ছোটোবেলায় মা-কে হারিয়েছেন, মামা বাড়ি থেকেই পড়াশুনা, WBCS-এ নজরকাড়া সাফল্য সোহেল আল মামুন



মাত্র ছয় মাস বয়সেই মারা গিয়েছেন মা। হারাতে হয়েছে বাবাকেও। মামার বাড়িতে থেকে পড়াশুনা। জীবন সংগ্রাম করে বহু কষ্টে পড়াশুনা করেই WBCS এর A গ্রুপে সফল হয়ে মুর্শিদাবাদের নাম উজ্জ্বল করলেন সোহেল আল মামুন। খুব দ্রুত ফুড এন্ড সাপ্লাই ডিপার্টমেন্টের মহকুমা আধিকারিক হতে চলেছেন মুর্শিদাবাদের সুতি থানার তেনাউড়ি জগতাই এলাকার কৃতি সন্তান সোহেল আল মামুন। বর্তমানে নতুন করে সুতির মধুপুরে বসবাস শুরু করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার WBCS এর রেজাল্ট প্রকাশিত হতেই চমক দিয়েছেন সোহেল। রাজ্যে ১৩৫ তম স্থান অধিকার করেছেন সোহেল আল মামুন। 



পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া এলাকা মুর্শিদাবাদের সুতি থানার অন্তর্গত তেনাউড়ি গ্রামের মৃত বরজাহান শেখ এবং মা মৃত সানাওয়ারি বিবির তিন সন্তানের ছোট সন্তান সোহেল আল মামুন। সোহেলের যখন ছ'মাস বয়স, তখনই মা মারা যান৷ এক রত্তি মামুন কে বুকে আগলে রাখেন দিদা রূপবান বেওয়া। তাঁর কাছে পালিত হন সোহেল আল মামুন। ছ'বছরের মামুনের ঠাঁই হয় পাশের গ্রামে মামার বাড়িতে। বাবার শ্বাসকষ্টে ভুগতেন। বছর চারেক আগে বাবার ও আকস্মিক মৃত্যু হয়। পরিবারে দারিদ্র্য নেমে আসে। অদম্য জেদ আর অধ্যবসার কাছে হার মেনেছে দারিদ্র্য। বছর ৩০এর সোহেল আল মামুন এবছর ডব্লুবিসিএস পরীক্ষায় রাজ্যের মধ্যে ১৩৫তম স্থান অধিকার করেছেন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই মহকুমা খাদ্য নিয়ামকের পদে যোগ দেবেন তিনি।পরিবারে অভাব থাকলেও মামুনকে কখনও পড়াশোনা ছাড়তে বলেননি বাবা বরজাহান সাহেব। বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ভর্তি হন শ্রীরামপুর টেক্সটটাইল কলেজে। সেখান থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং এ গ্রাজুয়েট হন। এরপর থেকে মামুন ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া লড়াই শুরু হয়। অসুস্থ বাবার চিকিৎসার খরচ, পরিবারে কিছুটা সাহায্য করার এবং নিজের খরচ জোগাতে কেন্দ্রীয় স্কুলে ভোকেশনাল ট্রেনার হিসেবে পার্ট টাইম কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি রাত জেগে ডব্লুবিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি চলতে থাকে।


গত ২০২২ এ বিসিএস পরীক্ষায় বসেন তিনি। আর তাতেই বাজিমাত। মামুনের সাফল্যে খুশির হাওয়া গোটা এলাকাতেই। ভাগ্নের সাফল্যে খুশি মামারাও। তার এই সাফল্যে বাবা, মামাদের অবদানের পাশাপাশি আব্দুল হামিদের তত্ত্বাবধানে চলা রামপুরহাটের AH গাইডের WBCS কোচিং এর অবদান তুলে ধরেন সোহেল আল মামুন।