অপেক্ষার দিন শেষ রূপলি শস্যের সন্ধানে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিতে চলছে মৎস্যজীবীরা
ডায়মন্ড হারবার: অপেক্ষার পালা এবার শেষ এবার বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে ইলিশের জোগান দিতে গভীর সমুদ্রের পাড়ি জমাচ্ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কয়েক হাজার মৎস্যজীবী। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্য বন্দর গুলিতে সাজো সাজো রব। কাকদ্বীপ, নামখানা ,পাথরপ্রতিমা, ডায়মন্ড হারবার, ফলতা ,রায়দিঘি পাথর প্রতিমা, ক্যানিং, গোসাবা সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনা একাধিক বন্দরগুলিতে চলছে শেষ বেলার প্রস্তুতি।নাওয়া-খাওয়া ভুলে মৎস্যজীবীরা ব্যস্ত নিজেদের মাছ ধরার সরঞ্জাম গোছাতে । চলছে জাল তৈরি থেকে ট্রলার সংস্কারের কাজ ৷
মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, ১৫এপ্রিল থেকে ১৪ জুন, এই দু'মাস সময় পর্যন্ত মাছের প্রজননের জন্য গভীর সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে ৷ সরকারি নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর ১৪ জুন থেকে আবার মাঝ সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারবেন মৎস্যজীবীরা । তাই এখন চলছে শেষ বেলার প্রস্তুতি ৷ মৎস্য বন্দর গুলিতে ট্রলার গুলিতে মজুদ করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রিক এবং প্রয়োজনীয় জ্বালানি ও বরফ। শেষ বেলার প্রস্তুতি চলছে জোর গরমে। লাইভ জ্যাকেট থেকে শুরু করে লকবুক সমস্ত কিছু নথি ট্রলারে মজুদ রাখার নির্দেশ দিয়েছে মৎস্য দপ্তর। সেই নির্দেশও অক্ষরে অক্ষরে মানা হচ্ছে। অন্যদিকে গভীর সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের রক্ষা করতে সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন ।
প্রশাসনের তরফ থেকে বিপদ সংকেত যন্ত্র ও প্রতিটি ট্রলারে লাইফ জ্যাকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে । গভীর সমুদ্রে যদি মৎস্যজীবীরা কোনও বিপদে পড়ে তাহলে ইসরোর নয়া প্রযুক্তির মাধ্যমে মৎস্যজীবীদের জীবন বাঁচবে এবং কোথায় বেশি মাছ রয়েছে সেই নয়া প্রযুক্তির মাধ্যমেই দেখতে পাবে মৎস্যজীবীরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মোট ট্রলারের সংখ্যা ৮৫০০। মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকে মৎস্যজীবীদের বারবার অনুরোধ করা হচ্ছে যে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার সময় ভারতীয় নৌবাহিনী ও উপকূল রক্ষী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে এবং সুসম্পর্ক বজায় রাখতে এর ফলে যে কোন রকমের বিপদের সম্মুখীন যদি মৎস্যজীবীরা হয় গভীর সমুদ্রে তাহলে দ্রুত সাহায্য পৌঁছে যাবে ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনী ও নৌ বাহিনীর পক্ষ থেকে।
দক্ষিণ 24 পরগনার সহ-মৎস্য আধিকারিক (সামুদ্রিক) সুরজিৎ কুমার বাগ জানান,ইতিমধ্যেই মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যাওয়ার জন্য অনুমতি দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে । সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনেই মৎস্যজীবীরা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাবেন । তবে ইলিশ ধরার জালের ফাঁস ৯০ মিলিমিটার হতে হবে । ২৩ সেন্টিমিটারের ছোট মাছ ধরা যাবে না । গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া মৎস্যজীবীদের পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট, লগ বুক জিপিআরএস ডিভাইস নিয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক ।
তিনি আরো বলেন গত বছর তেমনভাবে মাছের দেখা পাইনি মৎস্যজীবীরা এর ফলে লাভ ও মৎস্যজীবীদের কম হয়েছে আশা করছি এ বছর সেই ক্ষতির পূরণ করে লাভের মুখ দেখবে মৎস্যজীবীরা। মৎস্যজীবীদের প্রতি আমাদের শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ।
এই বিষয় শুকুমার দাস নামে এক মৎস্যজীবী তিনি বলেন, আবহাওয়া ইলিশ মাছের প্রতিকূল রয়েছে এবার যদি মা গঙ্গা মুখ তুলে তাকায় তাহলে গত বছরের তুলনায় এবছর ভালো মানতে হবে। মৎস্য দপ্তরের পক্ষ থেকে সমস্ত রকম সরকারি অনুমতি নেয়া হয়ে গেছে। আমরা আজি রওনা দেব। আশা করছি এ বছর ভালো ইলিশ মারতে হবে।
এ বিষয় ইলিশ ব্যবসায়ী বিকাশ চন্দ্র দাস তিনি জানান, এবছর ইলিশ মাছ ভালো হবে গত বছরের তুলনায়। বাঙালির পাতে এ বছর ইলিশ মাছ সাধ্যের মধ্যে পাওয়া যাবে। এখনো ইলিশের মরশুম শুরু হয়নি আমরাও প্রস্তুত আছি মৎস্যজীবীরা প্রস্তুত তারা রওনা দেবে গভীর সমুদ্রে নিয়ে আসবে ইলিশ। সব মিলিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা উপকূল তীরবর্তী এলাকা মৎস্যজীবী পরিবার এবং মৎস্যজীবীদের চূড়ান্ত ব্যস্ততা।
0 মন্তব্যসমূহ
Thank you so much for your kindness and support. Your generosity means the world to me. 😊