)-এ পাইলটদের মধ্যে হওয়া কথোপকথনও বিশ্লেষণ করেছে। CVR থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, উভয় পাইলটের মধ্যেকার কথোপকথন থেকে এটি স্পষ্ট হয়েছে যে জ্বালানি কাটঅফ ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়নি।

স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমের প্রতিক্রিয়া এবং অভিজ্ঞতা:

রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে, বিমানের স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমগুলি জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সহায়তা করার চেষ্টা করেছিল। RAM এয়ার টারবাইন এবং APU (Auxiliary Power Unit) এর মতো সিস্টেমগুলি সক্রিয় হওয়া সত্ত্বেও, বিমানটিকে দুর্ঘটনা থেকে বাঁচানো যায়নি। তদন্ত রিপোর্টে পাইলটদের উড়ানের অভিজ্ঞতারও উল্লেখ করা হয়েছে: ক্যাপ্টেনের ১৫,০০০ ঘণ্টার বেশি অভিজ্ঞতা ছিল, যখন সহ-পাইলটের ৩,৪০০ ঘণ্টার উড়ান অভিজ্ঞতা ছিল।

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ:

থ্রাস্ট লিভার: থ্রাস্ট লিভার নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পাওয়া গেছে, কিন্তু ব্ল্যাক বক্স থেকে জানা যায় যে টেকঅফ থ্রাস্ট তখনও সক্রিয় ছিল, যা সংযোগ বিচ্ছিন্ন/ব্যর্থতার ইঙ্গিত দেয়।


জ্বালানির গুণমান: জ্বালানি পরীক্ষায় এটি পরিষ্কার পাওয়া গেছে এবং জ্বালানি ভরার উৎস থেকে কোনো দূষণ ছিল না।


বিমানের অবস্থা: ফ্ল্যাপ সেটিং এবং গিয়ার টেকঅফের জন্য স্বাভাবিক ছিল। বিমানটি ওজন এবং ভারসাম্যের সীমার মধ্যে ছিল এবং এতে কোনো বিপজ্জনক পণ্য ছিল না।


বাহ্যিক কারণ: কোনো পাখির কার্যকলাপ বা আবহাওয়া সংক্রান্ত সমস্যা ছিল না - আকাশ পরিষ্কার ছিল, দৃশ্যমানতা ভালো ছিল এবং হালকা বাতাস বইছিল।


পাইলটদের অবস্থা: AAIB-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে যে পাইলটদের পূর্বের কোনো খারাপ রেকর্ড ছিল না, উভয়ই চিকিৎসাগতভাবে সুস্থ ছিলেন এবং তাদের এই ধরণের বিমানের পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা ছিল।


নাশকতার কোনো প্রমাণ নেই: তাৎক্ষণিক নাশকতার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে জ্বালানি সুইচে সম্ভাব্য ত্রুটি সম্পর্কে FAA (Federal Aviation Administration)-এর একটি পরিচিত পরামর্শ বিদ্যমান ছিল, যা এয়ার ইন্ডিয়া দ্বারা পরীক্ষা করা হয়নি।

তদন্তের বর্তমান অবস্থা:

AAIB বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রকের কাছে জমা দেওয়া তাদের রিপোর্টে বলেছে যে ব্যুরোর কর্মকর্তারা প্রাথমিক তদন্ত সম্পন্ন করেছেন। তবে, বিস্তারিত তদন্ত, বিশ্লেষণ এবং প্রমাণ সংগ্রহ এখনও চলছে। এই কারণেই বর্তমানে কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি।

দুর্ঘটনার প্রভাব:

উল্লেখ্য যে, এয়ার ইন্ডিয়ার অত্যাধুনিক বিমান - বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৮ গত ১২ জুন আহমেদাবাদের মেঘানীনগরে উড়ানের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই একটি চিকিৎসকদের হোস্টেলের উপর ভেঙে পড়ে। বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ১২ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয় নাগরিক, ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, একজন কানাডিয়ান নাগরিক এবং ৭ জন পর্তুগিজ নাগরিক অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। দুর্ঘটনার সময় মেঘানীনগরে উপস্থিত অনেক লোকও হতাহত হয়েছিলেন এবং আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Ad Code